পাঁচ ওয়াক্তে ৫ সুরা পড়ার বিশেষ ফজিলত

পাঁচ ওয়াক্তে ৫ সুরা পড়ার বিশেষ ফজিলত

প্রতিকী ছবি

প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর প্রত্যেক ওয়াক্তে একটি করে মোট ৫টি সুরা পাঠের বিশেষ সওয়াব ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে হাদিসে। কোন নামাজের পর কোন সুরা পাঠ করতে হবে, তা এখানে তুলে ধরা হলো- 

ফজরের নামাজের পর সুরা ইয়াসিন

আতা বিন আবি রাবাহ (রা.) বর্ণনা করেন, আমি শুনেছি- রাসুল (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দিনের বেলায় সুরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করবে, তার সব হাজত (প্রয়োজন) পূর্ণ করা হবে।’ (ফাজায়েলে আমাল: ০১/৫২) নামাজের পর কোন সুরা

হাদিসবেত্তারা এই বর্ণনাটিকে দুর্বল বলেছেন। যদিও এমন হাদিসের ওপর আমল করতে অসুবিধা নেই বলেছেন মুহাদ্দিসগণ।

জোহরের নামাজের পর সুরা ফাতহ

বহু মুসলিম মনীষী জোহরের পর সুরা ফাতহ তেলাওয়াত করতেন। সুরা ফাতহের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (স.) ওমর (রা.)-কে বলেন, ‘আজ রাতে আমার ওপর এমন একটি সুরা নাজিল হয়েছে, যা আমার কাছে সূর্যালোকিত সব স্থান থেকে উত্তম। এরপর তিনি সুরা ফাতহের প্রথম আয়াত তেলাওয়াত করেন।’ (সহিহ বুখারি: ৪১৭৭)

আছরের নামাজের পর নাবা

আছরের নামাজের পর যদিও নির্দিষ্ট কোনো সুরা তেলাওয়াতের কথা হাদিসে নেই, তবে সুরা নাবার ফজিলত সম্পর্কে একটি দুর্বল হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি সুরা নাবা তেলাওয়াত করবে আল্লাহ তাআলা তাকে কেয়ামতের দিন ঠাণ্ডা পানীয় দ্বারা তৃপ্ত করবেন।’ (তাফসিরে কাশশাফ: ৬/৩০৩)

মাগরিবের নামাজের পর ওয়াকিয়া

মাগরিবের নামাজের পর বা রাতে সুরা ওয়াকিয়া তেলাওয়াতের বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে। উসমান (রা.) বলেন, আমি রাসুল (স.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সুরা ওয়াকেয়া পাঠ করবে, সে কখনো উপবাস থাকবে না।’ (তাফসিরে মাআরেফুল কোরআন: ৮/১০৬; ইবনে কাসির: ৪/২৮১)

আলেমরা বলেন, রাতে সুরা ওয়াকেয়া পাঠের সুফল কোরআন নাজিলের পর থেকে সবসময় পরীক্ষিত। ‘আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) তাঁর মেয়েদেরকে প্রতি রাতে এ সুরা তেলাওয়াত করার আদেশ করতেন।’ (বায়হাকি, শুআবুল ঈমান: ২৪৯৮)

এশার নামাজের পর মুলক

এশার নামাজের পর সুরা মুলক তেলাওয়াত সম্পর্কে হাদিস শরিফে এসেছে, হজরত জাবের (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (স.) সুরা সাজদাহ ও সুরা মুলক তেলাওয়াত করা ছাড়া ঘুমাতেন না।’ (সুনানে তিরমিজি: ২৮৯২)

সুরা মুলক সম্পর্কে রাসুল (স.) আরও বলেন, ‘কোরআনে কারিমে এমন একটি সুরা আছে, যার মধ্যে ৩০ আয়াত আছে। আয়াতগুলো পাঠকারীর জন্য সুপারিশ করবে এবং তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর সেটা হলো- ‘তাবারাকাল্লাজি বিয়াদিহিল মুলকু’ (সুরা মুলক)।’ (সুনানে তিরমিজি: ২৮৯১)

উল্লেখ্য,পবিত্র কোরআনের প্রতি অক্ষর পাঠে রয়েছে ১০ নেকি। ‘যারা সহিহ-শুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত করে, তারা নেককার সম্মানিত ফেরেশতাদের সমতুল্য মর্যাদা পাবে; আর যারা কষ্ট সত্ত্বেও কোরআন শুদ্ধভাবে পড়ার চেষ্টা চালিয়ে যায়, তাদের জন্য রয়েছে দ্বিগুণ সওয়াব।’ (আবু দাউদ: ১৪৫৪) 

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াতের তাওফিক দান করুন। উল্লেখিত সুরাগুলো যথাসময়ে পাঠ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।