সুদানে বিপন্ন লাখ লাখ মানুষের জীবন

সুদানে বিপন্ন লাখ লাখ মানুষের জীবন

সুদানে বিপন্ন লাখ লাখ মানুষের জীবন

সুদানে যুদ্ধের চার মাসে নৃশংস সংঘাতের ফলে লাখ লাখ মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির নেতারা।

মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘ ও ২০টি আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থার প্রধান কয়েক মাস ধরে সুদানের জনগণকে আতঙ্কিত করে রাখার অবস্থা বন্ধ করার আহ্বান জানান। সেই সাথে সুদানকে সঠিক পথে ফিরিয়ে এনে এবং যুদ্ধের অবসান ঘটাতে কাজ করার কথা বলেন তারা। খবর ডয়চে ভেলে ও ভয়েস অব আমেরিকার

জাতিসংঘের মানবাধিকার দফতর জানিয়েছে, সুদানের সশস্ত্র বাহিনী এবং প্রতিদ্বন্দ্বী আধাসামরিক বাহিনীর র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স উভয়ই সংঘাতের সময় 'আন্তর্জাতিক মানবিক ও মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন' অন্যান্য মানবাধিকার আইনের গুরুতর লঙ্ঘন করেছে বলে বিশ্বাস করার 'যুক্তিসঙ্গত কারণ' রয়েছে।

তুর্ক বলেন, বিপুল সংখ্যক মানুষকে জোর পূর্বক বাস্তুচ্যুত করা এবং যৌন সহিংসতা যুদ্ধাপরাধের শামিল হতে পারে এবং এসব ও অন্যান্য অপরাধের অপরাধীদের অবশ্যই জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।

তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে সহিংসতা আরও বাড়তে পারে।

মানবাধিকার প্রধানের মুখপাত্র এলিজাবেথ থ্রসেল বলেন, যুদ্ধের তীব্রতার কারণে হতাহতের সঠিক সংখ্যা বের করা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। শত শত বেসামরিক নাগরিকসহ এ পর্যন্ত চার হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।

সুদানের বর্তমান পরিস্থিতির উল্লেখ করে রিপোর্ট বলা হয়েছে, এমন পরিস্থিতি চলছে থাকলে কিছুদিনের মধ্যেই ভয়াবহ খাদ্যসংকট তৈরি হবে। বস্তুত, তীব্র খাদ্যসংকটের পরিস্থিতি থেকে সুদান এক পা দূরে আছে বলে জানিয়েছে সংস্থাগুলো।

সেখানে বলা হয়েছে, খাদ্যসংকট হলে দেশের ৬০ লাখ মানুষ তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। না খেয়ে মৃত্যু হবে তাদের। ইতোমধ্যেই খাবার লুট শুরু হয়ে গেছে। দুইপক্ষের সেনাই বেসামরিক মানুষের জন্য আসা খাবার এবং মানবিক সাহায্য লুট করছে। মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীদের উপরেও আক্রমণ চালানো হচ্ছে।

গত ১৫ জুলাই থেকে সুদানের সেনাপ্রধানের সঙ্গে আধা সামরিক বাহিনীর প্রধানের লড়াই শুরু হয়েছে। ফলে সামরিক বাহিনী কার্যত দুইভাগে ভেঙে গেছে। মধ্যবর্তী সময়ে আটবার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হলেও লড়াই থামেনি। ফলে দেশের প্রশাসন কার্যত ভেঙে পড়েছে।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নারী এবং শিশুরা। নারীদের উপর অত্যাচার ৯০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের ধর্ষণ করা হচ্ছে এবং যৌন হেনস্থা করা হচ্ছে। যুদ্ধের ফলে গৃহহীন হয়ে পড়েছেন অন্তত চল্লিশ লাখ মানুষ। তারা হয় নিজের দেশে অথবা পার্শ্ববর্তী দেশগুলিতে আশ্রয় নিয়েছেন। সব মিলিয়ে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সুদানে।

মানবাধিকার সংগঠন এবং জাতিসংঘের বক্তব্য, বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলির এবার সুদানে হস্তক্ষেপ করা উচিত। আর অপেক্ষা করলে বড্ড বেশি ক্ষতি হয়ে যাবে। লাখ লাখ মানুষের প্রাণ সংকটের মুখে পড়বে। ফলে দ্রুত হস্তক্ষেপ করে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।