নেতানিয়াহুর নির্দেশে রাফাহ শহরে হামলা, ১০ শিশুসহ নিহত ২৮

নেতানিয়াহুর নির্দেশে রাফাহ শহরে হামলা, ১০ শিশুসহ নিহত ২৮

সংগৃহীত

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে অন্তত ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর নির্দেশের পর স্থানীয় সময় শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে এই হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।  

অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের সাংবাদিকদের মতে, মিশর সীমান্তবর্তী ওই শহরে শনিবার সকালে তিনটি বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে তিনটি পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য নিহত হয়েছেন। নিহতদের প্রায় ১০ জনই শিশু। এর মধ্যে এক শিশুর বয়স মাত্র তিন মাস।

এর আগে, গাজার উত্তরাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহর থেকে লোকজনকে রাফাহ শহরে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে আশ্রয় নেওয়া লোকজনের ওপরই এখন হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কিদরা বলেছেন, বর্তমান স্থলযুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত খান ইউনিসের নাসের হাসপাতাল এলাকার গুলি চালায়। এতে অন্তত একজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

ওই হাসপাতালে বর্তমানে ৪০০ জন রোগীর চিকিৎসা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেখানে ১০ হাজারের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিচ্ছেন। সেখানে ৩০০ জন স্বাস্থ্যকর্মী তাদের দেখভাল করছেন। কিন্তু শনিবারের গুলিবর্ষণে সৃষ্ট তীব্র আগুনের কারণে তারা হাসপাতাল ভবনের মধ্যে চলাচল করতে পারছেন না। রোগীদের সেবা ব্যাহত হচ্ছে।

শুক্রবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছিলেন যে, দক্ষিণ সীমান্ত শহর রাফাতে ঢুকে হামাসের শেষ শক্ত ঘাঁটি নির্মূল না করতে পারলে যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জন করা অসম্ভব। হামাসের সেই শক্ত ঘাঁটির সদস্যরা ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে রক্তক্ষয়ী হামলা চালিয়েছিল।

এরপরই হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়ে সেখানে আশ্রয় নেওয়া বাসিন্দাদের সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।  

যুদ্ধপূর্বে রাফাহ শহরের জনসংখ্যা ছিল ২ লাখ ৮০ হাজার। জাতিসংঘের মতে, গাজার অন্যত্র থেকে যুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসার পর এই শহরে বর্তমানে ১৪ লাখ অতিরিক্ত লোক বসবাস করছেন।

যে কারণে নেতানিয়াহু ও আইডিএফের ঘোষণায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্বের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো।  

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনে নিযুক্ত ত্রাণ সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান ইউএনআরডব্লিউএ’র প্রধান ফিলিপ লাজারিনি জানিয়েছেন, হামলার এ ঘোষণায় রাফাহ শহরে উদ্বেগ ও আতঙ্কে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ।

এদিকে রাফাহ-তে হামলার বিষয়ে সতর্ক করে মিসর জানিয়েছে, তার সীমান্ত পেরিয়ে ফিলিস্তিনিদের যেকোনো পদক্ষেপ ইসরায়েলের সঙ্গে মিসরের চার দশকের পুরোনো শান্তি চুক্তিকে হুমকির মুখে ফেলবে।  

গাজা এবং মিসরের মধ্যে বেশিরভাগই সীমান্ত প্রবেশদ্বার বন্ধ। বিভিন্ন সময়ে এসব প্রবেশদ্বারের মাধ্যমে গাজায় মানবিক সাহায্য পাঠানো হয়।  

যুদ্ধপূর্বে রাফাহ শহরের জনসংখ্যা ছিল ২ লাখ ৮০ হাজার। জাতিসংঘের মতে, গাজার অন্যত্র থেকে যুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসার পর এই শহরে বর্তমানে ১৪ লাখ অতিরিক্ত লোক বসবাস করছেন।