কালেমা তাইয়্যেবার গুরুত্ব, তাৎপর্য ও ফজিলত

কালেমা তাইয়্যেবার গুরুত্ব, তাৎপর্য ও ফজিলত

প্রতিকী ছবি

মহান আল্লাহর একত্ববাদের নাম তাওহিদ। তাওহিদের মূল বাক্য ‌‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’। এই কালিমা অন্তরে বিশ্বাস করা, মুখে স্বীকার করা এবং বাহ্যিক আমল করার মাধ্যমে ঈমান পূর্ণ হয়। ঈমানদার ব্যক্তি সফল হয় দুনিয়া ও আখিরাতে।

কোরআন-হাদিসে কালেমা তাইয়্যেবার প্রসঙ্গ গুরুত্বের সঙ্গে বর্ণিত হয়েছে। সংক্ষেপে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো :

কোরআনে কালেমা তাইয়্যেবা

কালেমা তাইয়্যেবার দুটি অংশ। প্রথম অংশটি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ সুরা সাফফাতের ৩৫ নম্বর আয়াতে এবং দ্বিতীয় অংশ ‘মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ সুরা ফাতহের ২৯ নম্বর আয়াতে বিদ্যমান। সুরা ইব্রাহিমের ২৭ নম্বর আয়াতে কালেমা তাইয়্যেবার কথা বলা হয়েছে।

বারা ইবনে আজিব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, কবরে মুসলমান ব্যক্তিকে যখন প্রশ্ন করা হবে তখন সে সাক্ষ্য দেবে, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’। আল্লাহর বাণীতে এর প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। (বুখারি, হাদিস : ৪৩৪২)

হাদিসে কালেমা তাইয়্যেবা

অনেক হাদিসে কালেমা তাইয়্যেবার গুরুত্ব, তাৎপর্য ও ফজিলত বয়ান করা হয়েছে। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, মিরাজকালে আমি জান্নাতে প্রবেশের সময় এর দুই পাশে দেখি তিনটি লাইনে স্বর্ণাক্ষরে লেখা।

এক. লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ। দুই .আমরা যে ভালো কর্ম পেশ করেছি তা পেয়েছি। যা খেয়েছি তা থেকে উপকৃত হয়েছি। যা ছেড়ে এসেছি তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তিন. উম্মত হলো গুনাহগার আর রব হলো ক্ষমাশীল।

(জামেউস সগীর, হাদিস : ৪১৮৬)

রাসুল (সা.)-এর আংটির মধ্যেও কালেমা তাইয়্যেবা লেখা ছিল।

কালেমা তাইয়্যেবার শ্রেষ্ঠত্ব

ঈমান সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস। ঈমানের অর্থজ্ঞাপক এই কালেমা তাইয়্যেবার ওজন সাত আসমান-জমিনের চেয়ে বেশি। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, একবার মুসা (আ.) বলেন, হে আমার রব! আমাকে এমন একটি বাক্য বলে দিন যা দ্বারা আমি আপনার জিকির করতে পারি অথবা বলেছেন তার দ্বারা আপনার কাছে দোয়া করতে পারি। আল্লাহ বলেন, হে মুসা! তুমি বলবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। তখন মুসা (আ.) বলেন, হে আমার রব! আপনার সব বান্দা তো এটি বলে থাকে, আমি আপনার কাছে এমন কিছু চাচ্ছি যা খাস করে আমাকেই বলবেন। তখন আল্লাহ বললেন, হে মুসা! যদি সাত আসমান ও আমি ভিন্ন তার সমস্ত অধিবাসী এবং সাত জমিন এক পাল্লায় রাখা হয়, আর ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এক পাল্লায় রাখা হয়। তাহলে নিশ্চিত ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর পাল্লা ভারী হবে। (শরহুস সুন্নাহ, হাদিস : ১২৭৩;  মুস্তাদরাক হাকেম, হাদিস : ১৯৭২)

কালেমা তাইয়্যেবার ফজিলত

কালেমা তাইয়্যেবা নিয়মিত পাঠের মাধ্যমে নবীর শাফায়াত লাভ করা যায়। কালেমা তাইয়্যেবা পড়তে পড়তে ইন্তেকাল হলে মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে জান্নাত । মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, যার শেষ কথা হবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মুস্তাদরাক হাকেম, হাদিস : ১৮৭৮)

আল্লাহ তাআলা সবাইকে বেশি বেশি করে কালেমা তাইয়্যেবা পাঠ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।