হন্যে হয়ে নবজাতকদের খাবার খুঁজছেন বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা

হন্যে হয়ে নবজাতকদের খাবার খুঁজছেন বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা

ছবিঃ সংগৃহীত।

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ থেকে আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।সেখানে খাবার, পানি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য তীব্র হাহাকার চলছে। এর মধ্যেই সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুদের জন্য যেন এই সংকট আরও মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। পৃথিবীর আলো দেখতে না দেখতেই যুদ্ধের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাদের।

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফা শহরে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যেই যেসব শিশুর জন্ম হচ্ছে তাদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন স্বজনরা। এসব নবজাতক শিশুর খাবারের ব্যবস্থা করতে রীতিমত পরিবারগুলোকে লড়াই করতে হচ্ছে। ক্রমাগত বোমাবর্ষণের কারণে সেখানে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়াও সম্ভব হচ্ছে না। ফলে অর্ধেকের বেশি মানুষই তীব্র খাদ্য সংকটে দিন কাটাচ্ছে।

 

এর আগে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল যে, গাজার অর্ধেকের বেশি মানুষই এখন মাত্র এক বেলা কোনো রকমে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে।

সেখানে নবজাতক শিশুদের জন্য ডায়াপার বা দুধের দাম এখন আকাশছোঁয়া। ফলে পরিবারগুলো এই শিশুদের প্রয়োজন মেটাতে হিমসিম খাচ্ছে। পানির সংকটের কারণে শিশুদের পরিচ্ছন্নতার বিষয়টিও নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে এসব শিশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিও বাড়ছে।

 

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই প্রতিশোধ হিসেবে গাজায় পাল্টা আক্রমণ চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। গাজায় ইসরায়েলের টানা হামলায় বেশিরভাগ স্থাপনাই ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানে বসবাসের মতো পরিস্থিতি আর নেই বললেই চলে।

হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যকার সংঘাতে এখন পর্যন্ত ১৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।

 

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত আল শিফা হাসপাতাল রক্তগঙ্গায় পরিণত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ওই হাসপাতালে জরুরিভিত্তিতে চিকিৎসা সামগ্রী প্রয়োজন। সংস্থাটি বলছে, তারা গত শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) আল শিফা হাসপাতালে সামান্য কিছু চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু সেখানে খাবার এবং পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

 

সংস্থাটি জানিয়েছে, গাজার অনেক লোকজনই এখন আল শিফা হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছেন। ফলে সেখানকার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের চাহিদা আরও বেড়ে গেছে।

প্রতিদিনই সেখানে প্রচুর রোগী চিকিৎসার জন্য ভিড় করছে। আহত লোকজন মেঝেতে বসে চিকিৎসার জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু তাদের চিকিৎসা দেওয়ার মতো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সেখানে নেই।