রহস্য উদ্ঘাটন : পাবনায় মা-ছেলেকে হত্যার ঘটনায় সব আসামী গ্রেফতার

রহস্য উদ্ঘাটন : পাবনায় মা-ছেলেকে হত্যার ঘটনায় সব আসামী গ্রেফতার

রহস্য উদ্ঘাটন : পাবনায় মা-ছেলেকে হত্যার ঘটনায় সব আসামী গ্রেফতার

চুরি করতে গিয়ে চেনা ফেলায় প্রবাসীর স্ত্রী এবং তার ৮ বছরের শিশুকে হত্যার ঘটনায় জড়িত সব আসামী (৩ জন) পুলিশ গ্রেফতার ও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত মালামাল উদ্ধার করেছে। মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে এই সফলতায় এলাকায় প্রশংসা কুড়িয়েছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (০১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে পাবনা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পাবনা পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী এ তথ্য জানান।

গ্রেফতারকৃত হলেন-জেলার চাটমোহর দিঘুলিয়া গ্রামের সাদ্দাম হোসেন (২৬) ও তার ভাই হোসেন আলী (৩৭) এবং রাজবাড়ী জেলার সদর থানার খানখানাপুর দত্তপাড়ার হুমায়ন মিজী ওরফে হৃদয় (২৮)।

নিহত লাবনী খাতুন (৩৫) ও রিয়াদ হোসেন (৮) চাটমোহরের দিঘুলিয়া গ্রামের আব্দুর রশিদের স্ত্রী-সন্তান। আসামিদের মধ্যে সাদ্দাম হোসেন ২০২২ সালের অক্টোবরে চাটমোহরের ফৈলজানা এলাকায় একজন সিএনজি ড্রাইভারসহ একাধিক হত্যা মামলার আসামি।

পুলিশ সুপার জানান,  আব্দুর রশিদ গত ৭ বছর যাবত মালয়েশিয়া থাকেন। প্রবাসীর রশিদের স্ত্রী  লাবনী খাতুন তার বাড়ী নির্মাণের জন্য গত কয়েক দিন আগে প্রায় ২৫,০০০ ইট কেনেন এবং ব্যাংক হতে নগদ অর্থ উত্তোলন করে বাড়িতে রাখেন। লাবনী খাতুনসহ তার ১০ বছরের ছেলে রিয়াদ ২৫ জানুয়ারি দিবাগত রাতে খাওয়া দাওয়ার  শেষে নিজ বসত ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। পরের দিন সকালে ঘরের দরজা খোলা এবং আসবাব পত্র এলোমেলো  দেখে সবাই খোঁজাখুজি শুরু করে। এক পর্যায়ে লাবনীর মৃতদেহ ছাগল রাখার ঘরে এবং ছেলে রিয়াদের মৃতদেহ বাড়ির পাশে পুকুর পাড়ে গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। এঘটনায় পুলিশ হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনে মরিয়া হয়ে ওঠে। অবশেষে তা উদ্ঘাটন বরতে পুলিশ সক্ষমও হয়।

তিনি জানান, নিহত লাবনী খাতুন বিপুল টাকায় ইট কেনা এবং ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের খবরে আসামীদের ধারণা হয় তাদের কাছে অনেক টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কার আছে। এই ধারণা নিয়ে আসামী হোসেন আলী ভুক্তভোগীদের বাড়িতে চুরির পরিকল্পনা করে। পরবর্তীতে তার আপন ছোট ভাই সাদ্দাম তাদের পূর্বপরিচিত  ফরিদপুর জেলার আরেক দূর্র্ধষ চোর  হুমায়ুন কবির হৃদয়কে সাথে নিয়ে ২৫ জানুয়ারি দিবাগত রাতে ওই বাড়িতে চুরি করতে যায়। এক পর্যায়ে লাবনী খাতুন ও তার সন্তান রিয়াদ টের পেয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তাদের হত্যা করে এবং ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য রিয়াদের লাশ বাড়ির পাশের গাছে ঝুলিয়ে রাখে এবং লাবনীর লাশ  গোয়াল ঘওে ফেলে রাখে। পরবর্তীরাতে তারা স্বর্ণের রিং, চেইন, হাতের বালা, কানের দুল, দুইজোড়া রুপার নুপুর, রুপার পায়েলসহ মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার তদন্তের এক পর্যায়ে হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন এবং তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে জড়িত আসামীদেও গ্রেফতার করা হয়।

এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মোঃ মাসুদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবু বক্কর সিদ্দিক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) হাসিবুল বেনজির, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি ইমরান মাহমুদ তুহিন, সদর থানার ওসি রওশন আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।