টি-শার্টে প্রতিবাদী স্লোগান থাকায় ‘রাষ্ট্রদ্রোহের’ মামলায় এক যুবকের জেল

টি-শার্টে প্রতিবাদী স্লোগান থাকায় ‘রাষ্ট্রদ্রোহের’ মামলায় এক যুবকের জেল

ফাইল ছবি।

টি-শার্টে প্রতিবাদী স্লোগান থাকায় ‘রাষ্ট্রদ্রোহের’ মামলায় এক যুবককে ১৪ মাসের জেল দিয়েছে হংকংয়ের একটি আদালত। গত মার্চে পাস হওয়া হংকংয়ের নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে আদালত তাকে এই সাজা দিয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে বলা হয়, আইনটি আর্টিকেল ২৩ নামেও পরিচিত। ২০২০ সালে বেইজিংয়ের করা হংকং জাতীয় নিরাপত্তা আইনের সাথে সংগতিপূর্ণ এই আইন সম্পর্কে উদ্বেগ জানিয়ে আসছেন বিশ্লেষকরা। তাদের আশঙ্কা হচ্ছে, আইনটি হংকংয়ের নাগরিকদের স্বাধীনতাকে সংকুচিত করতে পারে।

স্থিতিশীলতার জন্য এই আইন প্রয়োজন বলে দাবি করেছে বেইজিং এবং হংকং। সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম চু কাই-পং। গত জুন মাসে একটি সাবওয়ে স্টেশনে প্রতিবাদী স্লোগান লেখা একটি টি-শার্ট পরিহিত অবস্থায় দেখা যায় ২৭ বছরের এই যুবককে।

তার টি-শার্টে ‘হংকং মুক্ত করা আমাদের সময়ের বিপ্লব’ লেখা স্লোগান দেখা যায়। সেসময় তিনি তার চেহারা ঢেকে রেখেছিলেন। তার টি-শার্টে আরেকটি স্লোগান দেখা যায় যার আদ্যক্ষর ‘এফডিএনওএল’।

২০১৯ সালে মাসব্যাপী সরকার বিরোধী বিক্ষোভের সময় হংকং-এ বৃহৎ বিক্ষোভে ওই স্লোগানগুলো শোনা গিয়েছিল। স্থানীয় মিডিয়া জানিয়েছে, নিজের মতামতের বিরোধিতাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার জন্য তার মলমূত্র সম্বলিত একটি বাক্সও বহন করছিলেন ওই যুবক। ২০১৯ সালের বিক্ষোভকে সমর্থন করেই চু কাই-পং ওই প্রতিবাদী স্লোগান সম্বলিত টি-শার্ট নিজ শরীরে জড়িয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি। চুকে ১২ জুন গ্রেপ্তার করে হংকংয়ের পুুুলিশ।

চুকে ১২ জুন গ্রেপ্তার করে হংকংয়ের পুুুলিশ। বিক্ষোভের সমর্থনে ওই টি-শার্ট পরিধানের পাশাপাশি তার কাছে আপত্তিকর জিনিস পাওয়ার অপরাধে এর আগে তিন মাসের জেল দিয়েছিল আদালত। গ্রেপ্তারের পর ১৪ জুন চ-এর রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। এরপর গত সোমবার পুলিশের কাছে তার দোষ স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে আদালতের চিফ ম্যাজিস্ট্রেট ভিক্টর সো ওই যুবককে দেশবিরোধী বিক্ষোভে উস্কানীদাতা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

তিনি বলেছেন, চু আগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরও কোনো ধরনের অনুশোচনা দেখায়নি। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ গুরুতর বলে জানিয়েছেন ওই ম্যাজিস্ট্রেট। দোষী সাব্যস্ত হওয়া এবং শাস্তির সমালোচনা করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।

চীনে নিযুক্ত অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক সারাহ ব্রুকস আদালতের এই সাজাকে ‘মত প্রকাশের অধিকারের উপর নির্লজ্জ আক্রমণ’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি তার বিবৃতিতে আর্টিকেল ২৩ বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছেন।