ঈদের আগে খুলল বিআরটি প্রকল্পের ৭ উড়াল সড়ক

ঈদের আগে খুলল বিআরটি প্রকল্পের ৭ উড়াল সড়ক

সংগৃহীত ছবি

যানজট কমিয়ে আনতে গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্টের (বিআরটি, গাজীপুর-এয়ারপোর্ট) সাতটি ফ্লাইওভারের উদ্বোধন করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

রোববার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ভিডিও কানফারেন্সের মাধ্যমে তিনি ফ্লাইওভারগুলো উদ্বোধন করেন।

মন্ত্রী বলেন, এই সাতটি ফ্লাইওভার দিয়ে যান চলাচল করতে পারবে। ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের জন্য এই সাতটি ফ্লাইওভার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে উপহার। এ প্রকল্প নির্মাণে বিলম্ব হয়েছে। যথাসময়ে শেষ করা সম্ভব হয়নি। তারপরও দেরিতে হলেও কাজটি শেষ হওয়ার পথে। এই প্রকল্পটা চ্যালেঞ্জ ছিলো। আশা করি সবাই এর উপকার পাবে। মাঝে প্রকল্পের নির্মাণ কাজে কিছু অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে।

তিনি বলেন, আশা করছি এ বছরেই এটি দিয়ে বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট চালু করতে পারবো। আমাদের অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজ শেষ হয়ে গেছে। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৯১ শতাংশ। আশা করছি, ডিসেম্বর নাগাদ বাকি কাজ শেষ হবে। বিআরটি করিডোর দিয়ে বাস চলাচল করতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, এই ফ্লাইওভারগুলো দিয়ে এখন থেকে যান চলাচল করতে পারবে। যার মধ্যে রয়েছে ৩২৩ মিটার এয়ারপোর্ট ফ্লাইওভার (বাঁ-পাশ), ৩২৩ মিটার এয়ারপোর্ট ফ্লাইওভার (ডান-পাশ), ১৮০ মিটার জসীমউদ্‌দীন ফ্লাইওভার, ১৬৫ মিটার ইউ-টার্ন-১ গাজীপুরা ফ্লাইওভার, ১৬৫ মিটার ইউ-টার্ন-২ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ফ্লাইওভার, ২৪০ মিটার ভোগড়া ফ্লাইওভার এবং গাজীপুরের চৌরাস্তায় ৫৬৮ মিটার ফ্লাইওভার।

মন্ত্রী বলেন, এখন মাত্র ৪০ মিনিটে গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত যাতায়াত করা যাবে।

যানজট কমিয়ে আনতে ‘গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট’ প্রকল্পের আওতায় উড়াল এই সড়ক তৈরি হচ্ছে গাজীপুর থেকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ উত্তরা হাউস বিল্ডিং থেকে টঙ্গী চেরাগ আলী মার্কেট পর্যন্ত এলাকার সড়কের কাজ করছে। বাকিটা হচ্ছে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন।

২০১১ সালে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এই প্রকল্পের প্রাথমিক সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করে। ২০১২ সালের ১ ডিসেম্বর একনেকে বিআরটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। শুরুতে ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৩৯ কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। এরপর কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছিল।

প্রকল্পের সবশেষ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ২৬৮ কোটি ৩২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। শুরুতে প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ছিল চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত। কিন্তু পরে সময় বাড়িয়ে প্রকল্প ব্যয় বাড়ানো হলেও পথ ছোট করে চান্দনা চৌরাস্তা থেকে কেরানীগঞ্জের পরিবর্তে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত করা হয়।

ঈদযাত্রায় চিলাহাটি ও নীলসাগর এক্সপ্রেস ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে ছাড়বেঈদযাত্রায় চিলাহাটি ও নীলসাগর এক্সপ্রেস ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে ছাড়বে

বিআরটি বাস্তবায়িত হলে ১০০টি আর্টিকুলেটেড বাসের মাধ্যমে প্রতি ঘণ্টায় ২৫ হাজার মানুষ যাতায়াত করবে। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজট অনেকটাই কমে যাবে। এই প্রকল্পের অর্থায়ন করছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, ফরাসী উন্নয়ন সংস্থা ও গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি।

জানা গেছে, ৮টি ফ্লাইওভারের মধ্যে ৭টির কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং আজ যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। একটি ফ্লাইওভারের কাজ এখনও চলমান রয়েছে।

যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত ৭টি ফ্লাইওভার হল:

১. এয়ারপোর্ট ফ্লাইওভার (বাম পার্শ্ব)

২. এয়ারপোর্ট ফ্লাইওভার (ডান পার্শ্ব)

৩. জসীমউদ্দিন ফ্লাইওভার

৪. ইউ-টার্ন-১ গাজীপুরা ফ্লাইওভার

৫. ইউ-টার্ন-২ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ফ্লাইওভার

৬. ভোগড়া ফ্লাইওভার

৭. চৌরাস্তা ফ্লাইওভার