ভারতের দক্ষ কর্মীদের খুঁজছে জার্মানি

ভারতের দক্ষ কর্মীদের খুঁজছে জার্মানি

ফাইল ছবি

শিল্পখাতে দক্ষ কর্মীর ঘাটতি পূরণে অভিবাসীদের নিজেদের শ্রমবাজারে যুক্ত করতে চায় ইউরোপের শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ জার্মানি। তারই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন খাতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারতের দক্ষ কর্মীদের কাছে টানতে চাইছেন জার্মানির শ্রমমন্ত্রী হুবার্টুস হাইল।

শুধু তাই নয়, দীর্ঘ মেয়াদে ভারত থেকে আসা অভিবাসী কর্মীদের জার্মান সমাজে একীভূত করার পরিকল্পনার কথাও অকপটে জানালেন তিনি।

জার্মানির পাবলিক ব্রডকাস্টার ডয়চে ভেলের দিল্লি ব্যুরোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা একটি উইন-উইন-উইন অবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে চাই’

হাইল বলেন, আমরা এমন একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে চাই, যে দেশের কর্মীদের আমরা নিয়ে আসব, সেই দেশ যেন লাভবান হয়। এজন্য আমরা (ভারত) সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছি। একইসঙ্গে এর মধ্য দিয়ে জার্মানিও যেন উপকৃত হয়, সেদিকটাও আমরা বিবেচনায় রেখেছি।

শ্রমমন্ত্রী আরও বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, জার্মানিতে কর্মী হিসেবে যিনি আসবেন, তিনিও যেন লাভবান হতে পারেন। আমরা তাদের সঙ্গে খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করতে চাই।

উদাহরণ হিসেবে জার্মানিতে নার্স সংকটের কথাটি তুলে ধরেন হাইল। তিনি বলেন, জার্মানিতে আমাদের নার্সের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু যে দেশ নার্স সংকটে ভুগছে, সেই দেশ থেকে আমরা নার্সদের নিয়ে যেতে পারি না।

‘কিন্তু ভারতের কিছু অঞ্চল আছে যেখানে অনেক নার্স চাকরি পাচ্ছেন না। সেসব অঞ্চল থেকে যদি আমরা নার্সদের চাকরি দিয়ে নিয়ে আসি, তাহলে সেটা ভারতের জন্যও লাভজনক হবে।’

অভিবাসন ইস্যুতে অতীতের ভুল থেকে জার্মানি শিক্ষা নিয়েছে বলেও জানান হাইল।

১৯৬০ এর দশকে নিজেদের শ্রম ঘাটতি দূর করতে তুরস্ক থেকে কর্মী আনতে অভিবাসনকে উৎসাহিত করেছিল পশ্চিম জার্মানি। কারণ, ওই সময় জার্মানির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে এগিয়ে রাখতে জার্মান শ্রমবাজারে পর্যাপ্ত শ্রমিকের অভাব ছিল। কিন্তু তুরস্ক থেকে আসা সেই কর্মীরা ‘গাস্টারবাইটার’ বা ‘অতিথি কর্মী’ হিসেবে জার্মান সমাজে পরিচিতি পায়। তাদের অনেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে জার্মানিতে বসতি গড়ে।

হাইল বলেন, ‘আমরা ওই সময় ভুল করেছি। আমরা কর্মী চেয়েছিলাম, কিন্তু পেয়েছি মানুষ।’

জার্মানির বর্তমান সরকার দক্ষ কর্মীদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা চাই তারা আমাদের অর্থনীতিতে অবদান রাখুক এবং আমাদের সমাজে একীভূত হোক।’

বর্তমান বিশ্বে অভিবাসন প্রক্রিয়া ন্যায্যতার ভিত্তিতে হওয়ার উচিত বলেও অভিমত জার্মান শ্রমমন্ত্রীর।

আমলাতান্ত্রিক জটিলতা জার্মানির একটি বড় সংকট বলে মনে করেন অনেকেই। সম্প্রতি অভিবাসন আইন সংস্কারে দেশটির সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে সেখানে এই বিষয়টি সহজ করার কথাও ভাবা হচ্ছে। এমনকি, একজন অভিবাসীর নিজ দেশে অর্জিত যোগ্যতাকে জার্মানিতেও স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

শ্রমমন্ত্রী হাইল বলেন, ‘আমরা বুঝতে পেরেছি, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আমাদের কমাতে হবে।’