জাবির হলে আয়েশি জীবন অছাত্রদের

জাবির হলে আয়েশি জীবন অছাত্রদের

ফাইল ছবি

আবাসিক হলে আসন সংকটের দোহাই দিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের (৫২তম ব্যাচ) স্নাতক প্রথম বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের ক্লাস অনলাইনে নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে প্রায় আড়াই হাজারের বেশি অছাত্র অবৈধভাবে অবস্থান করছেন। তাদের বেশির ভাগই ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এদের মধ্যে কেউ কেউ চারজনের নির্ধারিত একেকটি কক্ষ দখল করে থাকেন।

রেজিস্ট্রার অফিসের তথ্যমতে, জাবিতে বর্তমানে ২১টি আবাসিক হল রয়েছে। এর মধ্যে চারটি এখনো চালু করা হয়নি। সেগুলো চালু হলে আসন সংখ্যা দাঁড়াবে ১৪ হাজার ৩৬২টি। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত মোট ১২ হাজার ৫৩৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। তারপরও আবাসিক সংকটের কারণ দেখিয়ে ৫২ ব্যাচের ক্লাস অনলাইনে নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। 

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ, চারুকলা বিভাগ এবং ফার্মেসি বিভাগ ছাড়া বাকিগুলোতে ৪৫ ও ৪৬তম ব্যাচের স্নাতকোত্তর পরীক্ষা শেষ হয়েছে। তবে এখনো ৪৩, ৪৪, ৪৫ ও ৪৬তম ব্যাচের প্রায় আড়াই হাজারের বেশি শিক্ষার্থী হলে অবস্থান করছেন। তাদের কেউ কেউ চারজনের জন্য নির্ধারিত একটি কক্ষে দুজন, দুজনের কক্ষে একজন করে থাকছেন। কোনো কোনো হলে চারজনের কক্ষে একজন করে থাকেন। অবৈধভাবে অবস্থান করা এসব শিক্ষার্থীর চাপ পড়ছে বৈধ শিক্ষার্থীদের ওপর। যার পরিপ্রেক্ষিতে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের জায়গা হয়েছে গণরুমে। এক কক্ষের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গাদাগাদি করে থাকছেন ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী। এতে পড়াশোনাসহ স্বাভাবিক জীবনযাপনে ব্যাঘাত ঘটছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

সশরীরে ক্লাস না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ৫২তম বাচের শিক্ষার্থী তজবীর সরদার বলেন, ধীরগতির ইন্টারনেটের কারণে অনলাইনে ঠিকমতো ক্লাস না করতে পারাসহ নানা জটিলতার মুখোমুখি হচ্ছি। এতে ঠিকমতো পাঠ নিতে পারি না। অনেক বিষয় বুঝতে পারি না। আমরা চাই, অতি দ্রুত সশরীরে ক্লাস শুরু করা হোক। 

এদিকে, আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের (৫৩ ব্যাচ) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠানের কথা জানিয়েছে জাবি কর্তৃপক্ষ। তবে সোমবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে ৫৩ ব্যাচের ভর্তি পরীক্ষার আগে ৫২ ব্যাচের সশরীরে ক্লাস শুরুর দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে তারা অতি দ্রুত চালু না হওয়া হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের ওঠানোর দাবিও জানান। 

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দ্রুত সময়ে নতুন হল চালু করে ৫২ ব্যাচের সশরীরে ক্লাস নেওয়া হবে। আর অবৈধ শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের জন্য ব্যবস্থা নিতে হল প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।