কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১৫

কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১৫

প্রতীকী ছবি

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তিন সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের আয়োজিত শান্তি সমাবেশ থেকে ফিরে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুরুতর দুইজনসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। 

শুক্রবার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর পুরান ঢাকার কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এছাড়াও সংঘর্ষে ছাত্র সংসদের ভেতরে থাকা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর করা হয়। 

কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানান, শান্তি সমাবেশে যাওয়ার পথে কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীদের মাঝে নেতৃত্ব দেওয়াকে কেন্দ্র করে বাগবিতন্ডা হয়। বিষয়টি তখনি সমাধান করে দেন দলের জৈষ্ঠ নেতারা। এরপর সমাবেশ শেষে ক্যাম্পাসে ফিরে শাখা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বেলায়েত হোসেন সাগর ও সাধারণ সম্পাদক ফারুক হাওলাদার নেতাকর্মীদের বিদায় দিয়ে চলে যায়। 

নেতাকর্মীরা জানান, ভারপ্রাপ্ত সভাপতির ১০-১২ জন অনুসারী মিছিলের হাতাহাতির রেষ ধরে সাধারণ সম্পাদকের তিন-চারজনের সাথে তর্কে জড়ায়। একপর্যায়ে সভাপতির অনুসারী সানভির, আব্দুর রহমানসহ সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী ওই তিন-চারজনকে চড়, থাপ্পড় মারতে শুরু করে। ঘটনাটি জানাজানি হয়ে গেলে সাধারণ সম্পাদকের অন্যান্য অনুসারীরা ক্যাম্পাসে আসে। তখন দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী রবিন ও ইমন ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মেডিকেল এ চিকিৎসা নেন।
 
নেতাকর্মীরা আরও জানান, সংঘর্ষের এক পর্যায়ে ছাত্র সংসদে থাকা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুর করা হয়। ছবি ভাঙচুরের ব্যাপারে একপক্ষ অন্য পক্ষের উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করে। সংঘর্ষে দুই গ্রুপের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। পরবর্তীতে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সংঘর্ষের বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক গণযোগাযোগ বিষয়ক উপ সম্পাদক ও ভারপ্রাপ্ত সভাপতির অনুসারী সানভির মাহমুদ বলেন, শান্তি সমাবেশে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। ক্যাম্পাসে এসে দুই পক্ষের মাঝে আবার বাগবিতন্ডা হয়। পরবর্তীতে শাহেদ, আনোয়ার, মাছুম, আশিক, আশরাফ এদের নেতৃত্বে ৩০/৩৫ জন আমাদের উপর হামলা করে। হামলার এক পর্যায়ে তারা সংসদে থাকা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর করে।

কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী রাফি উজ সাকলাইন বলেন, আমি বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেছি। কিন্তু সাগরের অনুসারীরা উল্টো নিজেরাই নিজেদের কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে। সাগর নিজেই বহিরাগত। তার নেতৃত্বে কেরানীগঞ্জ থেকে বহিরাগতরা এসে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।

এ বিষয়ে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হাওলাদার বলেন, ঝামেলার সময় আমি ক্যাম্পাসে ছিলাম না। বিষয়টি একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। সমাবেশের সময় যে ঘটনা ঘটেছে তা সেখানেই মীমাংসা করা হয়েছে। আবার ক্যাম্পাসে এসে যে বা যারাই সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত ছিল আমরা সিসি টিভির ফুটেজ দেখে তাদের নাম কেন্দ্রে পাঠাব। ছাত্রলীগের অভিভাবক সাদ্দাম ভাই এবং ইনান ভাই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবেন।

কবি নজরুল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বেলায়েত হোসেন সাগর বলেন, ঘটনার সময় আমি ক্যাম্পাসে ছিলাম না। পরবর্তীতে এসে জানতে পেরেছি। বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে। তবে যারা বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করেছে তারা কখনো ছাত্রলীগের কর্মী হতে পারে না। তারা পিঠ বাঁচানোর জন্য ছাত্রলীগ করছে এবং সুযোগ বুঝে সংগঠনের ভেতরে ঝামেলা সৃষ্টি করছে। যে বা যারাই বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুরের ঘটনার সঙ্গে জড়িত আছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।