বিশ্ববিদ্যালয় রেখে ভিসির নির্বাচনী কাজে ঢাকায় পাবিপ্রবির শিক্ষক-কর্মকর্তারা

বিশ্ববিদ্যালয় রেখে ভিসির নির্বাচনী কাজে ঢাকায় পাবিপ্রবির শিক্ষক-কর্মকর্তারা

ছবি- নিউজজোন বিডি

 নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন এশিয়াটিক সোসাইটির ২০২৪ সালের নির্বাচনে সহ-সভাপতি পদে নির্বাচন করছেন। মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে এশিয়াটিক সোসাইটি প্রাঙ্গণে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। তবে এইদিন বিশ্ববিদ্যালয় খোলা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নির্বাচন করতে রেজিস্ট্রার,প্রক্টরসহ ঢাকাতে একাধিক শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের দেখে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রারসহ উচ্চ পদস্থ তিন ব্যাক্তির কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে না থাকাতে প্রশাসনিক কাজে ঢিলেমি দেখা গিয়েছে।

 খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপাচার্যের নির্বাচন উপলক্ষে সোমবার (২৯ জানুয়ারি) ক্যাম্পাস ছেড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কে এম সালাহউদ্দিন। উপ-উপাচার্য দুই দিন থেকে ছুটিতে আছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হোসেন রবিবার (২৮ জানুয়ারি) উপাচার্যের নির্বাচনী কাজে ঢাকায় গিয়েছেন।

 রবিবার প্রশাসনিক ভবনে এক কর্মকর্তাকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হত্যার হুমকি দিলেও সেটি সমাধান না করে প্রক্টর ঢাকায় চলে যান। নির্বাচন উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে এশিয়াটিক সোসাইটির প্রাঙ্গণে রেজিস্ট্রার বিজন ব্রহ্ম, ডেপুটি রেজিস্ট্রার কামরুল হাসান, অর্থ ও হিসাব শাখার উপ-পরিচালক শামসাদ ফখরুল, জনসংযোগ দপ্তরের উপ-পরিচালক ফারুক হোসেন চৌধুরী, নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, উপাচার্যের পিএস মনিরুজ্জামানকে দেখা গিয়েছে।

 এ নিয়ে জনসংযোগ দপ্তরের উপ-পরিচালক ফারুক হোসেন চৌধুরীকে ফেইসবুকে ছবি শেয়ার করতে দেখা গিয়েছে। কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় এ নির্বাচনে ভোট চাওয়ার কাজে ব্যস্ত থাকায় গত সপ্তাহ ধরে বেশিরভাগ সময় উপাচার্য হাফিজা খাতুন ক্যাম্পারের বাইরে অবস্থান করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িসহ অন্যন্য সুবিধা ব্যবহার করে তিনি দলবলসহ ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিরা ক্যাম্পাসে উপস্থিত না থাকায় সকল কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।

 তাছাড়া অভিভাবকহীন ক্যাম্পাসে কয়েকটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। গত পরশু শরীরচর্চা দপ্তরের কর্মকর্তা শেখ শাহ জামাল ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে তার দপ্তরে লাঞ্ছিত হয়েছেন। তিনি লিখিত অভিযোগ দিলেও এ নিয়ে এখন কোনো তদন্ত কমিটি গঠিত হয়নি। উপাচার্য ক্যাম্পাসে না থাকায় ফরম পূরণ, পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ, সার্টিফিকেট উত্তোলন সকল কাজে শিক্ষার্থীরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

অর্থ ও হিসাব দপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ভিসি ক্যাম্পাসে না থাকায় শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বেতন বর্তমান মাসের বেতন পর্যন্ত যথাসময়ে না পাওয়া নিয়েও শঙ্কা রয়েছে।’ ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ছাত্র শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘দূর থেকে এসে গত এক সপ্তাহ ঘুরেও সার্টিফিকেট উত্তোলন করতে পারছি না উপাচার্যের স্বাক্ষর না হওয়ার কারণে।’

 এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার বিজন ব্রহ্ম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কাজ ঠিকঠাক মত চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের উপ-পরিচালক ফারুক হোসেন চৌধুরী বলেন, আমি ঢাকায় আসছি ডায়েরির কাজে। আমার ছেলে ঢাকায় থাকে তাকে ডাক্তার দেখাতে হবে। এছাড়া একেকজন একেক কাজে ঢাকায় আসছে। সব কাজ ঠিকমতই চলছে। এবিষয়ে উপাচার্য হাফিজা খাতুন বলেন, আমি সহ-সভাপতি পদে নির্বাচন করছি। তবে প্রশাসনিক কাজকর্ম ঠিকই চলছে। এ বিষয়ে আপনার সঙ্গে পরে কথা বলব।