জামায়াত শিবিরের কাছে এ দেশের হিন্দুরা নিরাপদ: মিয়া গোলাম পরোয়ার

জামায়াত শিবিরের কাছে এ দেশের হিন্দুরা নিরাপদ: মিয়া গোলাম পরোয়ার

ছবি: সংগৃহীত

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি :: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার বলেছেন, জামায়াত শিবিরের কোন নেতা কর্মী হিন্দু ভাইদের জমি, বাড়ি ঘর দখল করেনি বরং তারা রাত জেগে হিন্দুদের মন্দির, বাড়ি ঘর পাহারা দিয়েছে। আমাদের কাছে এদেশের হিন্দু ভাই-বোনেরা নিরাপদ সেটা সারা বিশ্ব উপলব্ধি করতে পেরেছে।

তিনি বলেন, ছাত্র জনতার গণআন্দেলনে স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকার বিদায় নিলেও তাদের দোসররা এখনও দেশে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর তারা বিচারকী গণঅভ্যুথানের চেষ্টা করেছিল, সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলোযোগ সৃৃষ্টি করে আর একটা গণঅভ্যুথানের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ছাত্র জনতা তাদের সে চেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়েছিলো। 

তিনি বলেন, পতনের মাত্র ৪ দিন আগে জামায়াতকে নিশিদ্ধ করেছিলো জঙ্গী ও সন্ত্রাসী সংগঠন এই অপবাদ দিয়ে। কিন্তু আজ সারা দুনিয়া জেনে গেছে কারা জঙ্গি ও সন্ত্রাসী।

শনিবার (২৪ আগস্ট) সকালে সাতক্ষীরা শহীদ আব্দুুর রাজ্জাক পার্কে জেলা জাময়াত আয়োজিত বৈষম্য বিরোধী শহীদদের স্মরণে দোয়া ও আর্থিক অনুদান বিতরন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, দেশ ও জনপদকে মুক্ত করতে যারা জীবন দিয়ে শহীদ হয়ে গেলেন, তারা আমাদের জাতীয় বীর। এখন রাষ্ট্রীয়ভাবে এসব শহীদদের বীর হিসেবে ঘোষণা করা উচিত। জামায়াতের পক্ষ হয়ে আমরা সেই দাবি জানাচ্ছি। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, খুনিদের বিচার অবশ্যই বাংলাদেশে হবে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যারা গণহত্যা পরিচালনা করেছেন তাদের বিচারও এদেশের মাটিতে হবে। ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিচারের কার্যক্রম শুরু করেছে, আমরা তাদেরকে সাধুবাদ জানাই। আন্তর্জাতিক আদালতেও ইতোমধ্যে গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাসহ তার সব দোসরদের নামে মামলা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের সময়ে ছাত্র-জনতাকে হত্যাকারীদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।

তিনি বলেন, জুলুম নির্যাতনের পরেও জামায়াতের নেতারা ফাঁসির দড়িতে চুম্বন করে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের কাছে আপোষ করেননি, অথচ স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। স্বৈরাচারের লোকজন হিন্দু ভাইদের ব্যবহার করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্ঠা করেছিল। কিন্তু দেশের ছাত্র-জনতা সেটি নস্যাৎ করে দিয়েছে। জামায়াত ও শিবিরের নেতাকর্মীরা হিন্দু ভাইদের মন্দির, জমি জায়গা পাহারা দিয়ে শান্তির বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করেছেন। কিন্তু বিগত দিনে আওয়ামী লীগের লোকজনই হিন্দু ভাইদের ঘরবাড়ি, জায়গা জমি দখল করে লুটপাট ও মন্দির ভাঙচুর নির্যাতনের ঘটনা ঘটিয়েছে।

সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মুহাদ্দিস রবিউল বাশারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাদ্দেস আব্দুল খালেক, খুলনা মহানগরের সাবেক আমির মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, খুলনা অঞ্চলের সদস্য মাস্টার শফিকুল আলম, খুলনা জেলা আমির ইমরান হুসাইন, জেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি শেখ নুরুল হুদা প্রমুখ।  

শনিবার (২৪ আগস্ট) সকালে সাতক্ষীরা শহীদ আব্দুুর রাজ্জাক পার্কে জেলা জাময়াত আয়োজিত বৈষম্য বিরোধী শহীদদের স্মরণে দোয়া  ও আর্থিক অনুদান বিতরন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। জামায়াত নেতা সাবেক অধ্যাক্ষ মাওঃ আব্দুল বারী, জেলা ইসলামি ছাত্র শিবিরের সভাপতি ইমামুল ইসলাম, শহর সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আজিজুর রহমান।

এ সময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সাতক্ষীরার শহীদ আসিফসহ চার শহীদ পরিবারের মাঝে ১ লাখ টাকা করে নগদ অর্থ প্রদান করা হয়।