৪৫ ভরি স্বর্ণের দাম ২ লাখ টাকা দেখালেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী

৪৫ ভরি স্বর্ণের দাম ২ লাখ টাকা দেখালেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী

ছবিঃ সংগৃহীত।

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-২ (ইসলামপুর) আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান দুলাল নির্বাচনী হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।

তার এবং তার স্ত্রীর মোট ৪৫ ভরি স্বর্ণ রয়েছে, যার মূল্য ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। এরমধ্যে স্ত্রীর ৩০ ভরি স্বর্ণ ও ১৫ ভরি স্বর্ণ ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর। স্ত্রীর স্বর্ণের মূল্য দেখিয়েছেন ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং প্রতিমন্ত্রীর স্বর্ণের মূল্য দেখিয়েছেন ৬৫ হাজার টাকা।

 

এছাড়া ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর বার্ষিক আয় গত ১০ বছরে ৩ গুণ হলেও অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে প্রায় ১২ গুণ। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় বার্ষিক আয় ছিল ২১ লাখ ১০ হাজার ৫৭৮ টাকা, আর অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল ৩৯ লাখ ৭৬ হাজার ৪৬১ টাকা। দশম ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

 

দ্বাদশ জতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বার্ষিক আয় ৬৫ লাখ ৭১ হাজার ৬৩৮ টাকা ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছেন ৪ কোটি ৭১ লাখ ৫১ হাজার ৫১২ টাকা। এছাড়া প্রতিমন্ত্রীর স্থাবর সম্পদ না বাড়লেও স্ত্রীর নগদ টাকাসহ অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় ফরিদুল হক উল্লেখ করেন, তার বার্ষিক আয় ছিল ২১ লাখ ১০ হাজার ৫৭৮ টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে আয় হয়েছে ৪৮ হাজার ৪৫০ টাকা, ব্যবসা থেকে ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৬৫০ টাকা, ব্যাংক আমানত ১৬ হাজার ৪৮১ টাকা, এমপি হিসেবে বছরে ভাতা পেয়েছেন ১৪ লাখ ৬ হাজার ১৭৫ টাকা, রেমিটেন্স ৩ লাখ ২ হাজার ৮২২ টাকা।

 

২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় তার বার্ষিক আয় ছিল ৪৫ লাখ ৭২ হাজার ২৪ টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে আয় হয়েছে ৮০ হাজার ১০৪ টাকা, ব্যবসা থেকে আয় ৫ লাখ ৫ হাজার টাকা, ব্যাংক আমানত ৫৪ হাজার ৪৪০ টাকা, মৎস্য খাত থেকে ১৪ লাখ ৯৭ হাজার টাকা ও এমপি হিসেবে বছরে ভাতা পেয়েছেন ২৪ লাখ ৩৫ হাজার ৪৪৪ টাকা।

 

 

গত ২৮ নভেম্বর জেলা নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান আয় দেখিয়েছেন, ৬৫ লাখ ৭১ হাজার ৬৩৮ টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে আয় হয়েছে ১ লাখ ১৭০ টাকা, ব্যবসা থেকে আয় ১৮ লাখ ৯৫ হাজার ২৮০ টাকা, ব্যাংক আমানত ৫ লাখ ৪৩ হাজার ৮৪০ টাকা, মৎস্য খাত থেকে ১৮ লাখ ৮৪ হাজার টাকা ও প্রতিমন্ত্রী হিসেবে বছরে পেয়েছেন ২১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৪৮ টাকা।

 

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমান ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নগদ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা অর্থের পরিমাণ ছিল ১১ লাখ ৪৭ হাজার ৬৬১ টাকা, বন্ড, ঋণপত্র ও বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার ছিল ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার। একটি জিপ গাড়ি ২৪ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ টাকা। ওই সময় ৬৫ হাজার টাকার মূল্যের সোনা, ৮৭ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী, ১ লাখ ১০ হাজার ৫০০ টাকার আসবাবপত্র।

একই সময়ে স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নগদ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা অর্থের পরিমাণ ছিল ৬৯ হাজার ৫০০ টাকা, একটি একটি প্রাইভেটকার ছিল ১৫ লাখ ৩৫ হাজার। তবে ওই সময়ে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার সোনা (৩০ ভরি) এবং ২০ হাজার ৫০০ টাকার আসবাবপত্র ছিল।

 

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমান প্রতিমন্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নগদ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা অর্থের পরিমাণ ছিল ৫৩ লাখ ২২ হাজার ৭৮ টাকা, বন্ড, ঋণপত্র ও বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার ছিল ৫ লাখ টাকার। একটি জিপ গাড়ি ৭০ লাখ টাকা। তবে সোনা বাড়েনি। ৭১ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী, ৬১ হাজার ৪৭০ টাকার আসবাবপত্র।

 

একই সময়ে স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নগদ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা অর্থের পরিমাণ ছিল ২৩ লাখ ৯৬০ টাকা, একটি একটি প্রাইভেটকার ছিল ১৫ লাখ ৩৫ হাজার এবং ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার সোনা (৩০ ভরি)।

 

গত ৩০ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় দেখা যায়, গত দশ বছরের ব্যবধানে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে। এর মধ্যে, নগদ অর্থের পরিমাণ ১ কোটি ২৬ লাখ ৫ হাজার ৫৫৭ টাকা, ব্যবসা বহির্ভূত ১ কোটি ৯৫ লাখ ১২ হাজার ৩৭৯ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা অর্থের পরিমাণ ৮১ লাখ ৪০ হাজার ৮১৩ টাকা। বন্ড, ঋণপত্র ও শেয়ার খাতে ৫ লাখ টাকা দেখিয়েছেন। বর্তমানে ৬১ লাখ ২৭ হাজার ৭৬৩ টাকা দামের গাড়ি রয়েছে। তবে আগের মতো একই পরিমাণ রয়েছে সোনা। ইলেকট্রনিক সামগ্রী ১ লাখ টাকা এবং আসবাবপত্র রয়েছে ১ লাখ টাকা।

একই সময়ে স্ত্রী আফরোজা হকেরও বেড়েছে অস্থাবর সম্পত্তি। এর মধ্যে ব্যবসা খাতে ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ৫০০ টাকা, ব্যবসা বহির্ভূত ২৬ লাখ ২৫ হাজার ৭৭৯ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা অর্থের পরিমাণ ৭৫ লাখ ২৫ হাজার ১১৭ টাকা। গাড়ি ও সোনা আগের মতোই রয়েছে। এ খাতে রয়েছে ১৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।