স্কুলের দোলনায় চড়তে গিয়ে মারা গেল শিশু 

স্কুলের দোলনায় চড়তে গিয়ে মারা গেল শিশু 

ছবিঃ সংগৃহীত

কুমিল্লার দেবিদ্বারে স্কুলের দোলনায় চড়তে গিয়ে বৈদ্যুতিক শকে নুসাইফা জাহান (৯) নামের তৃতীয় শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের উপজেলা পরিষদ স্কুলে।

শিক্ষার্থী মৃত্যুর সংবাদে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। শত শত শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, বুধবার সকালে দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদ স্কুলের পিটি ক্লাশ শুরুর আগে ৩ শিক্ষার্থী দোলনায় চড়ছিল। সকাল সাড়ে ১০টায় পিটি ক্লাশ শুরু হলে ২ শিক্ষার্থী চলে আসলেও নুসাইফা (৯) দোলনায় আটকে যায়। তখন শিক্ষার্থীরা চিৎকার করে শিক্ষকদের বিষয়টি জানায়। বিদ্যালয়ের শিক্ষক হক মুন্সী ও ওমর ফারুক রাসেল দৌড়ে গিয়ে তাকে দোলনা থেকে নামাতে যান। শিক্ষক বিদ্যুতের শক খেয়ে দৌড়ে গিয়ে মেইন সুইচ বন্ধ করে নুসাইফাকে উদ্ধার করে দ্রুত দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মৃত নুসাইফা (৯) উপজেলা পরিষদ স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীর গোলাপ শাখার ছাত্রী ছিল। তার বাবা দেবিদ্বার এলজিইডি অফিসের কার্যসহকারী মো. সহিদুল ইসলাম। তারা সপরিবারে উপজেলা পরিষদ কোয়ার্টারে বসবাস করতেন। তাদের গ্রামের বাড়ি চৌদ্দগ্রাম উপজেলার পাশারকোট গ্রামে।

অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা জানান, বিদ্যালয়ের একটি পুরাতন ভবনকে আনসার সদস্যরা আবাসিক কোয়ার্টার হিসেবে ব্যবহার করছেন। আনসারদের ভবন থেকে বিদ্যালয়ের একটি শ্রেণিকক্ষে ঝুলন্ত বৈদ্যুতিক তার ছিল। যেটি দোলনার স্টিল ফ্রেমের উপরে ঝুলে ছিল, ওটা থেকেই দুর্ঘটনা ঘটে।

তবে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আল আমিন বৈদ্যুতিক শকের বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করেন এবং প্রশাসনসহ সাংবাদিকদের জানান, নুসাইফা দোলনায় চড়তে গিয়ে গলায় শিকল পেঁচিয়ে মারা গেছে।

ঘটনার সংবাদ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা, এএসপি (সার্কেল) শাহ মোহাম্মদ তারিকুজ্জামান, অফিসার ইনচার্জ কমল কৃষ্ণ ধর, বিদ্যুৎ অফিসের ডিজিএম ও শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।

দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ কমল কৃষ্ণ ধর জানান, স্কুলছাত্রী মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবার অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা বলেন, বিষয়টা নিয়ে তদন্ত চলছে, এ মুহূর্তে কিছু বলতে পারছি না।