ভারতে নতুন ফৌজদারি আইন চালু

ভারতে নতুন ফৌজদারি আইন চালু

ছবি: সংগৃহীত

ব্রিটিশ আমলে চালু হওয়া ইন্ডিয়ান পেনাল কোডের (আইপিসি) তিনটি ধারা বদলে ভারতে সোমবার (১ জুলাই) নতুন তিনটি ফৌজদারি আইন চালু হয়েছে। নতুন চালু হওয়া আইন তিনটি হলো— ভারতীয় ন্য়ায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম। এর আগে এই ধারাগুলি ছিল ব্রিটিশদের তৈরি তিনটি আইনে— ইন্ডিয়ান পেনাল কোড (আইপিসি), কোড অফ ক্রিমিনাল প্রসিডিওর এবং দ্য় ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্য়াক্ট। ব্রিটিশ আমলের এই তিনটি আইন বাতিল করে নতুন এই তিনটি আইন চালু করা হলো।

এই আইন নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, এর ফলে ভারতে ফৌজদারি বিচারের গতি আগের চেয়ে অনেকটাই দ্রুত হবে।

কী আছে নতুন আইনে-
নতুন আইনগুলি পুরনো আইন থেকেই তৈরি করা। কিন্তু তাতে বেশ কিছু বদল আনা হয়েছে।

নতুন আইনে বলা হয়েছে, প্রথম শুনানির ৬০ দিনের মধ্যে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করতে হবে। বিচারপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে সাজা ঘোষণা করতে হবে। অর্থাৎ, বিচার প্রক্রিয়া আগের চেয়ে অনেক দ্রুত হবে বলেই মনে করা হচ্ছে নতুন আইনে।

নতুন আইন অনুযায়ী দেশের যে কোনো প্রান্তে বসে পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করা যাবে। অর্থাৎ, যে অঞ্চলে অপরাধ সংগঠিত হয়েছে, কেবলমাত্র সেই অঞ্চলের থানায় গিয়েই এফআইআর করতে হবে, এমন কোনো নিয়ম আর থাকলো না। যেকোনো পুলিশ স্টেশন যেকোনো অঞ্চলের এফআইআর নিতে বাধ্য থাকবে। পাশাপাশি অনলাইনেও অভিযোগ নথিভুক্ত করা যাবে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে সমন পাঠানো যাবে।

নতুন আইনে বলা হয়েছে, যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ ফৌজদারি অপরাধের ক্ষেত্রে ক্রাইম সিন বা অপরাধ যেখানে সংগঠিত হয়েছে সেই জায়গার ভিডিওগ্রাফি করতে হবে। ক্রাইম সিনের ভিডিওগ্রাফি এখনও হয়। কিন্তু তা বাধ্যতামূলক নয়। নতুন আইনে তা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

সাত বছরের বেশি সাজা হতে পারে এমন অপরাধের ঘটনায় ফরেনসিক দলকে ক্রাইম সিনে যেতেই হবে। গণপিটুনি, গণধর্ষণ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের মতো অপরাধের ক্ষেত্রেও ফরেনসিক টিমকে ঘটনাস্থলে যেতে হবে। এর ফলে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞের প্রয়োজনীয়তা বাড়বে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

তবে নতুন তিনটি আইন নিয়ে কংগ্রেসসহ বিরোধী দলগুলো বলছে, নতুন আইন খুব দ্রুত চালু করা হচ্ছে। এই আইনগুলো নিয়ে আরো বেশি আলোচনা হওয়ার প্রয়োজন ছিল। এর সাংবিধানিক ব্যাখ্যা নিয়েও আলোচনা করা দরকার ছিল।

অবশ্য সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় নতুন আইনকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এটি একটি অভূতপূর্ব সময়। ভারতে দৈনন্দিন জীবনে সবচেয়ে বেশি কাজে লাগে ফৌজদারি আইন। সেই আইনের ঐতিহাসিক সংস্কার হলো।