ফাস্টফুডের যুগেও জনপ্রিয় বাকরখানি

ফাস্টফুডের যুগেও জনপ্রিয় বাকরখানি

ছবি: সংগৃহীত

স্যান্ডউইচ, রোল, বার্গার, প্যাটিস, পিজ্জা-ফাস্টফুড খাবারের রমরমা এই সময়েও নিজের জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে ঐতিহ্যবাহী বাকরখানি। পুরান ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে এখনো অনেকের সকাল-বিকালের নাস্তায় বাকরখানি থাকেই।

পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী খাবারটি এখন আশুলিয়াতেও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাকরখানি প্রস্তুত প্রণালিতে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন উপাদান। সাধারণত ময়দা, সোডা, ডালডা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের বাকরখানি তৈরি করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে ছানা, পনির, চিনি, নোনতা, কাবাব, কিমা ও নারিকেলের সংমিশ্রণে তৈরি বাকরখানি। আবার ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য তৈরি করা হচ্ছে নোনতা বাকরখানি।

বাকরখানি রুটির নামের পেছনে রয়েছে আগা বাকের ও খনি বেগমের প্রেমের ইতিহাস। মির্জা আগা বাকের ঢাকায় বাকরখানি রুটির প্রচলন করেন। নবাব মুর্শিদ কুলি খাঁর দত্তক ছেলে আগা বাকের প্রখর মেধার অধিকারী ছিলেন। যুদ্ধবিদ্যায়ও ছিলেন পারদর্শী ও প্রসিদ্ধ। বাকেরের প্রেয়সী ছিলেন রাজধানী মুর্শিদাবাদের নর্তকি খনি বেগম। খনি বেগমের মৃত্যুর পর আগা বাকের দ্বিতীয় মর্শিদ কুলি খাঁর কন্যাকে বিয়ে করেন। কিন্তু আগা বাকের মন থেকে খনি বেগমের প্রেমের স্মৃতি ভুলতে পারেননি। তাই আগা বাকেরের আবিষ্কৃত রুটির নাম হয়ে যায় বাকরখানি।

ইতিহাস থেকে আরও জানা যায়, লালবাগ কেল্লার কাছে প্রথম বাকরখানির দোকান গড়ে ওঠে। সেখান থেকে আস্তে আস্তে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বাকরখানির দোকান বিস্তার লাভ করে।

বাকরখানির ঐতিহ্যে মুগ্ধ হয়ে কবি প্রতুল মুখোপাধ্যায় তার কবিতার ভাষায় বলেছিলেন, ‘আলু বেচো, ছোলা বেচো, বেচো বাকরখানি/বেচো না বেচো না বন্ধু তোমার চোখের মণি।/ ঝিঙে বেচো পাঁচ সিকেতে হাজার টাকায় সোনা/হাতের কলম জনম দুঃখী তাকে বেচো না।’ এই চরণগুলোই প্রমাণ করে বাকরখানির ইতিহাস অনেক পুরনো।