খুলনায় তরুণী ধর্ষণ ও অপহরণের ঘটনা উল্টো মোড় নিয়েছে

খুলনায় তরুণী ধর্ষণ ও অপহরণের ঘটনা উল্টো মোড় নিয়েছে

প্রতীকী ছবি

খুলনায় তরুণীকে ধর্ষণ এবং হাসপাতালের সামনে থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা উল্টো মোড় নিয়েছে। অপহরণের অভিযোগ করার ছয় ঘণ্টা পর একই মাইক্রোবাসে করে খুলনার সোনাডাঙ্গা থানায় হাজির হয় সেই তরুণী ও তার মা। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের পর গণমাধ্যমের কাছে তিনি জানান, তাকে ধর্ষণ বা অপহরণ করা হয়নি। কোনো অভিযোগ না থাকায়, পুলিশ সবাইকে ছেড়ে দিয়েছে। রাত ১২টায় ডুমুরিয়ার নিজ বাড়িতে ফিরে যায় তারা।

এর আগে শনিবার রাতে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন ওই তরুণী। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে অনেক দিন ধরে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ছিল তার।

শনিবার রাত সোয়া ১১টায় ওই তরুণী খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি হন। রোববার বিকেল সাড়ে ৫টায় নিজে ছাড়পত্র নিতে চান। ছাড়পত্র দেয়া হলে হাসপাতালের ওসিসির সামনে থেকে ফিল্মি স্টাইলে তাকে ও তার মাকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

এরপর ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয় ডুমুরিয়া উপজেলার রুদাঘরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদু্জ্জামান। তিনি ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদের চাচাতো ভাই। এ ঘটনায় সারাদেশে তোলপাড় তৈরি হলে তৎপর হয় পুলিশ।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তুলে নেয়ার পর ওই তরুণী ও তার মাকে কেশবপুর উপজেলায় তাদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত সাড়ে ১০টায় সেই মাইক্রোবাসে করে তারা থানায় উপস্থিত হন। থানায় পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের সাথে কথা বলেন।

জিজ্ঞাসাবাদের পর গণমাধ্যমের কাছে তিনি দাবি করেন, ধর্ষণের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তাকে তার ভাই ও আরেক ব্যক্তি খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে নিয়ে ভর্তি করেছিলেন। রোববার বিকেলে সেখান থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর গাড়িতে নিজেই রওনা হন এবং যশোরের কেশবপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে যান। এরপর পুলিশ তাদের খবর দেয়ায় তারা থানায় আসেন।

কেন ওই দু’জন তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে জানতে চাইলে- ওই তরুণী বলেন, অতিরিক্ত প্রশ্ন করলে ‘পাগল’ হয়ে যাবো।

সোনাডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম জানান, জিজ্ঞাসাবাদে ওই তরুণী জানান, ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ তাকে ধর্ষণ করেননি। এ ছাড়া খুমেক হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর তাকে কেউ অপহরণও করেনি।

তিনি আরো জানান, অপহরণের অভিযোগে আটক করা এজাজের চাচাতো ভাই গাজী তৌহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধেও ওই তরুণীর কোনো অভিযোগ নেই। তাকে ছেড়ে দেয়া হবে।

এদিকে এ ঘটনার পর থেকে যুবতীর ভাইয়ের মোবাইল ফোন বন্ধ। অন্যদিকে, উপজেলা চেয়ারম্যান এজাজের মোবাইল ফোনও বন্ধ।