জাপানে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩

জাপানে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩

সংগৃহীত

জাপানের মিডিয়ার প্রতিবেদন অনুয়াযী ভূমিকম্পে অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বেশিরভাগ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, জাপানের উত্তর-পশ্চিম উপকূলে ইশিকাওয়া অঞ্চলে। গতকাল সোমবারের ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল এই অঞ্চলটি। স্থানীয় সময় সোমবার বিকেলে জাপান সাগরের উপকূলীয় নতো অঞ্চলের ইশিকাওয়া প্রিফেকচারে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।

এতে প্রথমে ১৫ ফুট উঁচু সুনামির আশঙ্কার কথা বলে উপকূলবর্তী অঞ্চলের লোকজনকে উঁচু স্থানে সরে যেতে বলা হয়। এখন আর কোনো সুনামির সতর্কতা নেই।

নতুন বছরের প্রথম দিন জাপানের মধ্যাঞ্চলে ৭.৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পে অন্তত ৩০টি বাড়ি ধসে পড়েছে এবং রাস্তাঘাটে বড় ফাটল ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

বেশ কয়েকজন ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে। ভূমিকম্পের কারণে প্রথমে বড় ধরনের সুনামি সতর্কতা জারি করা হলেও পরে এর মাত্রা কমানো হয়েছে। জাপানি সামরিক বাহিনী যাদের বাড়ি ছেড়ে যেতে হয়েছে, তাদের জন্য খাবার, পানি এবং কম্বলসরবরাহ করছে। উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারী হাজার হাজার মানুষ উচ্চ ভূমিতে চলে যাওয়ার পরে আশ্রয়কেন্দ্রে রাত কাটিয়েছেন।

আবহাওয়া বিভাগ বলেছে, পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে জাপানে ৩.৪ থেকে ৭.৬ মাত্রার রেকর্ডসংখ্যক অন্তত ৫০টি কম্পন অনুভূত হয়। সামনে আরো ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছিল আবহাওয়া বিভাগ।

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে জাপান খুবই ভূমিকম্পপ্রবণ। সেখানে ছোট ভূমিকম্প প্রায় নৈমিত্তিক ব্যাপার। সুনামির প্রাথমিক সতর্কবার্তায় বলা হয়, কোথাও কোথাও ১৬ ফুট উঁচু ঢেউ সৃষ্টি হতে পারে।

এর কিছু সময় পর ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের আশপাশের এলাকা বিশেষ করে ইশিকাওয়া, নিগাতা ও তোইয়ামা প্রিফেকচারে ‘বড় সুনামি সতর্কতা’ সরিয়ে ‘সুনামি সতর্কতা’ জারি করা হয়। তখনো প্রায় ১০ ফুট উঁচু ঢেউয়ের আশঙ্কা ছিল। 

২০১১ সালের ফুকুশিমা বিপর্যয়ের বছরের পর থেকে বড় সুনামি সতর্কতা ছিল এটাই প্রথম। আর নতো অঞ্চলে রেকর্ড রাখা শুরু হওয়ার পর থেকে এটাই সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প। সরকারের মুখপাত্র ইয়োসিমাশা হায়াশি বলেছেন, ধসে পড়া ভবনের নিচে অন্তত ছয়জনের আটকে পড়ার খবর মিলেছে। এ ছাড়া ইশিকাওয়া এলাকায় একটি বিশাল অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের আশপাশের তোইয়ামা, ইশিকাওয়া ও নিগাতা প্রিফেকচারে প্রায় ৩৩ হাজার ৫০০ বসতঘর বিদ্যুত্হীন হয়ে পড়েছে। ইশিকাওয়ার ওয়াজিমা সিটি ফায়ার ডিপার্টমেন্ট বলেছে, তারা অন্তত ৩০টি ভবন ধসে পড়ার খবর পেয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, ভূমিকম্পের জেরে সংশ্লিষ্ট এলাকার বুলেট ট্রেনের যাত্রা স্থগিত করা হয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার পারমাণবিক স্থাপনায় কোনো অস্বাভাবিকতার খবর পায়নি দেশটির পরমাণু নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ। 

সূত্র : বিবিসি, এএফপি