কলম্বো টেস্টে প্রথম ইনিংসেই পাকিস্তানের ৩৯৭ রানের লিড

কলম্বো টেস্টে প্রথম ইনিংসেই পাকিস্তানের ৩৯৭ রানের লিড

সংগৃহীত

কলম্বো টেস্টে আরও একটি দিনে আধিপত্য দেখাল পাকিস্তান। ক্যারিয়ারের প্রথম দ্বিশতক উপহার দিলেন আবদুল্লাহ শফিক। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে শতক করলেন আঘা সালমান। আরেকটি পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংসে সাউদ শাকিল গড়লেন ইতিহাস। প্রথম ইনিংসেই চারশর কাছাকাছি পৌঁছে গেল পাকিস্তানের লিড।

বৃষ্টির কারণে দ্বিতীয় দিনে মাত্র ১০ ওভারের পর বুধবার (২৬ জুলাই) তৃতীয় দিনে খেলা হয়েছে ৯৩.২৩ ওভার। এ দিন স্রেফ ৩ উইকেট হারিয়ে ৩৮৫ রান যোগ করেছে পাকিস্তান। প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের রান এখন ৫ উইকেটে ৫৬৩। প্রথম দিনে স্বাগতিকদের ১৬৬ রানে গুটিয়ে দেওয়া সফরকারীরা এগিয়ে আছে ৩৯৭ রানে।

উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য যথেষ্ট ভালো। তার চেয়েও বড় ব্যাপার, শ্রীলঙ্কার বোলিং একেবারেই ধারহীন। লাইন-লেংথ ধরে রেখে বোলিং করতে পারেননি কেউই। সেটিই কাজে লাগান শফিক-সালমানরা। ৩২৬ বলে ২০১ রানের ইনিংস খেলেন ওপেনার শফিক। ১৯ চার ও ৪ ছক্কায় গড়া তার ইনিংসটি।

এই মাঠে প্রথম সফরকারী ওপেনার হিসেবে টেস্টে দ্বিশতক করলেন তিনি। ২০১২ সালে পাকিস্তানেরই মোহাম্মদ হাফিজের ১৯৬ ছিল আগের সেরা। সফরকারী ব্যাটসম্যানদের মধ্যে শফিকের আগে এই মাঠে দ্বিশতকের স্বাদ পেয়েছেন কেবল ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্রায়ান লারা ও ভারতের শচিন টেন্ডুলকার। ২০০১ সালে ২২১ রান করেছিলেন লারা, ২০১০ সালে ২০৩ টেন্ডুলকার। সাত নম্বরে নেমে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শতকে ১৩২ রানে অপরাজিত আছেন সালমান। তার ১৪৮ বলের ইনিংস গড়া ১৫ চার ও এক ছক্কায়।

প্রথম টেস্টের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান শাকিলের ব্যাট থেকে আসে এবার ৫৭ রান। টেস্ট ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ক্যারিয়ারের প্রথম সাত টেস্টই পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস খেলার কীর্তি গড়েন ২৭ বছর বয়সী বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে ২ উইকেটে ১৭৮ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করে পাকিস্তান। আগের দিন ২৮ রানে অপরাজিত অধিনায়ক বাবর আজম আর বেশিদূর যেতে পারেননি। তাকে ৩৯ রানে এলবিডব্লিউ করে থামান বাঁহাতি স্পিনার প্রবাথ জয়াসুরিয়া।

আগের দিন সেঞ্চুরি থেকে ১৩ রান দূরে থাকা শফিক মাইলফলক স্পর্শ করেন ১৪৯ বলে। তৃতীয় উইকেটে তার সঙ্গে ১০৯ রানের জুটি গড়েন শাকিল। আসিথা ফার্নান্দোকে টানা দুই বাউন্ডারির পথে ফিফটি ছোঁয়ার পরপরই শাকিল এলবিডব্লিউ হয়ে যান। মুখোমুখি প্রথম বলে আসিথার বাউন্সারে মাথার পেছনের দিকে আঘাত পাওয়া সরফরাজ আহমেদ পরে আরও ২১ বল খেলে চার মারেন তিনটি। এরপর আর চালিয়ে যেতে পারেননি এই কিপার-ব্যাটসম্যান। মাঠ ছেড়ে যান ফিজিওর সঙ্গে। পরে তার কনকাশন বদলি হিসেবে নেওয়া হয় মোহাম্মদ রিজওয়ানকে।

সালমান উইকেটে যাওয়ার পর রানের গতি বাড়ে পাকিস্তানের। ফিফটি করেন তিনি ৬২ বলে। ১৯৯ থেকে আসিথার বল ফাইন লেগে পাঠিয়ে সিঙ্গেল নিয়ে শফিক দ্বিশতকে পা রাখেন ৩২২ বলে। এরপর আর টেকেননি তিনি। জয়াসুরিয়াকে বেরিয়ে এসে উড়িয়ে খেলার চেষ্টায় ধরা পড়েন মিড অফে। ৯৫ থেকে তিন বলের মধ্যে দুটি চার মেরে ১২৩ বলে শতক স্পর্শ করেন সালমান। তার সঙ্গে দিন শেষে ৩৭ রানে অপরাজিত আছেন রিজওয়ান। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটির রান ১১৩ বলে ৯৫।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ১৬৬

পাকিস্তান ১ম ইনিংস: (আগের দিন ১৭৮/২) ১৩২ ওভারে ৫৬৩/৫ (শফিক ২০১, বাবর ৩৯, শাকিল ৫৭, সরফরাজ ১৪ রিটায়ার্ড হার্ট, সালমান ১৩২*, রিজওয়ান ৩৭*; আসিথা ২৪-০-১৩৩-৩, মাদুশাঙ্কা ১৭-৩-৭৭-০, রমেশ ৩৬-২-১৩৯-০, জয়াসুরিয়া ৫২-১১-১৮১-২, ধনাঞ্জয়া ৩-১-১৩-০)