৯ নভেম্বর খুলনা-মোংলা রেললাইনের উদ্বোধন

৯ নভেম্বর খুলনা-মোংলা রেললাইনের উদ্বোধন

ফাইল ছবি

খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের ৯৯% শেষ হয়েছে। এ মাসের (অক্টোবর) মধ্যে ট্রেন চলাচলের ট্রায়াল দেওয়া হবে। আগামী ৯ নভেম্বর প্রকল্পটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রেলপথ উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী খুলনার সার্কিট হাউজ ময়দানে নির্বাচনি জনসভায় ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে। 

খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ট্রানজিট সুবিধার আওতায় ভারত, নেপাল ও ভুটানে পণ্য পরিবহন সহজ করতে ২০১০ সালে খুলনার ফুলতলা রেলস্টেশন থেকে মোংলা বন্দর পর্যন্ত রেলপথ স্থাপন প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। ২০১০ সালে প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় একনেক। তবে নানা জটিলতায় নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে।

ভারতের ঋণ সহায়তায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লার্সেন অ্যান্ড টার্বো এবং ইরকন ইন্টারন্যাশনাল।

প্রকল্পের কাজ তিন ভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে রয়েছে রূপসা নদীর ওপর রেলসেতু নির্মাণ, মূল রেললাইন স্থাপন এবং টেলিকমিউনিকেশন ও সিগন্যালিং স্থাপন।

প্রথম দফায় প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১,৭২১ কোটি টাকা। তবে সবশেষ প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৪,২৬০ কোটি টাকা। এ প্রকল্পে ভারতীয় ঋণ ২,৯৪৮ কোটি টাকা। আর বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়ন ১,৩১২ কোটি টাকা।

খুলনা-মোংলা বন্দর রেললাইন প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী আহমেদ হোসেন মাসুম জানান, প্রকল্পের কাজ তিন ভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে রয়েছে রূপসা নদীর ওপর রেলসেতু নির্মাণ, মূল রেললাইন স্থাপন এবং টেলিকমিউনিকেশন ও সিগন্যালিং স্থাপন। ২০১১ সালে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও শেষ করতে পারেননি ঠিকাদার। নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় প্রথম সংশোধনীতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৮০১ কোটি টাকা। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, তা সম্ভব হয়নি। দ্বিতীয় দফায় সংশোধনের পর ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। সেইসঙ্গে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লারসেন অ্যান্ড টুব্রো রূপসা নদীর ওপর রেলসেতুর নির্মাণকাজ করেছে। বাকি কাজ করেছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইরকন ইন্টারন্যাশনাল।

তিনি আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতি ও নানা কারণে কাজ শেষ করতে সময় লেগেছে। দুই দফায় প্রকল্প সংশোধনের কারণে ব্যয় বেড়েছে দুই হাজার ৫৩৯ কোটি টাকা। তবে তৃতীয় দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লেও ব্যয় বাড়েনি। এবার নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হয়েছে। ২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর রূপসা রেলসেতুরর কাজ শুরু হয়। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন ২৫ জুন সপ্তম ও শেষ স্প্যানটি বসে রূপসা রেলসেতুতে। রূপসা নদীর ওপর ৫ দশমিক এক তিন কিলোমিটার রেলসেতুর পুরোটাই শেষ হয়েছে। এই রেলপথের ১১টি ষ্টেশনের প্লাটফর্মের নির্মাণ কাজও শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যেই এই রেলপথের ১০৭টি ছোট ব্রিজ ও ৯টি আন্ডারপাস নির্মাণ কাজও শেষ হয়েছে।

শতভাগ কাজ শেষের পথে অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে ট্রেনের একাধিক ট্রায়াল রান দেয়া হবে। বিভিন্ন স্থানে রেলপথের ফিনিশিং, সিগনালিং ও টেলিকমিউনিকেশনের কাজও শেষের পথে। এই রেলপথ উদ্বোধনের মাধ্যমে বিশ্বের একমাত্র নিরবিচ্ছিন্ন রেল সংযোগ হবে আন্তজার্তিক সমুদ্রবন্দর মোংলার সঙ্গে। যা আন্তজার্তিক সমুদ্রবন্দর প্রতিষ্ঠার ৭২ বছর পর পূরণ হতে চলছে।