রাশিয়ার হামলায় পরিবারের মৃত্যুর প্রতিশোধ চান জেলেনস্কি

রাশিয়ার হামলায় পরিবারের মৃত্যুর প্রতিশোধ চান জেলেনস্কি

রাশিয়ার হামলায় পরিবারের মৃত্যুর প্রতিশোধ চান জেলেনস্কি

রোববার রাশিয়ার গোলাগুলিতে এক পরিবারের মৃত্যুর তীব্র নিন্দা করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট৷ কৃষ্ণ সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজের উপর রাশিয়ার হামলারও সমালোচনা করেছে ইউক্রেন৷

রাশিয়ার হামলার জবাব হিসেবে পালটা সামরিক অভিযানে সীমিত হলেও ইউক্রেনের সাফল্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ বিশেষ করে ক্রাইমিয়া উপদ্বীপকে রুশ নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হামলা চলছে৷ রাশিয়া বেশিরভাগ হামলা বানচাল করার দাবি করলেও রুশ সেনাবাহিনী চাপের মুখে পড়েছে, এমন একাধিক লক্ষণ দেখা যাচ্ছে৷ বিশেষ করে ইউক্রেনের উপর হামলার ক্ষেত্রে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে৷

ইউক্রেনের দক্ষিণে খেরসন অঞ্চলে রাশিয়ার গোলার আঘাতে এমনই এক হামলায় চার সদস্যের এক পরিবারের মৃত্যুর প্রতিশোধের অঙ্গীকার করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি৷ তিনি নিজের টেলিগ্রাম চ্যানেলে এক ভিডিও বার্তায় বলেন, রাশিয়ার কোনো অপরাধ ছাড় পাবে না৷ উদাহরণ হিসেবে জেলেনস্কি রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের কিছু সাফল্যের উল্লেখ করেন৷ উল্লেখ্য, রোববার সকালে খেরসনের কাছে এক গ্রামের উপর সেই হামলায় পরিবারের বাবা-মা, তাদের ১২ বছরের ছেলে এবং তিন সপ্তাহের মেয়ে নিহত হয়েছে৷ ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সূত্র অনুযায়ী, সে দিন গোটা এলাকার উপর ১৭ বার হামলা চালানো হয়েছে৷ সে দেশের কৌসুলি রোববার বলেন, ১৭ মাস আগে রাশিয়ার হামলা শুরু হবার পর থেকে কমপক্ষে ৫০০ শিশু নিহত এবং ১,১০০ আহত হয়েছে৷

ইউক্রেনের সঙ্গে জলপথে বহির্বিশ্বের যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটাতেও রাশিয়া মরিয়া হয়ে উঠছে বলে অভিযোগ উঠছে৷ রোববার এক রুশ যুদ্ধজাহাজ কৃষ্ণ সাগরে পণ্যবাহী এক বেসামরিক জাহাজের দিকে লক্ষ্য করে সতর্কতামূলক গোলাগুলি চালিয়েছে৷ গত মাসে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় খাদ্যশস্য রপ্তানি সংক্রান্ত চুক্তি বাতিল করার পর রাশিয়া এই প্রথম ইউক্রেনের জলসীমার বাইরে বাণিজ্যিক জাহাজকে হুমকি দিলো৷ মস্কোর দাবি, ইউক্রেনগামী যে কোনো জাহাজে অস্ত্রশস্ত্র থাকতে পারে৷ রোববার বাণিজ্যিক জাহাজের ক্যাপ্টেন রুশ যুদ্ধজাহাজ তল্লাশির অনুরোধের বার্তায় সাড়া না দেওয়ায় ‘ওয়ার্নিং শট'-এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করা হচ্ছে৷ তারপর হেলিকপ্টারে করে রুশ সৈন্যরা সেই জাহাজে অবতরণ করে৷ তল্লাশি চালানোর পর জাহাজটিকে এগোতে দেওয়া হয়৷

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইলো পদোলইয়াক বলেন, এই ঘটনা আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক আইন লঙ্ঘন করেছে৷ নিজেদের জলসীমার বাইরে তৃতীয় কোনো দেশের বেসামরিক জাহাজের বিরুদ্ধে জলদস্যুর মতো এই আচরণের তীব্র নিন্দা করেন তিনি৷ ইউক্রেন এই ঘটনা খতিয়ে দেখে সেরা জবাব দেবে বলে পদোলইয়াক অঙ্গীকার করেন৷

ইউক্রেনের এক সামরিক মুখপাত্র রাশিয়ার বয়ান সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করে  বলেন, কৃষ্ণ সাগরে সব বেসামরিক জাহাজের জন্য এটা একটা বার্তা৷ তিনি সেখানকার পরিবহণ কাঠামোকে আন্তর্জাতিক গ্যারেন্টির আওতায় আনার দাবি জানান৷ কৃষ্ণ সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে রাশিয়ার সাম্প্রতিক আচরণ অস্থিরতা সৃষ্টি করবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন৷ বিশ্বের অন্যতম প্রধান কৃষিপণ্য উৎপাদনকারী হিসেবে ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে খাদ্যশস্য সরবরাহের ক্ষেত্রে কৃষ্ণ সাগরের বাড়তি গুরুত্ব রয়েছে৷

সূত্র : ডয়চে ভেলে