৩৮তম ফোবানা সম্মেলন শুরু ৩০ আগস্ট

৩৮তম ফোবানা সম্মেলন শুরু ৩০ আগস্ট

ছবি: সংগৃহীত

উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে বৃহত্তম বাংলাদেশের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ফেডারেশন অফ বাংলাদেশি অ্যাসোসিয়েশন ইন নর্থ আমেরিকা’ (ফোবানা)। যার সঙ্গে সংযুক্ত আছে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় অবস্থিত বিভিন্ন বাংলাদেশি সংগঠন। বাংলাদেশের সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ভাষাকে উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে উজ্জীবিত রাখা এবং নতুন প্রজন্মের কাছে প্রচার ও প্রসার করা হচ্ছে ফোবানার মূল লক্ষ্য। আগামী ৩০ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর হতে যাচ্ছে এই সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সম্মেলন।

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ফোবানার প্রাক্তন চেয়ারপারসন ও আউটস্ট্যান্ডিং মেম্বার বেদারুল ইসলাম বাবলা এবং প্রাক্তন চেয়ারপারসন ও আউটস্ট্যান্ডিং মেম্বার জাকারিয়া চৌধুরী এ কথা জানান। এছাড়া ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন ফোবানার কেন্দ্রীয় নির্বাহী সম্পাদক জনাব ডক্টর রফিক খান ও ফোবানা হোস্ট কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী মোঃ শাহাবুদ্দিন।

সংবাদ সম্মেলনে ফোবানার চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান ও নির্বাহী সম্পাদক ড. রফিক খানের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে বেদারুল ইসলাম বাবলা বলেন, ‘৩৮তম ফোবানা সম্মেলন হবে আগামী অগাস্ট ৩০ থেকে সেপ্টেম্বর ১ তারিখ পর্যন্ত ডেট্রয়েট (মিশিগান, ইউ. এস. এ.) শহরে। ফোবানা সম্মেলনটি প্রতি বছর উত্তর আমেরিকার (ইউএসএ ও কানাডার) বিভিন্ন শহরে উদযাপিত হয়। এবার দীর্ঘ ২১ বছর পর বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ মিশিগান আবারো আয়োজন করতে যাচ্ছে ফোবানা সম্মেলন।

সম্মেলনের কনভেনার হচ্ছেন সংগঠক ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজ চৌধুরী এবং মেম্বার সেক্রেটারী হচ্ছেন খালেদ হোসেন। সম্মেলনকে সার্থক করতে ইতোমধ্যে হিল্টন গার্ডেন হোটেলটি নির্ধারণ করা হয়েছে এবং শিল্পী, সাহিত্যিক, ও আলোচকদের আমন্ত্রণ করার কাজ দ্রুত চলমান রয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ডেট্রয়েটে (মিশিগান) অনুষ্ঠিতব্য এই সম্মেলন হবে ফোবানার মূল ৩৮তম সম্মেলন। ফোবানার মূল লক্ষ্য হচ্ছে উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশী সংস্কৃতিকে ধরে রাখা এবং নুতন প্রজন্মের কাছে তার প্রচার ও প্রসারে সাহায্য করা। সঙ্গে সঙ্গে উত্তর আমেরিকায় বসবাসকারী বাংলাদেশিদের মধ্যে যোগসূত্র গড়ে তোলা, বাংলাদেশ ও উত্তর আমেরিকায় বসবাসকারী বাংলাদেশিদের ভেতর সাংস্কৃতিক ও ব্যবসায়িক সেতুবন্ধন তৈরি করা, নুতন প্রজন্মের কাছে ফোবানা ইয়ুথ ক্লাবের মাধ্যমে বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি, উচ্চ শিক্ষার ব্যাপারে প্রেরণা দেওয়া। আমরা প্রতি বছর বাংলাদেশ ও উত্তর আমেরিকায় বেশ কয়েকটি স্কলারশিপ প্রদান করে থাকি নুতন প্রজন্মের শিক্ষাগত উন্নতির জন্য।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘সম্মেলনে থাকবে বিশেষ সেমিনার ও আলোচনা সভা। যেখানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে তুলে ধরা হবে- বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের ইতিহাস। আরও তুলে ধরা হবে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলা বাংলাদেশের তথ্যবহুল বিশ্লেষণ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে প্রবাসীদের অংশগ্রহণ নিয়ে বিশেষ আলোচনা। সেমিনারে অংশ নেবেন স্বনামধন্য শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, লেখক ও গবেষক সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। ফোবানা সম্মেলন হচ্ছে বিদেশের মাটিতে হাজার বাংলাদেশিদের মিলন ও সংযোগের এক বিশাল মাধ্যম। এখানে শুধু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানই মূল লক্ষ্য নয়। এই সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা তুলে ধরব উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের নানা ক্ষেত্রে সাফল্যের দৃষ্টান্ত। যাতে করে সবাই এর থেকে উপকৃত হতে পারেন। এ ব্যাপারে বিশেষভাবে আয়োজন করা হবে ‘বিজনেস নেটওয়ার্কিং সামিট’ যেখানে আমন্ত্রিত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গদের মধ্যে থাকবেন বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা, ইউএসএ ও কানাডার চেম্বার অব কমার্সের নেতা, বাংলাদেশ ও সারা বিশ্বে বসবাসকারী সফল ব্যবসায়ীসহ আরও অনেকে।

ফোবানার বিভক্তি নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে ফোবানার সাবেক চেয়ারম্যান জাকারিয়া চৌধুরী বলেন, আমরাই ফোবানার মূল ধারা। যেটি ১৯৮৭ সালে ওয়াশিংটন ডিসিতে যাত্রা শুরু করেছিল। ফোবানার বিভিন্ন নির্বাচনে পরাজিতরা এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধীরা, যুদ্ধাপরাধীদের পরিবারের সদস্যরা ও আমেরিকায় সাজা প্রাপ্ত ফেডারেল ক্রিমিনালরা মিলে ফোবানার নামে ভুয়া সম্মেলন করছেন। তাদের সাথে ফোবানার মুল ধারার কোন সম্পর্ক নেই।

সাবেক চেয়ারপারসন ও আউটস্ট্যান্ডিং মেম্বার জাকারিয়া চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, ফোবানার মূল লক্ষ্য হচ্ছে— বাংলাদেশের সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ভাষাকে উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে উজ্জীবিত রাখা এবং নতুন প্রজন্মের কাছে প্রচার ও প্রসার করা। এটি উত্তর আমেরিকার বাংলাদেশের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। যার সঙ্গে সংযুক্ত আছে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় অবস্থিত বিভিন্ন বাংলাদেশি সংগঠনগুলো।

এসময় ফোবানার শুভেচ্ছাদূত ড. সুবর্ণা নওয়াদীর, ফোবানার বাংলাদেশ লিয়াজু কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও বাচসাস সাধারণ সম্পাদক রিমন মাহফুজ, বাচসাস সভাপতি রাজু আলীম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।