হিমালয়ের ১৮ হাজার ফুট উঁচু থেকে লাফ দিয়ে বিশ্ব রেকর্ড

হিমালয়ের ১৮ হাজার ফুট উঁচু থেকে লাফ দিয়ে বিশ্ব রেকর্ড

ছবি:সংগৃহীত

বিশ্ব রেকর্ড করার জন্য নেপালের হিমালয় পর্বত থেকে স্কিইং করার সময় বিশাল লাফ দিয়েছেন ব্রিটেনের একজন নির্ভীক মানুষ। এই ব্যক্তির নাম জোশুয়া ব্রেগম্যান, বয়স ৩৪ বছর। এই ভয়ানক প্রচেষ্টা করার কারণে, জোশুয়া বিশ্বের সর্বোচ্চ স্কি-বেস জাম্পের জন্য একটি নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন।

যেভাবে এই অনন্য কীর্তিটি করলেন তিনি:

জোশুয়া, সবসময় দুঃসাহসিক কার্যকলাপ পছন্দ করেন এবং একটি ভ্যানেই জীবন কাটান। এই দুর্দান্ত প্রচেষ্টার জন্য, সহকর্মীদের সঙ্গে, দুই সপ্তাহ আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন জোশুয়া। স্কিইং করার সময় জোশুয়া যে পাহাড় থেকে লাফ দিয়েছিলেন তার নাম মেরা পিক। এর জন্য তিনি প্রথমে মেরা পিক পর্যন্ত হাইকিং করেন, উচ্চতায় পৌঁছে ক্যাম্পিং করেন। উল্লেখ্য, মেরা পিকের উচ্চতা ১৮ হাজার ৭৫৩ ফুট অর্থাৎ ৫ হাজার ৭১৬ মিটার। স্কি করার পর প্যারাসুট ব্যবহার করে মাটিতে নেমেছিলেন জোশুয়া। এই বিস্ময়কর কৃতিত্বের মাধ্যমে এখন গিনেস বুকে নাম লিখিয়েছেন তিনি।

এসেছিল অনেক বাধা

জোশুয়া এবং তার সঙ্গীরা যখন প্রথম নিজেদের সম্ভাব্য স্কি স্পটে পৌঁছেছিলেন, তখন তারা একটি বড় পাথুরে ঢাল দেখতে পেয়েছিল। এর পরে জোশুয়ার মনে হয়েছিল যে তাঁর প্রচেষ্টা হয়ত ব্যর্থ হয়েছে। পরের বছর আবার চেষ্টা করতে হবে। তবে শীঘ্রই তিনি আশার আলো দেখতে পান। কিছু সময় পর, জোশুয়া স্কি করার জন্য সঠিক ঢাল খুঁজে পেয়ে, প্রথমে এটি পরিষ্কার করেছিলেন তিনি। জোশুয়া বলেছেন, এই রেকর্ড তৈরি করতে আমরা সবাই খুব পরিশ্রম করেছি। অক্সিজেনের অভাব, ক্রমাগত মাথাব্যথা এবং প্রায় ৬,০০০ মিটার উচ্চতায় ক্লান্ত শরীরকে দুর্বল করে দিয়েছিল। তবুও সব প্রতিকূলতা সামলে, দুই দিন পরে, জোশুয়া স্কিইং করার সময় লাফ দিয়ে ২০১৯ সালে তৈরি করা পুরনো রেকর্ড ভেঙে ফেলেছেন।

স্কি-বেস জাম্পিং কী

বেস জাম্পিংয়ের ঝুঁকির সঙ্গে স্কিইংয়ের রোমাঞ্চকে একত্রিত করে স্কি-বেস জাম্পিং। এর জন্য অনন্য বশক্তি এবং নমনীয়তার প্রয়োজন। এক কথায় বলতে গেলে, স্কি-বেসজাম্পিং হলো এমন একটি চরম খেলা, যেখানে উঁচু পাহাড় থেকে এক লাফে স্কি করতে হয়। বাতাসের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্যারাসুট নিয়ে মাটিতে অবতরণ করতে হয়।

জোশুয়া মানব পাচার সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন: জোশুয়া এই রেকর্ডের মাধ্যমে একটি চ্যারিটি সংস্থার জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে চেয়েছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল নেপালে মানব পাচারের সমস্যা সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া।

জানা গিয়েছে, এই অনন্য রেকর্ড তৈরির পুরো খরচ জোশুয়া নিজেই বহন করেছিলেন। এর জন্য তিনি তার বন্ধুদের কাছ থেকে সেকেন্ড-হ্যান্ড স্কি সরঞ্জাম ধার নিয়েছিলেন এবং সস্তা পোশাকই পরতেন। এ প্রসঙ্গে জোশুয়া বলেছেন, ‘কিছু অর্জন করতে দামী জিনিস লাগে না, সাহস লাগে।’

 

সূত্র: অনলাইন