ইরাক-সিরিয়ায় বিভিন্ন স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইরানের

ইরাক-সিরিয়ায় বিভিন্ন স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইরানের

ছবি: সংগৃহীত

ইরাক ও সিরিয়ায় বিভিন্ন ‘সন্ত্রাসী স্থাপনায়’ ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইরান। সোমবার (১৫ জানুয়ারি) গভীর রাতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে এই হামলা চালায় ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি)।

হামলার লক্ষ্যবস্তু স্থানগুলোর মধ্যে ইসরায়েলের ‘গোয়েন্দা সদরদপ্তর’ রয়েছে বলেও জানিয়েছে ইরান। মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) এক বিবৃতিতে বলেছে, ইরান সোমবার গভীর রাতে সিরিয়া ও ইরাকে ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর’ বিভিন্ন অবস্থানে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে ব্যাপক হামলা করেছে।

আইআরজিসি বলেছে, সিরিয়া ও ইরাকে একটি ‘গোয়েন্দা সদর দপ্তর’ এবং ‘ইরান-বিরোধী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সমাবেশ’ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এই মাসের শুরুতে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর কেরমানে জোড়া বোমা হামলা এবং গত বছরের ডিসেম্বরে সিস্তান-বেলুচেস্তান প্রদেশের একটি পুলিশ স্টেশনে হামলার ঘটনায় ইরান-বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর ‘সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী অপরাধের’ জবাবে এই হামলা চালানো হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, কেরমান ও রাস্কে সাম্প্রতিক হামলার সাথে জড়িত ‘কমান্ডার এবং প্রধান উপাদান’ সিরিয়ায় চিহ্নিত করা হয়েছে এবং সোমবার গভীর রাতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে সেগুলো লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, কেরমানে চলতি মাসের শুরুতে বড় সমাবেশে বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ৯৩ জন নিহত হন। ইরানের সাবেক শীর্ষ সামরিক কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলেইমানির মৃত্যুর চতুর্থ বার্ষিকীতে ওই হামলার ঘটনা ঘটে।

এর আগে গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে পাকিস্তান সীমান্তবর্তী দক্ষিণ-পশ্চিম সিস্তান-বেলুচেস্তান প্রদেশের রাস্ক শহরের একটি পুলিশ স্টেশনে হামলার পর অন্তত ১১ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়।

আনাদোলু বলছে, গত রোববার ইরানের পুলিশ প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমাদ রেজা রাদান গত ডিসেম্বরের রাস্ক হামলার অপরাধীদের গ্রেপ্তারের ঘোষণা দেন। এছাড়া কেরমান হামলায় প্রধান অভিযুক্ত দুই তাজিক নাগরিককেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বিবৃতির অন্য অংশে আইআরজিসি আরও বলেছে, তারা ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলে ইসরায়েলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের সদর দপ্তরকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে এবং এটিকে ‘ধ্বংস’ করে দিয়েছে।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই অবকাঠামোটি ‘গুপ্তচরবৃত্তি কার্যক্রমের বিকাশ এবং এই অঞ্চল ও ইরানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নকশার কেন্দ্র’ ছিল।

গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইরবিলে মার্কিন কনস্যুলেটের আশপাশে হামলাগুলো হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

গাজায় ইসরায়েলের এই যুদ্ধ এবং ইরান সমর্থিত হুথিদের লোহিত সাগরে জাহাজগুলোতে একের পর এক হামলাসহ আঞ্চলিক উত্তেজনার পাশাপাশি ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেও উত্তেজনা বিরাজ করছে।