এভারটনকে ৩-০ গোলে পরাজিত করেছে ইউনাইটেড

এভারটনকে ৩-০ গোলে পরাজিত করেছে ইউনাইটেড

এভারটনকে ৩-০ গোলে পরাজিত করেছে ইউনাইটেড

আলেহান্দ্রো গারাঞ্চোর অসাধারন ওভারহেড কিকে রোববার এভারটনকে ৩-০ গোলে পরাজিত করেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। এই ম্যাচে পরাজিত হওয়ায় টফিসরা রেলিগেশন জোন থেকে উপরে উঠতে ব্যর্থ হয়েছে।আর্থিক অনিয়মের কারনে ১০ পয়েন্ট কেটে নেবার পর এটাই ছিল এভারটনের প্রথম ম্যাচ। গুডিসন পার্কে স্বাগতিক সমর্থকদের সামনে কোনদিক থেকে তারা ইউনাইটেডকে প্রতিরোধ গড়তে পারেনি। এসময় গ্যালারিতে হাজারো সমর্থকের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘প্রিমিয়ার লিগ দূর্নীতিগ্রস্থ’। 

ম্যাচ শুরুর মাত্র তিন মিনিটের মধ্যে গারাঞ্চো সবাইকে থামিয়ে দেন। প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে অনত্যম সেরা গোল করে তিনি ইউনাইটেডকে এগিয়ে দেন। ঐ সময়ই বড় জয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছিল ইউনাইটেড। ১৯ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন দিয়েগো ডালটের ক্রস থেকে এভারটন গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ডকে পরাস্ত করেন। ঐ গোলের পর ইউনাইটেডের পারফরমেন্স আরো একবার বড় জয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছিল। কিন্তু প্রথমার্ধে আর কোন গোল হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধে মার্কাস রাশফোর্ডের পেনাল্টি ও এন্থনি মার্শালের গোলে এরিক টেন হাগের দল লিগে শেষ ছয় ম্যাচে পঞ্চম জয় তুলে নেয়। 

ইউনাইটেড বস টেন হাগ বলেছেন, ‘এটা সত্যি একটি দুর্দান্ত গোল ছিল। মৌসুমে এখনো আরো অনেক ম্যাচ বাকি আছে। কিন্তু সম্ভবত এটাই মৌসুমের সেরা গোল হতে যাচ্ছে। আমরা জানি সামনে আমাদের সামনে আরো চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। কিন্তু আমরা সেই চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত।’

এই জয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষে থাকা আর্সেনালের থেকে ছয় পয়েন্ট পিছিয়ে ইউনাইটেড ষষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে। 
এভারটনের উচ্ছসিত সমর্থনের বিপরীতে ইউনাইটেডের এগিয়ে যাওয়া বেশ কঠিন ছিল। বিশেষ করে প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় শাস্তির মুখে পড়া এভারটনকে নিয়ে সমর্থকরা একটু বেশী আগ্রাসী ছিল ।রেলিগেশন নিয়ে টানা দুই মৌসুম লড়াই করার পর সিন ডায়চের দল এবার পারফরমেন্স দিয়ে নিজেদের আবারো ফিরিয়ে আনার ইঙ্গিত দিচ্ছিল। কিন্তু পয়েন্ট কাটার কারনে নতুন করে সমস্যায় পড়েছে টফিসরা। গোল ব্যবধানে তারা তলানির দল বার্নলির থেকে উপড়ে রয়েছে। সেফটি জোন থেকে পাঁচ পয়েন্ট দুরে রয়েছে। 

গারাঞ্চোর বিস্ময়কর গোলে পিছিয়ে থাকার পরও এভারটন বেশ কিছু সুযোগ নষ্ট করেছে। ডোমিনিক কালভার্ট-লুই দুটি হেডের চমৎকার সুযোগ হাতছাড়া করেছেন। টিনএজার কোবি মাইনো ইউনাইটেডের হয়ে প্রথমবারের মত প্রিমিয়ার লিগের মূল দলে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। ডুয়াইট ম্যাকনিলের একটি শট গোল লাইনের উপর থেকে ক্লিয়ার করেন মাইনো। কালভার্ট-লুইনের শটটি আন্দ্রে ওনানা রুখে দেবার পর ফিরতি বলে ম্যাকনিল গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন। আব্দুলায়ে ডুকুরের শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। বিরতির আগে কোনভাবে এভারটন সমতায় ফিরতে পারেনি। 

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ভিএআর’র সহযোগিতায় ইউনাইটেড পেনাল্টি উপহার পেলে স্বাগতিক সমর্থকরা আরো ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। রেফারি জন ব্রুকস ডাইভিংয়ের জন্য প্রথমে মার্শালকে হলুদ কার্ড দেখালেও এ্যাশলে ইয়ংয়ের চ্যালেঞ্জকে শেষ পর্যন্ত অবৈধ বলে সিদ্ধান্ত দেয় ভিএআর। পরে ব্রুকস তার সিদ্ধান্ত বাতিল করেন। ডায়চে বলেছেন, ‘এ বছর ভিএআর সব ম্যাচেই বিতর্কিত হচ্ছে। বিষয়টি সহজ হলেও ক্রমেই তা জটিল আকার ধারণ করছে। কোন কারন ছাড়াই ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়া একটি দলকে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে দেয়।’

স্টপ কিক নিতে ব্রুনো ফার্নান্দেস রাশফোর্ডের ঘাড়ে দায়িত্ব ছেড়ে দেন। পেনাল্টি থেকে কোন ভুল করেননি রাশফোর্ড। সেপ্টেম্বরের পর ইউনাইটেডের হয়ে এটি রাশফোর্ডের প্রথম গোল। ইনজুরিতে থাকা রাসমাস হোলান্ডের অনুপস্থিতিতে মূল দলে সুযোগ পান মার্শাল। ৭৫ মিনিটে ঠান্ডা মাথায় ফিনিশিংয়ে তিনি দলের হয়ে তৃতীয় গোলটি করেন। এর মাধ্যমে এখন পর্যন্ত লিগে সবচেয়ে বড় জয় নিশ্চিত করে ইউনাইটেড। 

সূত্র : বাসস