সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়েও সম্পাদক পরিষদের শঙ্কা

সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়েও সম্পাদক পরিষদের শঙ্কা

ফাইল ছবি

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের জায়গায় সাইবার নিরাপত্তা আইন করার ব্যাপারে সরকার যে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এতে মৌলিক কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখছে না সম্পাদক পরিষদ। আইনটি প্রণয়নের আগে গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের মতামত না নেওয়ায় জনমনে শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে বলে মনে করছে দেশের জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকদের সংগঠনটি।

বুধবার (৯ আগস্ট) সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সই করা বিবৃতিতে এই শঙ্কার কথা জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের ব্যাপারে সরকার যে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে এই আইনটি সম্পর্কে সম্পাদক পরিষদসহ সংবাদমাধ্যমের অংশীজনরা এত দিন যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে আসছিলেন, সেটা যথার্থ বলে প্রমাণিত হয়েছে।

সরকার আইনটি প্রণয়নের আগে গণমাধ্যমসহ অংশীজনদের মতামত না নেওয়ায় উদ্বেগ তুলে ধরে সম্পাদক পরিষদ বলেছে, সরকার সাইবার নিরাপত্তা আইন নামে যে আইনটি করার ঘোষণা দিয়েছে, তা শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়ায়, সেটা দেখার অপেক্ষায় আছেন তারা।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সঙ্গে নতুন প্রস্তাবিত আইনটি চরিত্রগত কোনো পার্থক্য না থাকলে শুধু নাম পরিবর্তন করাকে ‘অর্থহীন’ অভিহিত করেছে সম্পাদক পরিষদ। তাঁরা বলেন, ‘আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ভাষ্য থেকে সংবাদমাধ্যমে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে সম্পাদক পরিষদ শঙ্কামুক্ত হতে পারছে না।’

বিবৃতিতে বলা হয়, সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে মানহানির মামলায় সাংবাদিকদের শাস্তি কারাদণ্ডের বদলে ২৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধানের কথা বলা হয়েছে। উদ্বেগের বিষয় হলো, দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর অধীনে মানহানির দায়ে যে শাস্তির বিধান আছে, সেটা সংশোধন না করা হলে নতুন বিধান অকার্যকর হতে বাধ্য। দ্বিতীয়ত ২৫ লাখ টাকা জরিমানা শোধ না হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে কারাদণ্ডই ভোগ করতে হবে।

অফিশিয়াল সিক্রেসি আইনে কোনো বদল না আসার ব্যাপারেও উদ্বেগের কথা তুলে ধরেছেন সম্পাদক পরিষদ। তাঁরা বলেছেন, উদ্বেগের বিষয় হলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩২ ধারাটি রেখে দেওয়া হয়েছে। ঔপনিবেশিক আমলে শাসকগোষ্ঠী এ দেশের মানুষকে সন্দেহ করত বলে অফিশিয়াল সিক্রেটস আইন জারি করে।

স্বাধীন বাংলাদেশে এই আইন থাকার যৌক্তিকতা নেই। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অগ্রহণযোগ্য ধারাগুলো প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনেও থেকে যাচ্ছে বলে উদ্বেগ জানানো হয়েছে।

তাঁরা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৪৩ ধারা অনুযায়ী পুলিশ পরোয়ানা ছাড়াই সন্দেহবশত যেকোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পারে। এর মাধ্যমে পুলিশকে কার্যত ‘বিচারিক ক্ষমতা’ দেওয়া হয়েছে। এই ধারাটিও যেহেতু বহাল থাকছে, তাই নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনকে নতুন কিছু হিসেবে বিবেচনা করা যাচ্ছে না।