নির্বাচন কমিশন ও আশপাশের নিরাপত্তা জোরদার

নির্বাচন কমিশন ও আশপাশের নিরাপত্তা জোরদার

ছবি : সংগৃহীত

আজ বুধবার সন্ধ্যায় আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা। এটিকে ঘিরে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবন ও আশপাশের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এ এলাকায় এখন তিন স্তরের নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে।সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ, র‌্যাব ও আনসার সদস্য মোতায়েন রয়েছে। সেই সাথে নির্বাচন ভবনের ভেতরেও দর্শনার্থীদের প্রবেশে কড়া সতর্কতা নেয়া হয়েছে।

বুধবার (১৫ নভেম্বর) ২৬-বিজিবির উপঅধিনায়ক মেজর আবরার আল মেহবুব জানান, নির্বাচন ভবনের চারপাশের সড়কে পুলিশ, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) পাশাপাশি তিন প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। শুধু নির্বাচন কমিশন ভবন নয়, আশপাশেও নজর রাখছে তারা।

সংবাদমাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী, নির্বাচন ভবন এলাকায় সকাল ৮টার পর থেকে র‌্যাবের টহল দেখা গেছে। র‌্যাব সদস্যদের অন্তত চারটি গাড়ি টহলে রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার প্রবেশপথে ব্যারিকড দেয়া হয়েছে। একইসাথে নির্বাচন ভবন ঘিরে পুলিশ ও বিজিবির টহল গাড়িও দেখা গেছে।

আগারগাঁওয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার বিষয়ে বুধবার সকাল ১০টার দিকে নির্বাচন কমিশনের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান ইসি সচিব। এদিন বিকেল ৫টায় নির্বাচন কমিশনের সভায় মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময়, বাছাই, প্রত্যাহারের শেষ দিন ও ভোটের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হবে। তারপর সন্ধ্যা ৭টার দিকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।

ইসি সচিব মো: জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের জানান, অতীতে রেকর্ড করা ভাষণের মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনাররা জাতীয় নির্বাচনের তফসিল দিলেও এবার সিইসির সেই ভাষণ বিটিভি ও বেতারে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

এর আগে ৯ নভেম্বর বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিনের সাথে সাক্ষাৎ করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার অনুমতি নেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে সিইসি বলেন, নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন করতে আমরা বদ্ধপরিকর।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর। নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী, বর্তমান সংসদের পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি। পরবর্তী সংসদের জন্য ভোটগ্রহণ করতে হবে তার আগের ৯০ দিনের মধ্যে। অর্থাৎ গত ১ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হয়েছে। আর ২৯ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির শুরুতেই ভোট আয়োজনের প্রস্তুতির কথা এর আগে বিভিন্ন সময়ে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ১০৩টি।

আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মেরুকরণ দেখা গেছে। দুই মেরুতে অবস্থান করছে দুই প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি ও আওয়ামী লীগ।

২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে এনে বিএনপি বলছে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তারা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে।

অন্যদিকে বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানে অনড় অবস্থানে রয়েছে আওয়ামী লীগ। তারা বলছে, অনির্বাচিত কোনো সরকারে কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে না। সংবিধান মেনে নির্বাচন যথাসময়ে হবে।

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখন পর্যন্ত ক্ষমতাসীন দলের বাইরে বড় কোনো দল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে কিনা সে বিষয়ে খোলাসা করে কিছু বলেনি। ছোট দল ও সরকারপন্থী কয়েকটি জোট নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে মত দিয়েছে। তারমধ্যে তৃণমূল বিএনপি ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে তফসিল ঘোষণা হতে যাচ্ছে যখন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো ধরনের ঐক্য বা সমঝোতার চেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র বড় দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনার মাধ্যেমে বিদ্যমান রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানের পথ খুঁজতে আহ্বান জানিয়েছে।