নোয়াখালী হানাদার মুক্ত দিবস আজ

নোয়াখালী হানাদার মুক্ত দিবস আজ

ছবি: সংগৃহীত

নোয়াখালী পাক হানাদার মুক্ত দিবস আজ। ১৯৭১ এর এইদিনে মুক্তিসেনারা জেলা শহর মাইজদীর পিটিআইতে রাজাকারদের সর্বশেষ ও প্রধান ঘাঁটির পতন ঘটিয়ে নোয়াখালীর মাটিতে স্বাধীন বাংলাদেশের বিজয় কেতন উড়িয়েছিলেন।

মুক্তিযোদ্ধারা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর এক মাসেরও বেশি সময় ধরে নোয়াখালীকে মুক্ত রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। বহু বাধা অতিক্রম করে পাকিস্তানি সেনারা ২৩ এপ্রিল নোয়াখালী দখলে নেয়। চালাতে থাকে জেলা সদরের সোনাপুর-শ্রীপুর, রামহরিতালুক, বেগমগঞ্জের কুরিপাড়া, গোপালপুরসহ বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট। এ সময় হানাদাররা গুলি করে ও পুড়িয়ে হত্যা করে দেড় শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশুকে।

কোম্পনীগঞ্জের বামনী, তালমাহমুদের হাট, ১২ নম্বর সুইচ গেইট, সদরের ওদারহাট, করমবক্স বাজার, বেগমগঞ্জের ফেনাকাটা পুল, রাজগঞ্জ, বগাদিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা।

নভেম্বর মাস থেকে মুক্তিসেনারা ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। মুক্তিসেনাদের প্রবল আক্রমণের মুখে টিকতে না পেরে ৬ ডিসেম্বর গভীর রাত থেকে বিভিন্ন ক্যাম্প ছেড়ে পালিয়ে যেতে থাকে পাক আর্মি ও মিলিশিয়ারা।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মিয়া মো. শাহজাহান জানান, ৭ ডিসেম্বর বেগমগঞ্জ টেকনিক্যাল হাই স্কুলের রাজাকার ক্যাম্প, মাইজদী কোর্ট স্টেশন, জিলা স্কুল, দত্তের হাটের নাহার মঞ্জিল রাজাকার ক্যাম্প মুক্তি বাহিনীর আক্রমণের চাপে একে একে আত্মসমর্পণ শুরু করে। এরপর পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের প্রধান ঘাটি প্রাইমারি ট্রেনিং ইনিস্টিটিউট-পিটিআইসহ শহরে আক্রমণ করে মুক্তিযোদ্ধারা। এ আক্রমণে বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স-বিএলএফ’র বৃহত্তর নোয়াখালীর অধিনায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত মাহমুদুর রহমান বেলায়েতের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা প্রাণপন যুদ্ধ করে। সকলের সম্মিলিত চেষ্টায় সন্ধ্যার আগেই নোয়াখালীকে পাক হানাদার মুক্ত করে।

৭ ডিসেম্বর নোয়াখালী মুক্ত দিবস প্রতি বছরের ন্যায় এবারও নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে উদ্যাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে পিটিআই সংলগ্ন মুক্তমঞ্চের বেদিতে পুস্পস্তবক অর্পণ, পরে বিজয় শোভাযাত্রা, জাতিয় পতাকা উত্তোলন ও সন্ধ্যায় বিজয় মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।