শেখ হাসিনাকে নরেন্দ্র মোদীর ফোন
ফাইল ছবি
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করায় দলটির সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোনে অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সোমবার (৮ জানুয়ারি) মোদী বিকেলে নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে এক পোষ্টে এ অভিনন্দন জানানোর ব্যাপারটি জানিয়েছেন।
তিনি লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে কথা বললাম এবং সংসদ নির্বাচনে টানা চতুর্থবারের মতো ঐতিহাসিক বিজয় অর্জন করায় তাকে অভিনন্দন জানালাম।
এর বাইরে চীন, রাশিয়া, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তানসহ আরও ১০টি দেশের রাষ্ট্রদূতরা শেখ হাসিনার সাথে দেখা করে সোমবার অভিনন্দন জানিয়েছেন।
সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পশ্চিমা কোনও দেশের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাতে দেখা যায়নি। তবে, কানাডা জানিয়েছে যে বাংলাদেশের নির্বাচনে তারা কোনও পর্যবেক্ষক পাঠায়নি।
মোদী তার এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে বলেছেন, "প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে কথা বললাম এবং সংসদ নির্বাচনে টানা চতুর্থবারের মতো ঐতিহাসিক বিজয় অর্জন করায় তাকে অভিনন্দন জানালাম। সফলভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বাংলাদেশের জনগণকেও অভিনন্দন জানিয়েছেন মোদী।
“আমরা বাংলাদেশের সাথে আমাদের স্থায়ী ও জন-কেন্দ্রিক অংশীদারিত্বকে আরও জোরদার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ”, লিখেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে, সোমবার সকালে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করতে গণভবনে যান। নির্বাচনে জয়লাভ করায় শেখ হাসিনাকে ভারত সরকার ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পক্ষ থেকে 'উষ্ণ অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা' জানান তিনি।
শেখ হাসিনা সরকারের নতুন মেয়াদে ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক আরও সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী হবে বলেও এসময় আশা প্রকাশ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের এই রাষ্ট্রদূত।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়লাভের পর সোমবারই ভারত ছাড়া আরো যেসব দেশ শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে তারা হল- চীন, রাশিয়া, পাকিস্তান, নেপাল, ব্রাজিল, মরক্কো, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, ভুটান এবং ফিলিপিন্স।
সোমবার সকালে গণভবনে শেখ হাসিনার সাথে দেখা করে এসব দেশের রাষ্ট্রদূতেরা তাদের নিজ নিজ দেশের ‘অভিনন্দন বার্তা’ পৌঁছে দেন।
অন্যদিকে, বাংলাদেশে অবস্থিত চীনা দূতাবাস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে যে, ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সোমবার গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন।
এসময় চীনের নেতাদের পক্ষে থেকে শেখ হাসিনাকে 'উষ্ণ অভিনন্দন ও শুভকামনা বার্তা’ পৌঁছে দেন তিনি।
শেখ হাসিনার সাথে আলোচনার সময় রাষ্ট্রদূত ইয়াও তাকে আশ্বাস দেন যে, "বাংলাদেশের আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে চীন সবসময় সবচেয়ে 'বিশ্বস্ত সহযোগী ও বাংলাদেশের নির্ভরযোগ্য বন্ধু' হিসেবে ভূমিকা রাখবে"।
মি. ইয়াও আরও বলেন যে, "বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা-সহ যে কোন বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে" বাংলাদেশকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করবে চীন।
এছাড়া অভ্যন্তরীণ ঐক্য ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিষয়ে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনে বাংলাদেশকে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত।
প্রায় কাছাকাছি সময়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার ভিকেন্তিয়েভিচ মান্টিটাস্কিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে গণভবনে দেখা করে অভিনন্দন জানান।
আওয়ামী লীগ সংসদ নির্বাচনে সংখাগরিষ্ঠতা অর্জন করায় শেখ হাসিনার সাথে দেখা করে অভিনন্দন জানিয়েছেন পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ, নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারী এবং শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার ধর্মপাল ওয়েরাক্কোদি।
এছাড়া, ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কুয়েনসিল, ফিলিপিন্সের রাষ্ট্রদূত লিও টিটো এল. আউসান জুনিয়র, ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত পাউলো ফার্নান্দো ডায়াস ফেরেস, মরক্কোর রাষ্ট্রদূত মোহামেদ সাগরোচনি এবং সিঙ্গাপুর কনস্যুলেটের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স শিলা পিল্লাইও শেখ হাসিনার সাথে দেখা করে অভিনন্দন জানান।
চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করে অভিনন্দন জানান
আওয়ামী লীগ বিজয়ী হওয়ায় ৮ই জানুয়ারি সকালে শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার ভিকেন্তিয়েভিচ মান্টিটাস্কি
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয় পেয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
নির্বাচনে গড়ে ৪১.৮% ভোট পড়েছে বলে মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
অন্যদিকে, এই নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ বলে আখ্যায়িত করেছে নির্বাচনে অংশ না নেওয়া অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। এছাড়া ভোট কারচুপি এবং অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের মিত্র জাতীয় পার্টিও।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের ৪৪টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে এবারের নির্বাচনে অংশ নিয়েছে মাত্র ২৭টি দল।
যদিও সব দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে শুরু থেকেই তাগিদ দিয়ে আসছিলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা দেশগুলো।