কিশোরগঞ্জে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

কিশোরগঞ্জে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

প্রতীকী ছবি

বহুল আলোচিত কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি নাজমুল হোসেন হীরাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ময়মনসিংহ শহরের গাঙ্গিনারপাড় থেকে তাকে গ্রেফতার করে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় আনা হয়।

কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান, বিশেষ ক্ষমতা আইনে হীরাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এর আগে, রবিবার কিশোরগঞ্জ ১ নম্বর আমলি আদালতে হীরাসহ তিনজনকে আসামি করে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেন মিঠামইন উপজেলার বাসিন্দা কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের এক ছাত্রী।

মামলার অপর আসামিরা হলেন-কিশোরগঞ্জ শহরের বয়লা তারাপাশা এলাকার বাসিন্দা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমন ও তার বড় ভাই মোশারফ হোসেন মোল্লা বাবুল। তারা দুজন নাজমুল হোসেন হীরার মামা।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ২০২২ সালে দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী এক যুবকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু স্বামী নেশাগ্রস্ত হওয়ায় বিয়ের এক মাস পর তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পরে বাবার বাসায় ফিরে গিয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যান তিনি। কলেজে যাওয়া আসার পথে মামলার ১ নম্বর আসামি নাজমুল হোসেন হীরা প্রায়ই মোটরসাইকেল নিয়ে পথরোধ করে উত্ত্যক্ত এবং প্রেম নিবেদন করতেন।

একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ের প্রলোভনে হীরা তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মেলামেশার স্থির চিত্র ও ভিডিও ধারণ করে রাখেন। বিষয়টি হীরার মামা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমন ও তার বড় ভাই মোশারফ হোসেন মোল্লা বাবুলকে অবগত করলেও তারা কোনো প্রতিকার করেননি। বরং ভাগ্নের বিষয়ে বাড়াবাড়ি করলে কিশোরগঞ্জ থাকতে পারবে না বলে হুমকি দেন।

পরে হীরাকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে গত বছরের ৮ জুন কাজীর মাধ্যমে বিয়ে রেজিস্ট্রি করেন। কিন্তু কাবিনের কোনো কপি তাকে দেয়নি। কাবিনের কপি চাইলে হীরা তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। বিয়ের পর তিনি জানতে পারেন যে, হীরা বিবাহিত এবং তাদের দুটি সন্তান হলেও পরে মারা যায়।

মামলার এজাহারে তিনি আরও উল্লেখ করেন, আসামি হীরার দুই মামা ক্ষমতাসীন দলের নেতা হওয়ায় তাদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এ ধরনের অন্যায় করে যাচ্ছেন। এ সমস্ত কার্যকলাপে অতিষ্ঠ হয়ে তিনি হীরাকে তালাক দিয়ে চলে যান। কিন্তু আগের রেখে দেওয়া নগ্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে হীরা তার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নেন। তিনি দূরে সরে গেলেও নগ্ন ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে আসামি হীরা গত ১৯ এপ্রিল তার সঙ্গে আবারও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন এবং স্থির চিত্র ও ভিডিও ধারণ করে রাখেন। পরে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েও দেন।

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান, আদালত থেকে পর্নোগ্রাফি মামলার কাগজপত্র এখনো থানায় আসেনি। এ সংক্রান্ত কাগজপত্র হাতে আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।