লক্ষ্মীপুরে সয়াবিন উৎপাদন বিষয়ক কৃষক প্রশিক্ষণ

লক্ষ্মীপুরে সয়াবিন উৎপাদন বিষয়ক কৃষক প্রশিক্ষণ

ছবিঃ সংগৃহিত।

উপকূলীয় এলাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবে সয়াবিন চাষে ক্ষতির শিকার হন চাষিরা। স্বল্প সময়ে অধিক উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিইউ সয়াবিন-৩, ২ ও বিইউ-৪ জাতের সয়াবিন চাষের বিকল্প নেই। এতে কম সময় ও কম খরচে উচ্চফলন পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন বক্তারা।

সোমবার জেলার কমলনগর উপজেলা পরিষদের হলরুমে দিনব্যাপী আয়োজিত সয়াবিন উৎপাদন বিষয়ক কৃষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান তারা। পাথওয়ে টু প্রোসপারিটি (পি২পি) প্রকল্পের আওতায় উত্তম কৃষি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সয়াবিন উৎপাদন বিষয়ক এ কৃষক প্রশিক্ষণের আয়োজন করেন নেদারল্যান্ড ভিত্তিক এনজিও প্রতিষ্ঠান ‘সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া’।

বক্তারা জানান, জেলার রামগতি, কমলনগর, সদর ও রায়পুর উপজেলা মেঘনা নদীর উপকূলীয় অঞ্চল হওয়ায় দুর্যোগ ও জলোচ্ছ্বাসের প্রভাব থাকে। তাই এ অঞ্চলে দুর্যোগ এড়িয়ে স্বল্পমেয়াদি ও উন্নত জাতের সয়াবিন উৎপাদন করলে কৃষকরাও অধিক লাভবান হবে। জানুয়ারিতে সয়াবিন আবাদ করলে মে মাসের বৃষ্টির আগেই সয়াবিন ঘরে তুলতে পারবে কৃষক। আবার বর্ষা শেষে পুনরায় সয়াবিন আবাদ করতে পারবে। এতে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে কৃষক।

চলতি বছর বিইউ সয়াবিন-৪ কৃষকদের জন্য অবমুক্ত করা হয়েছে। সয়াবিনটি সাইজে অন্যান্য জাতের তুলনায় অধিক বড়। ইতিমধ্যে কৃষকরা বীজের জন্য সয়াবিনটির উৎপাদনও করেছে, যা চলতি মৌসুমে আবাদ করবে। সোহাগ বা অন্য জাতের সয়াবিন উৎপাদনে ১২০ দিন লাগলেও বিইউ-২, ৩ ও ৪ জাতের সয়াবিন আরও কম সময়ে ঘরে তোলা যায়।

তারা আরও জানান, এক সময় সয়াবিন চাষিরা সোহাগ জাতের সয়াবিনের চাষ করতো। এতে হেক্টর প্রতি ৯০০ কেজি হারে সয়াবিন উৎপাদন হতে। বর্তমানে উন্নত জাতের বিইউ সয়াবিন-১, ২, ৩, ৪, বারি ও বিনা সয়াবিন-৫, ৬ প্রত্যেকটি জাতের সয়াবিন উৎপাদনে ২ টনেরও অধিক সয়াবিন উৎপাদন হয়। একই খরচ, শ্রম ও স্বল্প সময়ে অধিক উৎপাদন হলে কেন কৃষকরা পূর্বের ন্যায় সোহাগ জাতের সয়াবিন চাষ করবে। তাই উচ্চফলনশীল জাতের সয়াবিন উৎপাদনে কৃষকদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

আয়োজিত কৃষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. জাকির হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুচিত্র রঞ্জন দাস, কমলনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহীন রানা, সলিডারিডার নেটওয়ার্ক এশিয়ার নোয়াখালী-লক্ষ্মীপুরের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার কৃষিবিদ ফরহাদ হোসেন। এতে উপস্থিত ছিলেন সয়াবিন উৎপাদনকারী কৃষকরা।