সপ্তাহের শেষ দিনে ঢাকার রাস্তায় দ্বিমুখী চরিত্র

সপ্তাহের শেষ দিনে ঢাকার রাস্তায় দ্বিমুখী চরিত্র

সংগৃহীত ছবি

ঢাকার রাস্তায় যানজট যেন নিত্যদিনের পরিস্তিতি। আর রোববার ও বৃহস্পতিবার মানে বেসামাল অবস্থা। এবার পুরো রোজায় এমন অবস্থা প্রত্যক্ষ করে আসছিলেন রাজধানীবাসী। তবে আজ বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে দেখা গেছে কোথায় যানজট কোথায় আবার ফাঁকা।

এই রমজানে নগরবাসীকে স্বস্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি থেকে ট্রাফিক সদস্যদের রোস্টার ডিউটি বাতিল, বিকেলে সড়কে ডিউটি বাড়ানো হয়েছে। সকাল ও বিকেল বেলা, বিশেষ করে ইফতারের আগে চাপ সামলানোর চাপ নিয়েই সড়কে দাঁড়াতে দেখা গেছে ট্রাফিক সদস্যদের।

রমজানে অফিসের সময়সূচি বদলেছে, অফিস থেকে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা যেন বাসায় গিয়ে প্রিয়জনের সঙ্গে ইফতার করতে পারেন সে লক্ষ্য ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি ক্রাইম বিভাগও কাজ করছে সড়কে। পুলিশের নজর বিশেষ করে বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁও, শেরেবাংলা নগর, বিজয় সরণি, মহাখালী, তেজগাঁও, পুরান ঢাকা ও মতিঝিলে সরেজমিনে দেখা যায় এবং বনানী ও উত্তরার সড়কের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সড়কে যানবাহনের ধীরগতির চাপ। ইন্টারসেকশন ও সিগন্যালকেন্দ্রিক যানবাহনে ধীরগতি কোথাও জটলা দেখা গেছে। কিছু কিছু এলাকায় হালকা যানজট আছে। গাড়ির চাপও আছে কিছু এলাকায়। তবে বিজয় সরণি সিগনালে দীর্ঘ সময় আটকে থাকতে দেখা গেছে যানবাহনগুলোকে।

ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগের শেরেবাংলা নগর জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মো. তারেক সেকান্দার জানান, অন্য কোনো বৃহস্পতিবারের মতো নেই আজ সড়কের অবস্থা। স্কুল-কলেজ বন্ধ। সকালের বড় চাপটা কমে গেছে সড়কে। এখন যানজট নেই, তবে অফিসগামী যানবাহনের চাপ আছে। সেটা যাতে যানজটে রূপ না নেয় সেজন্য সড়কে ট্রাফিক শেরেবাংলা নগরের সদস্যরা সড়কে সক্রিয় রয়েছেন।

ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগের তেজগাঁও জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) স্নেহাশীষ কুমার দাস জানান, আজকের চিত্র খুবই নরমাল। কোথাও সিগন্যাল ছাড়া গাড়ির চাপ নেই। তবে চাপ বিকেলে বাড়তে পারে সেটাও মার্কেটকেন্দ্রিক।

ট্রাফিক উত্তরা বিভাগের এয়ারপোর্ট জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) শাখাওয়াত হোসেন সেন্টু বলেন, অন্যান্য দিনের মতো গাড়ির চাপ স্বাভাবিক। সকালে অফিস টাইমে অতিরিক্ত চাপ ছিল তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা কমছে।

ট্রাফিক গুলশান বিভাগের মহাখালী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আরিফুর রহমান রনি বলেন, আজ সকালে যানজট নেই তবে গাড়ির চাপ রয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সারাদিন মোটামুটি গাড়ির চাপ থাকবে। তবে ইফতারের আগেই চাপটা আরও বৃদ্ধি পাবে।

পুরান ঢাকার যানজট পরিস্থিতি জানতে চাইলে ট্রাফিক লালবাগ বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) রাজীব গাইন বলেন, আজ থেকে ছুটি শুরু হবে। এখন পর্যন্ত গাড়ি রানিং (চলন্ত) অবস্থায় আছে। তবে খুব বেশি যানজট নেই। ফুলবাড়িয়া হলো সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার, এ কারণে রিকশা ও ঠেলাগাড়ির সংখ্যা বেশি এই এলাকায়।

তিনি বলেন, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চাপ থাকবে। তবে আমাদের ট্রাফিক বিভাগের সব কর্মকর্তা মাঠে আছেন।

যানজট না থাকলেও সকালে সড়কে গাড়ির চাপেই ক্ষুব্ধ অনেক যাত্রী। আবার অনেকে যানজট না পেয়ে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছে খুশি।

তৌহিদুল ইসলাম নামে এক প্রাইভেটকারের আরোহী বলেন, বিজয় সরণিতে আটকে ছিলাম তিন মিনিট। এরপর বাকি পথে কোথাও আজ দাঁড়াতে হয়নি। বৃহস্পতিবার হিসেবে বিষয়টি অবিশ্বাস্যই।

মহাখালীতে রেল ক্রসিংয়ের কারণে সিগন্যালে আটকে থাকায় বিরক্ত বাইকচালক মোসলেম উদ্দিন বলেন, রেল ক্রসিং পার হওয়ার পরই আবার আমতলী সিগন্যালে আটকে দিলো। সড়ক দেখতেছি স্বাভাবিক। কিন্তু সিগন্যালগুলো বড়ই যন্ত্রণার।