টাকা দিয়ে ডলার নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক

টাকা দিয়ে ডলার নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক

ফাইল ছবি

বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় সহজ করতে বাণিজ্যিক ব্যাংকের সঙ্গে ডলার ও টাকার অদলবদল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। জানা গেছে, দেশের ১২টি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ৫৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার তুলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ১১০ টাকা দরে ব্যাংকগুলো প্রবাসী ও রফতানি আয় কিনছে। সমপরিমান টাকার বিনিময়ে এই সোয়াপ (অদলবদল) করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় সহজ করতে সোয়াপ চালু করা হয়েছে। এতে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। এতে বাংলাদেশ ব্যাংক কোন জোর জবরদস্তি করছে না। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সোয়াপ চালুর পরেই ১২ টি ব্যাংক থেকে টাকার বদলে ৫৮৮ মিলিয়ন ডলার নেয়া হয়েছে।

এর আগে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১৫ ফেব্রুয়ারি একটি সার্কুলার জারি করে। এতে বলা হয়েছে, স্থানীয় মুদ্রাবাজার গতিশীল করতে কারেন্সি সোয়াপ পদ্ধতি চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মাধ্যমে ডলার বা যেকোনো স্বীকৃত বৈদেশিক মুদ্রা জমা রেখে টাকা নেয়া যাবে। আবার টাকা জমা রেখে ডলার বা অন্য স্বীকৃত মুদ্রা নেয়া যাবে। সোয়াপের ক্ষেত্রে ওই দিনের বৈদেশিক মুদ্রার বাজারভিত্তিক দর হিসাব করা হবে। শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর সোয়াপে কোনো সুদ আরোপ হবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ৩০ দিন মেয়াদী এসব টাকা-ডলার অদলবদলের সোয়াপ হয়েছে। ৩০ দিন শেষ হলেই ব্যাংকগুলো টাকা দিয়ে ডলার নিয়ে যাবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে টাকা জমা রেখে কোনো ব্যাংক এখনো ডলার নেয়নি। মূলত যাদের রেমিট্যান্স বেশি আসছে, তারাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে সোয়াপ করতেছে। এখন আনুষ্ঠানিকভাবে ১১০ টাকা দরে ব্যাংকগুলো প্রবাসী ও রফতানি আয় কিনছে। এই দামে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ডলার অদলবদল করেছে ব্যাংকগুলো। বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার নিয়ে সমপরিমাণ টাকা দিয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুত্রে জানা গেছে, ব্যাংকগুলো ডলার জমা দিয়ে টাকা ধার নেয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ কিছুটা বেড়েছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের হিসাবপদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার। ২০ ফেব্রুয়ারি বেড়ে হয় ২০ দশমকি ১৯ বিলিয়ন ডলার। গত সোমবার দিন শেষে রিজার্ভ আরও বেড়ে ২০ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব হিসেবে ওই দিন শেষে রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে উদ্বৃত্ত ডলার থাকলে এখন তা বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিয়ে তারা সমপরিমাণ টাকা ধার নিতে পারবে। এতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংক উভয় পক্ষই লাভবান হবে। কারণ, উদ্বৃত্ত ডলারের বিপরীতে ব্যাংকগুলো তাৎক্ষণিকভাবে টাকা পেয়ে যাবে। আবার নির্ধারিত সময় পর টাকা ফেরত দিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সমপরিমাণ ডলার নিতে পারবে।