বিদেশেও যাচ্ছে উলিপুরের সুস্বাদু ক্ষীরমোহন

বিদেশেও যাচ্ছে উলিপুরের সুস্বাদু ক্ষীরমোহন

সংগৃহিত ছবি।

দেশজুড়ে এমনকি বিদেশেও নজর কেড়েছে কুড়িগ্রামের উলিপুরের মিষ্টি ক্ষীরমোহন। কোনো কেমিক্যাল ছাড়াই শুধুমাত্র গাভীর খাটি দুধ, চিনি আর মসলা দিয়ে তৈরি স্বাস্থ্যসম্মত এবং সুস্বাদু ক্ষীরমোহনে তৃপ্তি খুঁজে পাচ্ছেন ভোজন রসিকরা। চাহিদা বাড়ায় বেড়েছে উৎপাদন ও ব্যবসায়ীর সংখ্যাও।

কুড়িগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে গাভীর ১৫ থেকে ২০ মণ খাঁটি দুধ সংগ্রহ করে প্রতিদিন সকালে আনা হয় উলিপুর উপজেলা শহরের পাবনা মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, পাবনা ভাগ্যলক্ষী মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, ওকে হোটেলসহ কয়েকটি ক্ষীরমোহনের কারখানায়। তারপর বড় বড় পাত্রে ঢেলে কাঠখড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে জাল। দুধ ঘন হয়ে গেলে ছানা বানিয়ে প্রথমে মিষ্টির আদলে তৈরি করা হয় গুটি। গুটিগুলো চিনির সিরায় জাল দিয়ে সেই গুটি চিপিয়ে আবার ছেড়ে দেয়া হয় ঘন করা গরম দুধে। তারপর হয়ে যায় সুস্বাদু ক্ষীরমোহন। আর এ ক্ষীরমোহনের গুণগত মান ও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সুচারুভাবে কাজ করছেন কারিগর ও শ্রমিকরা।

পাবনা ভাগ্যলক্ষী মিষ্টান্নভাণ্ডারের কারখানার কারিগর অনিল চন্দ্র বলেন, ‘আমরা নিজেরা বিভিন্ন উপজেলা থেকে দুধের ফ্যাট মেপে ভালো মানের দুধ সংগ্রহ করি। তারপর কারখানায় এনে শুধুমাত্র দুধ জাল দিয়ে ছানা তৈরি করি। সেই ছানা থেকে ক্ষীরমোহনের গুটি বানিয়ে আবারও ঘন করা গরম দুধে এ ক্ষীরমোহন তৈরি করা হয়। এতে চিনি ও মসলা ছাড়া কোনো কেমিকেল মেশানো হয় না।

কুড়িগ্রাম জেলা শহর থেকে উলিপুরে ক্ষীরমোহন কিনতে যাওয়া আসাদুল বলেন, ‘যারা একবার উলিপুরের ক্ষীরমোহন খেয়েছেন, তারা বার বার মিষ্টান্ন ভাণ্ডারগুলোতে ছুটে আসেন শুধু ক্ষীরমোহন খেতে। নিজেরা খাওয়ার পাশাপাশি নিয়ে যান আত্মীয় স্বজনের বাড়িতেও। আমি নিজেও উলিপুরে এলে এই ক্ষীরমোহনের স্বাদ না নিয়ে যাই না। পাশাপাশি বাড়ির জন্য কিছু ক্ষীরমোহন কিনে নিয়ে যাই।’

 

 

বর্তমানে এই ক্ষীরমোহন জেলার গণ্ডি পেরিয়ে চলে যাচ্ছে পাশের জেলাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এমনকি দেশের বাইরেও এর চাহিদার কথা জানান ব্যবসায়ীরা। আবার অনলাইনে অর্ডারের মাধ্যমেও ক্ষীরমোহন পাঠাচ্ছেন তারা।

 

 উলিপুর উপজেলার পাবনা ভাগ্যলক্ষী মিষ্টান্নভাণ্ডারের মালিক রনি বলেন, ‘প্রায় ২৫ বছর ধরে এখানে আমাদের ব্যবসা চলমান রয়েছে। বাবার ব্যবসার হাত ধরে আলাদা আলাদা ব্যবসা পরিচালনা করছি। আস্তে আস্তে ক্ষীরমোহনের চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে। এ কারণে জেলার বাইরে এমনকি দেশের বাইরেও অনলাইনের মাধ্যমে ক্ষীরমোহন পাঠাচ্ছি।’

 এ অঞ্চলে বিয়ে বাড়িসহ যেকোনো অনুষ্ঠানে এখন প্রাধান্য পাচ্ছে উলিপুরের ক্ষীরমোহন। এজন্য দ্রব্যমূল্যের উচ্চগতির বাজারেও এর গুণগত মান ধরে রেখে জেলার ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার কথা জানান ব্যবসায়ী নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা।