বন্যায় নেত্রকোনার ৩৪ গ্রাম প্লাবিত, পানিবন্দি সহস্রাধিক মানুষ

বন্যায় নেত্রকোনার ৩৪ গ্রাম প্লাবিত, পানিবন্দি সহস্রাধিক মানুষ

ফাইল ছবি

টানা ভারী বৃষ্টি ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার মদন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে ডুবতে বসেছে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরও। এদিকে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় খাদ্য সংকটের আশঙ্কা রয়েছে। অনেকে বিপাকে পড়েছে গভাদি পশু নিয়ে।

শুক্রবার (২১ জুন) পর্যন্ত পানিবন্দী হয়েছে ৩৪টি গ্রামের এক হাজার ৬২০ পরিবার। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম ও মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ২০টি আশ্রয়কেন্দ্র।

এদিকে ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ধনু, মগড়া, বালই, বর্নি নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে উপজেলার প্রত্যেকটি হাওরে পানি বাড়ছে। এতে করে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা, সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার মাঘান ইউনিয়েনে মাঘান, নয়াপাড়া, পদারকোনা, চত্রমপুর, জঙ্গলডেমারগাতি, গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রাম, শান্তিপাড়া, রাজালিকান্দা, কদমশ্রী, মদন ইউনিয়নের বাগধাইর, বরিকান্দি, তিয়শ্রী ইউনিয়নের বাগজান, বালালী, ধুবাওয়ালা, ভাবানীপুর, বৈঠাখালি, ফতেপুর ইউনিয়নের লাছারকান্দা, দেওসহিলা, ফতেপুর গুচ্ছ গ্রাম, সহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

টানা ভারী বৃষ্টি থাকায় লোকজন নৌকা ছাড়া বের হতে পারছেন না। তাছাড়া চারদিক পানি থাকায় সব ধরনের কাজ কর্ম বন্ধ থাকায় নিম্ন আয়ের মানুষ বিপাকে পড়েছে।

এ বিষয়ে মাঘান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম খান মাসুদ জানান, আমার ইউনিয়নের প্রায় ৪০০ পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। সারাদিন বৃষ্টি থাকায় খাদ্য সংকটের আশঙ্কা রয়েছে। আমি উপজেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ রাখছি। খাদ্য সংকট থাকলে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামিউল হায়দার তালুকদার শফি জানান, আমার ইউনিয়নের বিয়াশি ও ফতেপুর গুচ্ছ গ্রামসহ কয়েকটি গ্রামে প্রায় ৩০০ পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। আমি সার্বক্ষণিক তার খোঁজ খবর রাখছি। কোন পরিবার যাতে খাদ্য সংকটে না পড়ে তার জন্য উপজেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ রাখছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. শাহ আলম মিয়া জানান, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে মদন উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ১ হাজার ৬২০ পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে বলে খবর পেয়েছি।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম, মনিটরিং টিম, মেডিকেল টিম, ত্রাণ বিতরণ টিম গঠন করা হয়েছে। ২০টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি ও দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান তিনি।