চরিত্রবানের জন্য সাত পুরস্কার

চরিত্রবানের জন্য সাত পুরস্কার

সংগৃহীত

উত্তম চরিত্র আলোকিত মানুষের বৈশিষ্ট্য। নৈতিকতা মানুষের প্রাণশক্তি। চরিত্রবান ব্যক্তি আল্লাহ ও রাসুলের প্রিয়তম। চরিত্রবান মানুষের গুণাবলি নির্দেশ করে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘...যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে আল্লাহভীরুদের জন্য, যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল উভয় অবস্থায় ব্যয় করে; যারা রাগ সংবরণকারী এবং মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল; আল্লাহ সৎকর্মপরায়ণদের ভালোবাসেন।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৩৩-১৩৪)

চরিত্রবানের তিনটি গুণ উল্লেখ করে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যখন যেভাবেই থাকো না কেন, আল্লাহকে ভয় করবে। মন্দ কাজ হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে নেক কাজ করবে। কারণ নেক কাজ মন্দ কাজকে মুছে দেয়। আর মানুষের সঙ্গে উত্তম আচরণ করবে।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৯৮৭)

হাসান (রা.) বলেন, ‘উত্তম চরিত্র হলো বদান্যতা, দানশীলতা ও সহনশীলতা।’ আবদুল্লাহ ইবনুল মোবারক (রহ.) বলেন, ‘উত্তম চরিত্র হলো চেহারার প্রসন্নতা, সৎপথে দান করা ও কষ্ট প্রদান থেকে বিরত থাকা।’ (জামিউল উলুম ওয়াল হিকাম, খণ্ড ১৯, পৃষ্ঠা ৮১)

মূলত এসব গুণের মাধ্যমেই একজন মানুষ উত্তম চরিত্রের দীক্ষা লাভ করে। আর উত্তম চরিত্র উত্তম জীবনের নিশ্চয়তা দেয়। দুনিয়া-আখিরাতে এর বিনিময়ে অনেক পুরস্কারের কথা হাদিসে বিবৃত হয়েছে।

এক. উত্তম চরিত্র মানুষকে জান্নাতে পৌঁছে দেবে। রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করা হলো, কোন আমল জান্নাতে প্রবেশের জন্য বেশি সহায়ক হবে? মহানবী (সা.) বললেন, ‘আল্লাহর ভয় এবং উত্তম চরিত্র।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২০০৪)

দুই. নেকের পাল্লায় সবচেয়ে ভারী হবে উত্তম চরিত্র। রাসুল (সা.) বলেন, ‘কেয়ামতের দিনে উত্তম চরিত্রের চেয়ে অন্য কিছু পাল্লায় বেশি ভারী হবে না।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২০০৩)

তিন. ইমানের পূর্ণতা আসে সচ্চরিত্রের মাধ্যমে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে চরিত্রে সর্বোত্তম সে ইমানে সর্বোত্তম।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৭৪০২)

চার. চরিত্রবান ব্যক্তি নবীদের উত্তরাধিকার বহন করে। চারিত্রিক পূর্ণতা দানকে রাসুলুল্লাহ (সা.) তার অন্যতম নববি মিশন হিসেবে উল্লেখ করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি চারিত্রিক গুণাবলি পরিপূর্ণ করার জন্য প্রেরিত হয়েছি।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৮৯৩৯)

পাঁচ. উত্তম চরিত্র ইবাদত। উত্তম চরিত্রের মাধ্যমে মুমিন নিয়মিত রোজা রাখা এবং তাহাজ্জুদ আদায় করার মর্যাদা লাভ করে। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই মুমিন উত্তম চরিত্রের দ্বারা স্থায়ী রোজাদার ও তাহাজ্জুদ আদায়কারীর মর্যাদা লাভ করে।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮০০)

ছয়. চরিত্রবান ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর সুপারিশপ্রাপ্ত হবে এবং জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে যেতে পারবে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে তার চরিত্র সুন্দর করবে আমি সর্বোত্তম জান্নাতে তার জন্য ঘরের জামিনদার হব।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮০২)

সাত. কেয়ামতের দিন রাসুল (সা.)-এর সঙ্গ লাভ করবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয় কেয়ামতের দিনে তোমাদের মধ্যে আমার সবচেয়ে প্রিয় এবং আমার মজলিশের সবচেয়ে কাছে তারাই থাকবে যারা তোমাদের ভেতর সর্বোত্তম চরিত্রবান।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২০১৮)