অবহেলায় করোনা সংক্রমণের বিস্তার ঘটেছে : নজরুল ইসলাম

অবহেলায় করোনা সংক্রমণের বিস্তার ঘটেছে : নজরুল ইসলাম

ফাইল ফটো

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে শীর্ষ নেতারা মতৈক্যে পৌঁছে বলেছেন, করোনা মহামারিতে আক্রান্তদের সংখ্যা নিরূপণে সমন্বয়হীনতা, পর্যাপ্ত সংখ্যক সম্ভাব্য আক্রান্তদের টেস্ট সুবিধা প্রদান, যথাসময়ে সুচিকিৎসা প্রদান, ডাক্তার, নার্স, টেকনিশিয়ানদের যথাসময়ে প্রশিক্ষণ না দেয়া এবং সর্বোপরি প্রথম থেকেই দেশের সব সরকারী-বেসরকারী হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্রে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার সুযোগ সৃষ্টিতে সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব ও অবহেলার কারণে মহামারি করোনা বিস্তার লাভ করেছে। করোনার বিস্তার রোধে সরকারী কর্মপরিকল্পনার ক্ষমাহীন দুর্বলতায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে যতদূত সম্ভব এসব নিরসনে জাতীয় উদ্যোগ গ্রহণের তাগিদ দেন জোটের নেতারা।

সোমবার দুপুরে জোটের সমন্বয়ক ও বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এসব কথা বলেন। এর আগে রোববার বেলা ১১টা থেকে সোয়া ২টা পর্যন্ত ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের (তালিকা সংযুক্ত) ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা-পর্যালোচনা করে বেশকিছু প্রস্তাব ও সিদ্ধান্তবলী সর্বসম্মতিক্রমে গৃহিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে নজরুল ইসলাম খান বলেন, সভায় করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসক, চিকিৎসাকর্মী, সেনাবাহিনী ও আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং এই মহামারীতে দেশের যে সব রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিশিষ্ট নাগরিকগণ ও সাধারণ মানুষ শাহাদাৎ বরণ করেছেন তাদের জন্য গভীর শোক প্রকাশ করে রুহের মাগফেরাত কামনা ও পরিবার পরিজনদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়। উপযুক্ত ও পর্যাপ্ত সুরক্ষা সরঞ্জাম এবং যথোপযুক্ত ও সময়োচিত চিকিৎসা সেবার অভাবে অনেকের মৃত্যুর যেসব খবর পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে তাতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব দুর্বলতা দূর করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।

তিনি বলেন, ২০ দল মনে করে যে, বিদ্যমান সঙ্কট নিরসনে দেশের সব রাজনৈতিক দল, শ্রেণি পেশার সংগঠন, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সম্মিলিত ও সক্রিয় প্রয়াসই শুধু দেশবাসীকে ক্রমবর্দ্ধমান মহামারির ভয়াল প্রকোপ থেকে বাঁচাতে পারে। সরকারে মন্ত্রী, আমলা ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বাগাড়ম্বর করোনা প্রতিরোধে কোনো ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেনি বরং মহামারি বিস্তারে সহযোগীতা করেছে। জনগণকে বিভ্রান্ত করেছে এবং তাদের রোগ প্রতিরোধে অমনোযোগী করে তাদের জীবন-জীবিকা হুমকরি মুখে ঠেলে দিয়েছে।

২০ দলের সমন্বয়ক বলেন, বিরোধী রাজনৈতিক দলসমূহ, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিশেষজ্ঞদের মতামত এবং মহামারী নিয়ন্ত্রণে সফল অভিজ্ঞতা যথাসময়ে আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করা হলে পরিস্থিতি ক্রমাবনতি রোধ করা সম্ভব হতো বলেও ২০ দল মনে করে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের টেষ্টিং কিট নিয়ে অহেতুক সময় ক্ষেপন, বিদেশ থেকে নিম্নমানের কিট, মাস্ক, পিপিইসহ সুরক্ষা সামগ্রী আমদানিতে সীমাহীন দুর্নীতি এবং নিম্নমানের সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহারে অসংখ্য রোগী এবং ফ্রন্টলাইন স্বাস্থ্য সেবীদের বহুজনের মৃত্যুর কারণ বলে জানা গেছে। এটা শুধু দুর্ভাগ্যজনক নয়, ক্ষমাহীন অপরাধ, যার তদন্ত ও শাস্তি হওয়া দরকার বলে ২০ দল দাবি করে।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ২০ দল সারা বিশ্বের অভিজ্ঞতার আলোকে বিলম্বে বাস্তবায়ন সম্ভব এমন সব মেগা প্রকল্প স্থগিত করে সেই অর্থে করোনা সঙ্কট মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের এবং যতদূত সম্ভব উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত দৈনিক কমপক্ষে ৬০ হাজার কোভিড টেস্ট, মালিকানা নির্বিশেষে সব হাসপাতাল, ক্লিনিক ও চিকিৎসা কেন্দ্র আইসিইউ, ভেল্টিলেশন, আইসোলেশন ও পর্যাপ্ত ওষুধ, প্রশিক্ষিত ডাক্তার, নার্স, টেকনিশিয়ান, স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগের মাধ্যমে করোনা চিকিৎসার উপযোগী করার জোর দাবি জানাচ্ছে।