আল্লাহর ওপর ভরসার উপকারিতা

আল্লাহর ওপর ভরসার উপকারিতা

সংগৃহীত

এক. এমন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন মুমিন বান্দার ওপর শয়তান কখনো আধিপত্য বিস্তার করতে পারে না। কোরআনে কারিমের ভাষায়, ‘তার আধিপত্য চলে না তাদের ওপর, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং আপন পালনকর্তার ওপর ভরসা রাখে।’ -সুরা নাহল : ৯৯

দুই. আল্লাহর ওপর ভরসাকারী বান্দাকে আল্লাহতায়ালা অনেক ভালোবাসেন। ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ভরসাকারীদের ভালোবাসেন।’ -সুরা আলে ইমরান : ১৫৯

অতএব আল্লাহর ভালোবাসার চেয়ে বড় পাওয়া বান্দার জন্য আর কী হতে পারে?

তিন. এমন বান্দার জন্য আল্লাহ নিজেই যথেষ্ট হয়ে যান অর্থাৎ এমন বান্দার সঙ্গে আল্লাহ আছেন, তো যার সঙ্গে আল্লাহ আছেন তার কীসের ভয়? কীসের অভাব? যেমনটা সুরা তালাকে আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর ভরসা করে তার জন্য তিনিই যথেষ্ট। আল্লাহ তার কাজ পূর্ণ করবেন।’ -সুরা তালাক : ৩

চার. আল্লাহর ওপর ভরসাকারী বান্দা বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। হাদিসে এসেছে, নবী কারিম (সা.) বলেন, ‘আমার সামনে একবার বিভিন্ন নবীর উম্মতকে পেশ করা হয়। তখন আমি নবীদের সঙ্গে তাদের উম্মতকে দেখলাম। কোনো কোনো নবীর সঙ্গে একটি দল, কারও সঙ্গে দশজন, কারও সঙ্গে পাঁচজন, আবার কোনো নবী একা একাই চলছেন। হঠাৎ বড় একটি দল দেখে আমি হজরত জিবরাইল (আ.)-কে জিজ্ঞেস করলাম। এরাই কি আমার উম্মত? তিনি বললেন না। আপনি ওই দিকে দেখুন। নবীজি (সা.) বলেন, আমি সেদিকে তাকাতেই বিশাল একটি দল দেখলাম। হজরত জিবরাইল (আ.) বললেন, এরাই আপনার উম্মত। এদের সম্মুখভাগের সত্তর হাজার লোক হিসাব ছাড়া ও কোনো আজাব ছাড়া, জান্নাতে প্রবেশ করবে। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, তারা কারা? হজরত জিবরাইল (আ.) বললেন, তারা ওইসব লোক, যারা অবৈধভাবে ঝাড়-ফুঁক দেয় না এবং নেয়ও না এবং পাখির মাধ্যমে গণনা করে শুভ-অশুভ নির্ধারণ করাকে বিশ্বাস করে না, বরং সর্বক্ষেত্রে একমাত্র আল্লাহর ওপরেই ভরসা করে।’ -সহিহ বোখারি : ৬১৭৫

পাঁচ. আল্লাহর ওপর ভরসাকারী বান্দার রিজিকের জিম্মাদার স্বয়ং আল্লাহ হয়ে যান। হাদিসে এসেছে, নবী কারিম (সা.) বলেন, তোমরা যদি যথাযথভাবে আল্লাহর ওপর ভরসা করতে, তাহলে আল্লাহ ওই পাখির মতো তোমাদের রিজিক দান করতেন; যে পাখি সকালে খালি উদরে বের হয় আর বিকালে উদরপূর্তি করে ফিরে আসে। অর্থাৎ সকালবেলা পাখি যেমন সম্পূর্ণ আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে বের হয় এবং সর্বশক্তি ব্যয় করে আহার খুঁজতে থাকে, ঠিক তেমনি মানুষ যদি আল্লাহর ওপর পরিপূর্ণ ভরসা করে সর্বশক্তি ব্যয় করে, রিজিক অন্বেষণ করে, তাহলে আল্লাহ উদরপূর্তি করা পাখির মতো সেই মানুষকেও অবশ্যই রিজিক দান করবেন।