জবির দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ করবে সেনাবাহিনী: উপাচার্য

জবির দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ করবে সেনাবাহিনী: উপাচার্য

ছবি: সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম। তিনি বলেছেন, ১৯ বছরে যা হয়নি, তা এক মাসে হয়তো হবে না, তবে অগ্রগতি জানাবেন তিনি।

বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার আন্দোলন’-এর বিভিন্ন ব্যাচ ও বিভাগের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।

ড. রেজাউল করিম বলেন, আমি মাস্টারপ্লান নিয়ে আলোচনা করেছি। কনসালটেন্ট নিয়োগ দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তরের কাজ করা হবে। আমি ক্যাম্পাসের কাজের মেয়াদ নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ও সচিবের সঙ্গে দেখা করেছি, তাদের বলেছি কাজ সময়মতো হয়নি, সময়টা যেন আরেকটু বাড়ানো হয়। তারা বলেছেন সময়টা বাড়ানো হবে।

জবি উপাচার্য বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যারা স্বৈরাচারের হয়ে প্রত্যক্ষ কাজ করেছে, তাদের উৎসাহিত করেছে, তাদের ক্যাম্পাসে দেখতে চাই না। আমি এদের ভাইস-চ্যান্সেলর হতে চাই না। আমরা যারা দায়িত্বে আছি তারা আইনে বাধা। চাইলেও আমরা সবকিছু কর‍তে পারি না। সবাইকে একসাথে চলতে হবে, স্বৈরাচারকে ঠেকাতে হবে এবং সবাই মিলে সফলতা অর্জন করতে হবে।

হল ও আবাসন সংকটের বিষয়ে জবি উপাচার্য বলেন, আমাদের হল নেই। এখানে ভিসি ভবনও নাই। আমি কোথায় থাকব তারও ঠিক নেই। আমি তো ক্যাম্পাসেই থাকতে চাই। কিন্তু এখানে থাকার জায়গা নাই। নতুন ক্যাম্পাসে টেম্পরারি থাকার ব্যবস্থা করা যায় কিনা সেটাও আমি ভাবছি। ১০ হাজার শিক্ষার্থীর থাকার ব্যবস্থা করা সহজ কিছু নয়। যা ১৯ বছরে হয়নি তা এক মাসে হয়তো হবে না। তবে আমরা অগ্রগতি জানাব। আমি তোমাদের ভিসি। আমরা সবাই মিলে সফল হবো।

ড. রেজাউল করিম আরও বলেন, আমাদের অডিটোরিয়ামে এসি সব নষ্ট। খোঁজ নিয়ে দেখলাম আমি যে সময়ে বাসার এসি কিনেছি তা কবে নষ্ট হবে তার ঠিক নেই, কিন্তু এখানের সব এসি নষ্ট। কারণ এই এসি লাগাতে হলে আগে নষ্টগুলো সরাতে হবে। ভবনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ, নতুন ভবন করতে হলে এগুলো ভাঙতে হবে। তখন শিক্ষার্থীরা ক্লাস করবে কোথায়? এই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। এখন তার নামফলকও নাই। সেগুলো পুনঃস্থাপন হবে।

দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নিয়ে অভিব্যক্তি তুলে ধরেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী রাশিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমাদের বর্তমান ক্যাম্পাসের অনেক সমস্যা ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে সেটা আমরা জানি। আর এই সীমাবদ্ধতা থেকে বের হতে একমাত্র সমাধান হচ্ছে আমাদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস। আমরা শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নিয়ে কাজ করছি। যাতে করে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কার্যক্রম শেষ হয়। এরই ধারাবাহিকতায় দুর্নীতিমুক্ত, স্বচ্ছতা আর দ্রুত সময়ে কাজ সম্পন্ন করার জন্য আমরা সেনাবাহিনীর হাতে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ দেওয়ার জন্য ভিসি মহোদয় স্যারকে জানিয়েছি। স্যার আমাদের আশ্বস্ত করেছেন খুব দ্রুতই আমরা সেনাবাহিনীর কাছে কাজ হস্তান্তর করব। সুতরাং আমরা নিঃসন্দেহে বলতে পারি শীঘ্রই কাজের অগ্রগতি আমরা দেখতে পাব। আর একটা কথা না বললেই নয়, আমরা অনেক সমস্যা আর সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়েই গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি মাস্টার্সও শেষের পথে। আমরা হয়তো দ্বিতীয় ক্যাম্পাস পাচ্ছি না, কিন্ত জুনিয়ররা একটা সুন্দর ক্যাম্পাস পাবে, সকল সুযোগ সুবিধা পাবে, একটা গোছালো স্টুডেন্ট লাইফ শেষ করবে এটা ভেবেই আসলে মনে শান্তি পাই। এটার জন্যই মূলত আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

এ সময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. শেখ গিয়াস উদ্দিন, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক, ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ড. কে. এ. এম. রিফাত হাসান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীনসহ বিভিন্ন বিভাগ ও ব্যাচ প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।