জয় দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু বাংলাদেশের

জয় দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু বাংলাদেশের

জয় দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু বাংলাদেশের

ভারত বিশ্বকাপে শুভ সূচনা করেছে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানকে উড়িয়ে দিয়েই বিশ্বকাপ শুরু সাকিব আল হাসানদের। যেখানে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিয়েছেন সাকিব আল হাসান, আর মেহেদী মিরাজ যেন তার বাজির ঘোড়া। ব্যাটে-বলে পারফর্ম করেই মিরাজ ম্যাচ সেরা।

ব্যাট হাতে গুরুত্বপূর্ণ ৫৭ রান, বল হাতে ৩ উইকেট; ধর্মশালায় নিজের ছন্দ ধরে রাখেন মিরাজ। আর তাতেই বিশ্বকাপে নিজের উদ্বোধনী ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৬ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করে ৩৭.২ ওভারে করা আফগানদের ১৫৬ রান ১৫.২ ওভার বাকি থাকতেই পেরিয়ে যায় টাইগাররা।

তিনে নেমে মিরাজ সফল হলেও ব্যার্থ ছিলেন দুই ওপেনার। প্রস্ফুটিত হওয়ার আগেই ঝরে পড়েন তানজিদ তামিম। লিটনের সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউট হন তিনি। নাজিবুল্লাহ জাদরানের সরাসরি থ্রোতে ১৩ বলে ৫ রানে ধরতে হয় সাজঘরের পথ।

লিটনও অবশ্য ইনিংস বড় করতে পারেননি, বরাবরের মতোই আশাজাগানিয়া শুরুর পর আবারো উপহার দেন হতাশা। আরো একবার ব্যর্থতার বৃত্তে আটকা পড়েন ১৮ বলে ১৩ রানে। ফারকীর বল ব্যাট ছুঁয়ে স্ট্যাম্প ভাঙে। ফলে ২৭ রানেই ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

পরের অধ্যায়টা মেহেদী মিরাজ আর নাজমুল শান্তের। দুই বন্ধু মিলেই দলকে পৌঁছে দেন জয়ের দ্বারপ্রান্তে। গড়ে তুলন ৯৭ রানের জুটি। যদিও মাঝে বেশ কয়েকবর সুযোগ এসেছিল জুটি ভাঙার, তবে আফগানরা তা কাজে লাগাতে পারেনি।

এই সুযোগে বিশ্বপকাপে দু'জনেই তুলে নেন নিজেদের প্রথম ফিফটি। ৭৩ বলে ৫৭ করে আউট হলে থামে এই যুগলবন্দী। তবে তা জয়ের পথে বাঁধা হতে পারেনি। সাকিবকে নিয়ে বাকি পথটা সামলে নেন শান্ত। সাকিব আউট হন ১৯ বলে ১৪ রানে। শুরুতে সাবলীল না হলেও চারে নামা শান্ত মানিয়ে নেন নিজেকে। অপরাজিত থাকেন ৮৩ বলে ৫৯ রানে।

তবে ব্যাট হাতে নয়, জয়ের ভীতটা বল হাতেই করে দিয়েছিলেন মেহেদী মিরাজ। অধিনায়ক সাকিবকে সঙ্গে নিয়ে ধ্বসিয়ে দেন আফগানদের।

অবশ্য শুরুটা যেভাবে করেছিল আফগানিস্তান, তাতে খানিকটা ভরকে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে দক্ষ অধিনায়কের মতো তা সামলে নেন সাকিব আল হাসান। সামনে থেকেই দেন নেতৃত্ব, দলকে করে তুলেন উজ্জীবিত।

অধিনায়ককে জ্বলে উঠতে দেখে নিজেদের ফিরে পায় টাইগার বোলাররা। বেশ আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেন তারা। আফগানদের আর সুযোগ দেননি ম্যাচে ফেরার৷ ২ উইকেটে ১১২ রান থেকে ১৫৬ রানের অলআউট হয় আফগানিস্তান। অর্থাৎ ৪৪ রান করতেই শেষ ৮ উইকেট হারায় তারা।

ধর্মশালার সকালটা অবশ্য নিজেদের মতো করেই নিয়ন্ত্রণ করে আফগানিস্তান। প্রথম উইকেট হারানোর আগ পর্যন্ত উপহার দিতে থাকে সাহসী ক্রিকেট। তবে বিপদ বেড়ে যাবার আগেই উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন সাকিব।

ইবরাহীম জাদরানকে ফিরিয়ে প্রথম উপলক্ষ এনে দেন তিনি। ৪৭ রানের উদ্বোধনী জুটি ভেঙে জাদরান ফেরেন ২৫ বলে ২২ করে৷ দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালায়, সুযোগ দেননি সাকিব। তিনে নামা রহমত শাহকে ১৮ রানে বোকা বানান টাইগার দলপতি।

৮৩ রানে ২ উইকেট হারিয়ে খানিকটা চাপে পড়ে আফগানরা, যা বাড়িয়ে দেন হাশমতুল্লাহ শাহিদি। তাকে চেপে ধরেগুরবাজের উপর চাপ সৃষ্টি করে বাংলাদেশ। যেই চাপ নিতে পারেননি গুরবাজ। চাপমুক্ত হতে গিয়ে মোস্তাফিজের বলে ক্যাচ তুলে দেন তামিমের হারে। আউট হন ২৫.২ ওভারে ৬২ বলে ৪৭ করে।

এর আগের ওভারেই অবশ্য মেহেদী মিরাজ ফেরান আফগান অধিনায়ক হাশমতুল্লাহকে। ৩৮ বলে ১৮ করে আউট হন এই ব্যাটার। এই দুই ওভারে কোনো রান বের করতে পারেনি আফগানিস্তান। চাপের মাঝে তাদের আরো চেপে ধরেন সাকিব, নাজিবুল্লাহ জাদরানকে (৫) ফেরান তিনি।

তালে তালে যেন নিজেকে ফিরে পান তাসকিন। ৩০ তম ওভারে এসে নিজের প্রথম উইকেট তুলে নেন তিনি। মোহাম্মদ নাবির (৬) স্ট্যাম্প ভাঙেন এই পেসার। ২৫ থেকে ৩০, এই ৬ ওভারে মাত্র ১৪ রানে ৪ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে তখন ৩০ ওভারে ১২৬/৬।

এরপর আজমতুল্লাহ ওমরজাই চেষ্টা করেছিলেন বটে, তবে তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি কেউই। নিজেও পারেননি ইনিংস বড় করতে। রশিদ খান ১৬ বলে ৯ করে মেহেদী মিরাজের শিকার হন। ১৫০ রানে ৭ উইকেট হারায় আফগানরা

২২ রান করে শরিফুলের বলে স্ট্যাম্প উড়ে ওমরজাইয়ের। ১৫৬ রানে তিনি ফেরার পর শেষ দুই উইকেটে আর কোনো রান নিতে পারেনি দলটি। ৩৭.২ ওভারেই গুটিয়ে যায় আফগানিস্তানের ইনিংস। সাকিব ও মিরাজ নেন সমান ৩ উইকেট, জোড়া উইকেট শরিফুলের।