প্রেমের বিয়ের ১০ বছর পর স্ত্রী চলে যাওয়ায় ভারসাম্যহীন যুবক

প্রেমের বিয়ের ১০ বছর পর স্ত্রী চলে যাওয়ায় ভারসাম্যহীন যুবক

ছবিঃ সংগৃহীত।

তিন বছরের প্রেম। এরপর বিয়ে। ১০ বছরের সে সাজানো সংসার ভেঙে স্ত্রী চলে যাওয়ায় মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন সোহেল রানা বিশ্বাস বাবু (৩২)।গত তিন বছর একমাত্র মেয়ের ছবি বুকে নিয়ে সময় কাটে তার।

 

সোহেল রানা বিশ্বাস বাবু গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ওরাকান্দী ইউনিয়নের খাগড়াবাড়ি গ্রামের জিয়াউদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে। মায়ের সঙ্গে তিনি এখন উপজেলার চাপতা গ্রামের মামার বাড়িতে বসবাস করছেন।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্র জানায়, ভালোবেসে ২০০৮ সালে ভোলা সদরের এক তরুণীকে বিয়ে করেন বাবু। ১০ বছর সংসার করার পর ২০১৮ সালে অভাবের অজুহাত দেখিয়ে বাবার বাড়ি চলে চান তার স্ত্রী। সঙ্গে নিয়ে যান আট বছরের মেয়েকেও। বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন বাবু। ডিস্কাইনেসিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তিনি।

তিন বছরের বেশি সময় অন্যের বাড়িতে কাজ করে ও মানুষের কাছ থেকে চেয়ে  ছেলের চিকিৎসা চালিয়েছেন সফিয়া বেগম। সর্বশেষ জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনিস্টিউট হাসপাতাল থেকে দুই মাসের ওষুধ নিয়ে এসেছিলেন তিনি। সে ওষুধও শেষ হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে সুফিয়া বেগম বলেন, অন্যের বাড়িতে কাজ করি। দুজন ঠিক মতো খেতেই পারি না। ছেলের চিকিৎসা করাবো কী দিয়ে? টাকার জন্য ওষুধ কিনতে পারি না। ছেলের চিকিৎসায় বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করছি।

 

আমিনুর নামে বাবুর এক প্রতিবেশী জানান, অন্যের বাড়িতে কাজ করে মা-ছেলের সংসারই চলে না। চিকিৎসাতো দূরের কথা। ভালো চিকিৎসা পেলে হয়তো বাবু আবারও সুস্থ জীবনে ফিরে আসতে পারে।

উপজেলার রাতইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আঞ্জুরুল ইসলাম আঞ্জু বলেন, সোহেল রানা বিশ্বাস বাবুর মাকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করি। তাদের বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদে পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা করা হবে।

 

জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হারুন অর রশীদ বলেন, বাবুর ঘটনাটি শুনে খারাপ লেগেছে। আবেদন করলে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে তার চিকিৎসার জন্য নিয়ম অনুযায়ী সাহায্য করা হবে।

কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে তাকে সর্বোচ্চ সহোযোগিতা করার চেষ্টা করবো।