শ্রমিকদের পাওনা দ্রুত পরিশোধ করতে ইউনূসের প্রতি বঙ্গবন্ধু পরিষদের আহ্বান

শ্রমিকদের পাওনা দ্রুত পরিশোধ করতে ইউনূসের প্রতি বঙ্গবন্ধু পরিষদের আহ্বান

শ্রমিকদের পাওনা দ্রুত পরিশোধ করতে ইউনূসের প্রতি বঙ্গবন্ধু পরিষদের আহ্বান

শ্রমিকদের পরিশ্রমের ন্যায্য পাওনা দ্রুত পরিশোধ করতে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতৃবৃন্দ। বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক স্বাক্ষরিত আজ এক যুক্ত-বিবৃতিতে এই আহবান জানানো হয়। 

নেতৃদ্বয় বলেন, বাংলাদেশের মানুষ শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগেই তার পাওনা পরিশোধের নীতিতে বিশ্বাস করে। আমরা দেশের গরিব শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা, দীর্ঘদিন ধরে অপরিশোধিত বিশাল অংকের টাকা টাকা দ্রুত পরিশোধ করে দেওয়ার জন্য ড. ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। তারা বলেন, ঔদ্ধত্য দেখিয়ে কিংবা শত কোটি টাকা খরচ করে বিদেশের অতি নামী পত্রিকায় বিশাল বিজ্ঞাপন প্রকাশ করার চাইতে গরিব শ্রমিকদের পাওনা দ্রুত মিটিয়ে দেওয়া অনেক বেশি নৈতিক কাজ।

তারা বলেন, ‘বাংলাদেশের একজন অন্যতম বিশিষ্ট ব্যক্তি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অনুযায়ী তিনি রাষ্ট্রকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করেছেন এবং তাঁর প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদেরকে তাদের পরিশ্রমের ন্যায্য পাওনা শত শত কোটি টাকা পরিশোধ করেননি  এ দুটি অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টদের দায়েরকৃত মামলা চলমান রয়েছে। তাই মামলাগুলো আদালতে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় দেশ ও বিদেশ থেকে বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের প্রতিবাদে বিবৃতি প্রদান করা অনুচিত কাজ হয়েছে। কি কি কারণে ও কারা এই মামলাগুলো দায়ের করেছেন  এই তথ্যগুলো একটু খোঁজ নিয়ে জানলে এই সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ একটি জনসংযোগ সংস্থার ব্যবস্থাপনায় এরকম সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গীর বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতেন বলে আমরা মনে করি না।’

 তারা বলেন, ‘নোবেল পুরষ্কার পেয়ে যারা সম্মানিত হন তাঁদের উচিত বিখ্যাত পুরষ্কারের সম্মানটুকু বজায় রাখার জন্য নিজের নৈতিকতা ও সম্মানবোধকে সবসময় সমুন্নত রেখে ব্যক্তিগত লোভের পথে পা বাড়ানো থেকে বিরত থাকা। কিন্তু তা না করে তারা যদি অন্য অপরাধীদের মতো অপকর্ম করতে শুরু করেন তখন রাষ্ট্রকে হস্তক্ষেপ ও আদালতকে বিচার করতেই হয়। কারণ এদেশে আইনের চোখে ধনী-গরিব বা বিখ্যাত-সাধারণ সবাই সমান।

নোবেল পুরস্কার যারা পান তাদের মধ্যে আমরা সচরাচর যে ‘নবিলিটি’ লক্ষ্য করি, এক্ষেত্রে সেটি দেখা যাচ্ছে না।’
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে, সকল সাক্ষ্য-প্রমাণাদি চুলচেরা বিশ্লেষণ করেই এসব মামলার চূড়ান্ত রায় দেয়া হবে। বিচার চলাকালে এই সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ চাইলে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তার প্রমাণাদি ও আইনি প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতা পরীক্ষার জন্য কোনো বিশ্বখ্যাত আইন-পর্যবেক্ষকও নিয়োগ করতেপারেন কিংবা বিচার যেন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় তারও দাবি করতে পারেন। কিন্তু তাঁরা এই বিচার কাজ বন্ধ করার কোনো দাবি করতে পারেন না।’

তারা আরও বলেন,  ‘পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসক-শোষক ও তাদের সহায়তাকারীদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাস অবর্ণনীয় কষ্টে লড়াই করে ৩০ লাখ শহিদের মহান আত্মত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত এই স্বাধীন বাংলাদেশে ধনি-গরিব সবাই আইনের দৃষ্টিতে সমান অধিকার ভোগ করবে। দেশ-বিদেশের এই সব বুদ্ধিজীবীরা তাঁদের করা উদ্ভট দাবির মাধ্যমে প্রকারান্তরে আমাদের বিচারালয় ও বিচার ব্যবস্থাকে অসম্মান করছেন, যা কোনো বিবেচনাতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।’বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীও এই মামলাগুলোর সবকিছু স্বচ্ছতার ভিত্তিতে পরিচালিত হচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য তাদেরকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। কারণ এখানে বিচার-ব্যবস্থা স্বচ্ছতার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়।  

সূত্র : বাসস