হবিগঞ্জে স্কুলছাত্রী হত্যাকাণ্ডে ২ আসামির মৃত্যুদণ্ড

হবিগঞ্জে স্কুলছাত্রী হত্যাকাণ্ডে ২ আসামির মৃত্যুদণ্ড

প্রতীকী ছবি

হবিগঞ্জে চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্রী মদিনাতুল কুবরা জেরিন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায় দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হবিগঞ্জের নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক সুদীপ্ত রায় এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে জাকির হোসেন ও নুর হোসেন নামে দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। 

রায় প্রদানকালে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জাকির হোসেন (২৫) আদলতে উপস্থিত ছিল। সে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ধল গ্রামের দিদার হোসেনের পুত্র। দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামি নুর আলম (২২) একই উপজেলার পাটলি গ্রামের আব্দুল হাইয়ের পুত্র। রায় ঘোষণা পর জাকির হোসেনকে হবিগঞ্জ জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। 

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারী সকাল ৮টায় নূর আলম নামে একজনের অটোরিকশায় উঠে বিদ্যালয়ে যাচ্ছিল হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ধল গ্রামের আব্দুল হাইয়ের কন্যা মদিনাতুল কুবরা জেরিন। এর আগেই অটোরিকশাতে ছিলেন জাকির ও তার সহযোগী। অটোরিকশাটি জেরিনেকে স্কুলে না নামিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছিলো। সে নামার চেষ্টা করলে জেরিনের সাথে ধস্তাধস্তি শুরু হয় অপহরণকারীদের। এক পর্যায়ে সে অটোরিকশা থেকে লাফ দিলে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পায়। পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় জেরিন।

ওইদিন রাতেই থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন জেরিনের বাবা। এ ঘটনায় নুর হোসেন ও জাকিরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালতে ১৬৪ ধারায় তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেয় তারা। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সিএনজি অটোরিকশা থেকে ফেলে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয় জেরিনকে। পরে এ ঘটনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হবিগঞ্জ সদর থানার তৎকালীন ওসি মাসুক আলী ২০২১ সালের ১৮ মার্চ জাকির ও নুর হোসেন ও রুবেল মিয়া নামে তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। রুবেল অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় অন্য আদালতে তার বিচার কার্যক্রম চলছে। মামলায় ২৩ জন স্বাক্ষীর মধ্যে ২১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিজ্ঞ বিচারক অপহরণ এর অপরাধে উভয় আসামিকে যাবজ্জীবন ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং হত্যার অপরাধে উভয় আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ প্রদান করেন। 

মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবি এডভোকেট চৌধুরী আশরাফুল বারি নোমান এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এই রায়ে ন্যায় বিচার পেয়েছে জেরিনের পরিবার। অপরদিকে, আসামি পক্ষের আইনজীবি এডভোকেট নিলাদ্রী শেখর পুরকায়স্থ এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, তারা এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল দায়ের করবেন।