যাদের সঙ্গ ছাড়তে বলছে কোরআন

যাদের সঙ্গ ছাড়তে বলছে কোরআন

সংগৃহীত

ঈমান সংরক্ষণ ও পাপ থেকে বেঁচে থাকার জন্য মুমিনদেরকে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (স.) অনেক বিষয়ে সতর্ক করেছেন। এর একটি হলো- চিহ্নিত পাপীদের সঙ্গ ছেড়ে দেওয়া। এই নির্দেশনা মুমিনদের মেনে চলা জরুরি। কেননা মানুষ তার সঙ্গী-সাথির দ্বারা প্রভাবিত হয়। ফলে আল্লাহর অবাধ্য বান্দায় পরিণত হয়ে পড়ে। রাসুল (স.) বলেন, ‘মানুষ তার বন্ধুর ধ্যান-ধারণার অনুসারী হয়ে থাকে। সুতরাং তোমাদের সবার খেয়াল রাখা উচিত সে কার সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন করছে।’ (তিরমিজি: ২৩৭৮)

ইসলাম চায়, মুসলমানরা সবসময় নেককার মানুষের সঙ্গে চলাফেরা করুক। কোরআনের আয়াতকে অবজ্ঞাকারী এবং সুন্নাহর নির্দেশ না মানা পাপীদের কাছ থেকে দূরে থাকুক। কোনো আলোচনায় তাদের সঙ্গী করা যাবে না কিংবা তাদের আলোচনায় শামিল হওয়া যাবে না।

এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন আপনি দেখবেন যে, লোকেরা আমার আয়াতে ছিদ্রান্বেষণ করছে, তখন আপনি তাদের থেকে সরে যান, যতক্ষণ না তারা অন্য কথায় লিপ্ত হয়। যদি শয়তান আপনাকে এটা ভুলিয়ে দেয়, তাহলে স্মরণ হওয়ার পর আর জালিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে বসবেন না।’ (সুরা আনআম: ৬৮)

আয়াতের শেষে বলা হয়েছে, যদি শয়তান আপনাকে এটা ভুলিয়ে দেয়, অর্থাৎ ভুলক্রমে তাদের মজলিশে যোগদান করে ফেলেন-নিষেধাজ্ঞা স্মরণ না থাকার কারণে হোক কিংবা মজলিশে আল্লাহর আয়াত ও রাসুলের বিপক্ষে আলোচনা হয়, তা স্মরণ ছিল না, তাই যোগদান করেছেন। উভয় অবস্থাতেই যখন স্মরণ হবে, তখনই মজলিশ ত্যাগ করতে হবে। স্মরণ হওয়ার পর সেখানে বসে থাকা গুনাহ। অন্য এক আয়াতেও এ বিষয়বস্তু বর্ণিত হয়েছে এবং শেষভাগে বলা হয়েছে যে, যদি আপনি সেখানে বসে থাকেন, তবে আপনিও তাদের মধ্যে গণ্য হবেন। (সুরা নিসা: ১৪০)

পবিত্র কোরআনে ভালো মানুষের সঙ্গে মেশা এবং তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সঙ্গী হও।’ (সুরা তাওবা: ১১৯)

খারাপ মানুষের সঙ্গে সখ্যতা যেন না বাড়ে সেজন্য কাউকে খাবার খাওয়ানোর ব্যাপারেও মুমিনদের সতর্ক করা হয়েছে। রাসুল (স.) বলেন, ‘তুমি মুমিন ছাড়া অন্য কারো সঙ্গী হবে না এবং তোমার খাদ্য যেন পরহেজগার লোকে খায়।’ (আবু দাউদ: ৪৮৩২)

বনি ইসরাঈলের ৯৯টি হত্যাকারীর তাওবা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘তুমি যে গ্রামে ছিলে তা একটি মন্দ গ্রাম। সেখান থেকে তুমি বের হয়ে অমুক উত্তম গ্রামের দিকে গমন করো। ওই গ্রামে এমন কিছু লোক আছে, যারা আল্লাহর ইবাদত করে। সুতরাং সেখানে গিয়ে তাদের সঙ্গে তুমি তোমার রবের ইবাদত করো। আর তুমি তোমার দেশে ফিরে এসো না। কেননা সেটা মন্দ এলাকা।’ (বায়হাকি, শুআবুল ঈমান: ৭০৬৬)
 
এর অর্থ হলো- সঠিক পথে চলার জন্য পাপীমুক্ত পরিবেশ খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সুতরাং পাপ বর্জন করতে চাইলে অবশ্যই যত দ্রুত সম্ভব পাপীদের সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে। এটি পবিত্র কোরআনের নির্দেশ, তাই মেনে চলা জরুরি। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কোরআনুল কারিমের সব নির্দেশনা মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।