মেদিনীপুরে এক মাজার দেখভাল করছে হিন্দু সম্প্রদায়

মেদিনীপুরে  এক মাজার দেখভাল করছে হিন্দু সম্প্রদায়

ছবিঃ সংগৃহীত।

দীর্ঘ ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরের সুফি চাঁদশা পীরের মাজার দেখভাল করছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা। ভারতজুড়ে অসহিষ্ণুতার আবহে এ যেন এক বিরল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দৃশ্য।

সুফি চাঁদশা পীরের মাজার দেখভালের পুরো দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন মেদিনীপুর জেলার কোতায়ালী থানার অন্তর্গত বেড়বল্লভপুর অঞ্চলের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন, যার প্রধান ভূমিকায় রয়েছেন চমত সেতুয়া নামে ৮২ বছরের এক বৃদ্ধ।স্থানীয়দের মতে, ১৯৫০ সালের অনেক আগে পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার বেড়বল্লভপুর অঞ্চলে ভবঘুরের মতো ঘুরে বেড়াতেন সুফি হাফেজ তুফানি চাঁদ নামে এক ব্যক্তি। মানবকল্যাণের প্রচার করতেন তিনি।

কথিত রয়েছে, বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে সুফি চাঁদশার কাছে গেলে সেসব সমস্যার সমাধান হয়ে যেতো। ফলে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পরে তার কথা। ধীরে ধীরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের মধ্যে প্রবল জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন চাঁদশা বাবা নামে।১৯৮০ সালে মারা যান সুফি চাঁদশা পীর। সেসময় তার দাফন করেন ওই অঞ্চলের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা। তারপরই চাঁদশা পীরের সমাধিস্থল চাঁদশা বাবার মাজার নামে পরিচিত হয়ে ওঠে।

বর্তমানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে হিন্দু, মুসলিম সব সম্প্রদায়ের মানুষেরা আসেন সুফি চাঁদশা পীরের মাজারে। প্রতিবছর চৈত্র মাসে আয়োজন করা হয় মাজারের বাৎসরিক উৎসব। এই উৎসবে লাখো মানুষের সমাগম ঘটে।বাৎসরিক উৎসব ছাড়াও প্রতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার বিশেষ অনুষ্ঠান হয়। সেই অনুষ্ঠানে সব ধর্মের মানুষের ভিড় চোখে পড়ে।

সুফি চাঁদশা পীরের ভক্ত চমত সেতুয়া বলেন, প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার মাজারে আয়োজন করা হয় বিশেষ প্রার্থনা। ওই দিন সব সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য ভোজনের ব্যবস্থা করা হয়।তিনি আরও বলেন, বাৎসরিক উৎসবের সময় চাঁদশা বাবার ভক্তদের দেওয়া দানের অর্থেই মাজারের সব খরচ চলে।

বেড়বল্লভপুরের বাসিন্দা সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় বলেন, চাঁদশা বাবার মাজার জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে এক অনন্য নজির তৈরি করেছে। এই মাজার সব সম্প্রদায়ের মানুষকে এক ছাতার নিচে নিয়ে এসেছে।