বিএনপিপন্থী ৭ আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার বিষয়ে আদেশ ১৫ নভেম্বর

বিএনপিপন্থী ৭ আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার বিষয়ে আদেশ ১৫ নভেম্বর

বিএনপিপন্থী ৭ আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার বিষয়ে আদেশ ১৫ নভেম্বর

আপিল বিভাগের দু’জন বিচারপতির পদত্যাগের ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়ায় বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামালসহ বিএনপিপন্থী সাতজন আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিশ দেয়া হবে কি না, সে বিষয়ে আগামী ১৫ নভেম্বর আদেশের দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। একই সাথে সুপ্রিম কোর্টসহ সব আদালত অঙ্গনে মিছিল সমাবেশ না করার বিষয়ে হাইকোর্টের রায় কঠোরভাবে অনুসরণ করতে বলেছেন আপিল বিভাগ।বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি। অন্যদিকে বিএনপিপন্থী সাত আইনজীবীর পক্ষে ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন, সুপ্রিম কোর্ট বার এডহক কমিটির আহ্বায়ক মহসিন রশিদ, সৈয়দ মামুন মাহবুবু, মো: আক্তারুজ্জামান প্রমুখ।

এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি বলেন, আদালত অবমাননার নোটিশ ইস্যু হয়নি। এ বিষয়ে ১৫ নভেম্বর পরবর্তী তারিখ রাখা হয়েছে।তিনি বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নয়, আদালত অঙ্গনকে পরিচ্ছন্ন রাখতে এই আবেদন করেছি।এদিকে আদালত অবমাননার মামলায় স্বেচ্ছায় আসামি হতে সুপ্রিম কোর্টের ১৯৫ জন আইনজীবী আবেদন করেছেন। বুধবার সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ বিষয়ে দু’টি আবেদন করা হয়।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির এডহক কমিটির আহ্বায় সিনিয়র আইনজীবী মহসিন রশিদ একটি আবেদন করেছেন। এছাড়া সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক আলহাজ গীয়াস উদ্দিন আহমেদ, এডহক কমিটির সদস্য সচিব শাহ আহমেদ বাদল, ইউনাইটেড ল’ইয়ারস ফ্রন্টের (ইউএলএফ) সমন্বয়ক সৈয়দ মামুন মাহবুব, আইনজীবী জগলুল হায়দার আফ্রিক, কে এম জাবির, খালেদ আহমেদ, মোহাম্মদ আলী, ডঃ রফিকুল ইসলাম মেহেদী, গোলাম রহমান, কে আর খান পাঠান, রেজাউল করিম রেজাসহ ১৯৪ জন আইনজীবী আদালত অবমাননার মামলায় স্বেচ্ছায় আসামি হতে অপর একটি আবেদন করেন।আজ চেম্বার জজ আদালতে এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে বলে আবেদনকারী আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব জানান।

এর আগে গত ২৯ আগস্ট বিএনপিপন্থী সাতজন আইনজীবীর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়েছে। এরপর ৩০ আগস্ট তৎকালিন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ ১৮ অক্টোবর এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন। একইসাথে আদালত অঙ্গনে মিছিল সমাবেশ না করার বিষয়ে হাইকোর্টের দেয়া রায় কঠোরভাবে অনুসরণ করতে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।

যে সাতজন আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়েছে তারা হলেন বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নি, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সভাপতি আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সহ-সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল।

এর আগে সকালে আপিল বিভাগের দুই বিচারপতির পদত্যাগের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন ও মিছিল সমাবেশ করায় বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ও বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামালসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন দায়ের করা হয়। আইনজীবী নাজমুল হুদার পক্ষে অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি এ আবেদন দায়ের করেন।

আদালত অবমাননার আবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সাথে তৎকালীন আপিল বিভাগের বিচারপতিরা একত্রে বিচারকাজ পরিচালনায় অপারগতা প্রকাশ করেছিলেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান বিনা ভোটের সরকারের রোষানলে পড়ে বিচারপতি সিনহা দেশ ত্যাগ ও পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

তিনি আরো বলেন, আপিল বিভাগের দু’জন বিচারপতিকে বিচার কাজ থেকে বিরত না রাখলে ৪৮ ঘণ্টা পরে তাদের পদত্যাগের দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে মর্মে হুঁশিয়ারি প্রদান করা হয়।

উল্লেখ্য, শোক দিবসের অনুষ্ঠানে নিজেদের ‘শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ’ উল্লেখ করে বক্তব্য দেয়ায় গত ২৭ তারিখে আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো: আবু জাফর সিদ্দিকীর পদত্যাগের ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল এ দাবি জানান। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দুই বিচারকের পদত্যাগ। অন্যথায় আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর নতুন কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।