ঢাকায় রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘হুঁশিয়ারি’, যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

ঢাকায় রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘হুঁশিয়ারি’, যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

সংগৃহীত

সম্প্রতি রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ঢাকা সফর করেছেন। সফরকালে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেয়া একটি বক্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ল্যাভরভের বক্তব্যের সমালোচনা করে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, যারা প্রতিবেশী দেশকে আক্রমণ চালিয়ে নারী-শিশুসহ অসহায় মানুষদের ওপর নির্বিচারে হামলা করছে, সেই রাশিয়ার অন্য দেশের হস্তক্ষেপ নিয়ে কথা বলা উচিত নয়।

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়েছে। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার এক সাংবাদিকের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেছেন।

ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক মিলারের কাছে জানতে চান, জি-২০ সম্মেলনের ঠিক আগে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বাংলাদেশ সফর করেন। ঢাকায় এক সভায় তিনি বলেছেন, মস্কো এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ প্রতিষ্ঠার যেকোনো প্রচেষ্টাকে প্রতিরোধ করবে। একই সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করে বলেছেন, ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির নাম দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এখানে এসে এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। এ বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী এবং ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল সম্পর্কে আপনার অবস্থান কী?

জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমি রাশিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলব, যে দেশ তার দুটি প্রতিবেশী দেশকে আক্রমণ করেছে, যারা এখনও ইউক্রেনে আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে এবং সেখানে তারা প্রতিদিন স্কুল, হাসপাতাল এবং আবাসিক ভবনে বোমা হামলা চালাচ্ছে, তাদের অন্য কোনো দেশের ওপর আদেশ চাপিয়ে দেওয়ার বিষয়ে কথা বলা উচিত নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নীতির ক্ষেত্রে আমি বলব, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে অবাধ ও উন্মুক্ত, সংযুক্ত, সমৃদ্ধ, নিরাপদ এবং স্থিতিস্থাপকতা নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের অভিন্ন লক্ষ্য ও দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। এটাই আমাদের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের উদ্দেশ্য এবং এটাই আমাদের অবস্থান।

ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন করা হয়- দিল্লিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাক্ষাৎ নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন- বাইডেন ও শেখ হাসিনার মধ্যে ভালো কথোপকথন হয়েছে, যদিও আমরা হোয়াইট হাউস বা স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে এ বিষয়ে কোনো বিবৃতি জাতীয় কিছু দেখিনি?

উত্তরে স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র বলেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অন্য যেসব নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন সে বিষয়ে হোয়াইট হাউস বিস্তারিত প্রকাশ করেছে বলে আমি বিশ্বাস করি।

বাংলাদশের দুই সিনিয়র সাংবাদিক শফিক রেহমান এবং মাহমুদুর রহমানকে নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে মিলার বলেন, এর আগেও এ বিষয়ে আমরা বেশ কয়েকবার কথা বলেছি। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সাংবাদিকরা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে দুর্নীতি উন্মোচিত হয় এবং জনগণের তথ্য জানার অধিকার নিশ্চিত হয়। নিত্যদিনের যেসব বিষয় জনগণের জীবনকে প্রভাবিত করে- সে সম্পর্কে তাদের অবগত করতে সাংবাদিকদের সুযোগ দিতে হবে। আপনারা এখানে যেমন প্রতিদিন আমার কাছ থেকে জবাবদিহিতার বিষয়টি নিশ্চিত করতে চান, ঠিক তেমনি সাংবাদিকদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, আমি প্রায়ই বলে থাকি- সাংবাদিকদের অবশ্যই কোনো ধরনের ভীতি, হয়রানি এবং সহিংসতা ছাড়া কাজ করার সুযোগ করে দিতে হবে। বাংলাদেশের যেসব সাংবাদিকরা সরকারকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসতে কাজ করে যাচ্ছে; তাদের বিরুদ্ধে সরকারের রাষ্ট্রীয় এবং নিপীড়নমূলক আচরণের বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।