সাহারা গ্রুপের চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মারা গেছেন

সাহারা গ্রুপের চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মারা গেছেন

সংগৃহীত

ভারতের অন্যতম শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী সাহারা ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা সুব্রত রায় মারা গেছেন।   দীর্ঘদিন ধরে তিনি ক্যানসারসহ একাধিক শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন।

গত ১২ নভেম্বর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে মুম্বাইয়ের কোকিলাবেন ধীরুভাই আম্বানি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল।  সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তিনি স্ত্রী স্বপ্না রায়, দুই পুত্র সুশান্ত ও সীমান্ত রায়সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। সাহারা ইন্ডিয়া পরিবারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতি দিয়ে তার মৃত্যুর খবর জানানো হয়।  

বিবৃতিতে থেকে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সুব্রত রায়ের মৃত্যু হয়েছে। বহু দিন ধরেই ক্যানসার, উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্ট ছাড়াও হৃদ্‌যন্ত্রের সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। তার মৃত্যুতে সামাজিক মাধ্যমে শোকপ্রকাশ করেছে সমাজবাদী পার্টি (সপা)।

১৯৪৮ সালের ১০ জুন বিহারের আরারিয়াতে জন্মগ্রহণ করেন সুব্রত। গোরক্ষপুর টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট থেকে তিনি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর পাস করেন। ১৯৭৬ সালে ধুঁকতে থাকা চিটফান্ড সংস্থা ‘সাহারা ফিন্যান্স’কে অধিগ্রহণ করেন। ১৯৭৮ সালে সেটির নাম বদলে হয় ‘সাহারা পরিবার’।

ক্রমেই ভারতের মানচিত্রে নিজেকে একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। তার হাত ধরেই আর্থিক প্রতিষ্ঠান, আবাসন শিল্প, সংবাদমাধ্যম এবং হোটেল ব্যবসাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাম্রাজ্য বিস্তার করেছিল সাহারা। ১৯৯২ সালে ‘রাষ্ট্রীয় সাহারা’ নামে হিন্দি সংবাদপত্রের সূচনা করেন তিনি। এর কয়েক বছর পরেই হাত দেন তার স্বপ্নের প্রকল্পে। পুণেতে ১০ হাজার একরেরও বেশি জায়গা জুড়ে শুরু করেন ‘অ্যাম্বি ভ্যালি প্রকল্প’। এর পরে তিনি একটি টিভি চ্যানেলও চালু করেন। লন্ডনের গ্রসভেনর হাউস হোটেল এবং নিউ ইয়র্কের প্লাজা হোটেলের মতো নামি হোটেলও অধিগ্রহণ করেন তিনি।

এত কিছুর পরও বিতর্ক পিছু ছাড়েনি তার। ২০০২ সালে সেবি সুপ্রিম কোর্টে জানায় যে, সাহারা গ্রুপ কোম্পানি বেআইনিভাবে বাজার থেকে ৩৫০ কোটি ডলার তুলেছে। সাহারা কর্তৃপক্ষ যদিও দাবি করে,  লাখ লাখ ভারতীয় ব্যাংকিং পরিষেবার বাইরে ছিলেন, তাদের বিনিয়োগের সুযোগ করে দিয়েছিলেন তারা। তবে যে তালিকা সাহারা দিয়েছিল, তার মধ্যে বহু বিনিয়োগকারীর হদিস মেলেনি। ২০১৪ সালের মার্চে জেলে পাঠানো হয় সাহারা কর্তাকে। প্রায় দুবছর জেলে থাকার পর ২০১৬ সালে প্যারোলে বেরিয়ে আসেন সুব্রত। সেই থেকে জেলের বাইরেই ছিলেন তিনি।