আদালতে স্ত্রী হত্যার বর্ণনা দিলেন স্বামী

আদালতে স্ত্রী হত্যার বর্ণনা দিলেন স্বামী

ছবিঃ সংগৃহীত

বরিশালের গৌরনদীতে পারিবারিক কলহের জের ধরে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে টর্চলাইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে স্ত্রী হেরোনা বেগমকে (৬৩) হত্যা করে আত্মহত্যার প্রচারণা চালানো হয়। তবে জেরার মুখে হত্যার দায় স্বীকার করেন নিহতের স্বামী। পরে বরিশাল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার বর্ণনা দেন তিনি।

 

মৃতের স্বামী উপজেলার চরদিয়াসুর গ্রামের স্বামী হায়দার আলী প্যাদা (৬৫) বুধবার সন্ধ্যায় বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্ত্রী হেরোনাকে হত্যার বর্ণনা দিয়ে জবানবন্দি দেন।

এদিকে গ্রেফতারকৃত নিহতের ছোট ছেলে সুমন প্যাদা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়নি। আদালতের বিচারক গ্রেফতারকৃত পিতা ও পুত্রকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ নেন।

 

বিষয়টি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গৌরনদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হেলালউদ্দিন নিশ্চিত করেছেন।

 

আদালতে দেওয়া স্বামী হায়দার আলী প্যাদা জবানবন্দির বরাত দিয়ে তিনি জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে অভিমান করে স্ত্রী হেরোনা বেগম গত ৫ দিন যাবত ভাত না খেয়ে দিন কাটাচ্ছিল। সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে স্বামী হায়দার আলী প্যাদা জোর করে স্ত্রী হেরোনা বেগমকে ভাত খাওয়ানোর চেষ্টা করে। হেরোনা ভাত খেতে না চাইলে একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী হায়দার আলী প্যাদা টর্চলাইট দিয়ে স্ত্রী হেরোনার মাথায় সজোরে আঘাত করলে সে খাটের নিচে পড়ে যায়। টের পেয়ে পুত্র সুমন প্যাদা ঘুম থেকে জেগে এসে দেখতে পায়, রক্তক্ষরণ হয়ে বৃদ্ধা (মা) হেরোনা মারা গেছে। বাবা হায়দারকে হত্যা মামলা থেকে বাঁচানোর জন্য পিতা ও পুত্র একত্রে নিহত হেরোনার গলায় দড়ি দিয়ে বাড়ির টয়লেটে তার (হেরোনা) লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার প্রচারণা চালায়।

 

তিনি আরও জানান, টয়লেট থেকে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের সময় লাশের মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়ায় মৃতের স্বামী হায়দার আলী প্যাদা, তার ছোট পুত্র সুমন প্যাদা ও পুত্রবধূ রাখি বেগম, তুলি বেগমকে থানায় এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে নিহতের স্বামী ও ছোট পুত্র পুলিশের কাছে বৃদ্ধা হেরোনাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।

 

মৃতের ভাইয়ের দায়েরকৃত হত্যা মামলার আসামি হিসেবে স্বামী হায়দার আলী প্যাদা ও তার পুত্র সুমন প্যাদাকে বুধবার সকালে গ্রেফতার দেখানো হয়। গ্রেফতারকৃত পিতা ও পুত্রকে বুধবার দুপুরে বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়। অপর আটককৃত পুত্রবধূ রাখি বেগম, তুলি বেগমকে মামলার প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী করা হয়েছে